সন্তানের স্বাস্থ্যহানির কারণে মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগ। পরীক্ষায় মনোমতো ফললাভ ও নামী প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ। ... বিশদ
হাড়হিম! নৃশংস! ঠান্ডা মাথার অপরাধ! বিশেষণ ফিকে পড়ে গিয়েছিল ওই ঘটনায়। স্তম্ভিত আসানসোল। খনি অঞ্চলের মানুষজন অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছিলেন, ‘এ অনেক বড় মাথার কাজ!’ হাই প্রোফাইল ব্যবসায়ী। তাই নড়েচড়ে বসল পুলিস। তৎকালীন কমিশনার জোড়া ‘সিট’ গঠন করলেন। একটি টিম গোয়েন্দা বিভাগের দুঁদে অফিসারদের নিয়ে। বাছাই করা দক্ষ পুলিস আধিকারিকদের নিয়ে আর একটি। বেউর থেকে পাটনা—বিহারের একাধিক জেলে গিয়ে কুখ্যাত অপরাধীদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরার মুখে পড়েন হোটেলের কর্মচারী থেকে মৃতের বন্ধুবান্ধব, পরিবারের লোকজন সহ শতাধিক। কিন্তু কোনও ‘ক্লু’ই মিলল না। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, ‘আমাদের তরফে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। আসলে ওই ব্যবসায়ীর জীবনযাপনটাই ছিল পরতে পরতে রহস্যে মোড়া।’
কারা অপরাধী? কোথা থেকে এসেছিল? সুপারি কিলার না তো? মোটিভ কী? প্রশ্ন অনেক। কিন্তু উত্তর নেই। তদন্তে জানা গিয়েছিল, হোটেল ব্যবসার পাশাপাশি অরবিন্দবাবু জমির কারবারও করতেন। ধনী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁর নানা ধরনের আর্থিক লেনদেনও ছিল। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে শত্রুর সংখ্যা যথেষ্ট। আর একটি বিষয়ও তখন তদন্তকারীদের কিছুটা অবাক করেছিল—ঘটনার পর ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যদের মুখে কুলুপ আঁটা। কয়েকদিন পর থেকেই তাঁরা স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যান। আর সেই হোটেলও কিছুদিনের মধ্যে সেজে ওঠে নতুনভাবে।
দু’বছর হতে চলল। আজ সবকিছু স্বাভাবিক। অরবিন্দ ভগত হত্যা রহস্যের কিনারা তো দূরের কথা, ওই ঘটনায় আজ পর্যন্ত একজন অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেট। এই কাঁটা আজও বেঁধে কমিশনারেটের তাবড় পুলিসকর্তাদের। শিল্পাঞ্চলে শ্যুটআউট মোটেও বিরল নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খুনের ‘মাস্টার মাইন্ড’ আড়ালে থেকে গেলেও আততায়ী বা ‘সুপারি’ নেওয়া শার্প শ্যুটার ধরা পড়েছে। ‘বিরল’ থেকে গিয়েছে শুধু এই হত্যাকাণ্ড, যেখানে একজন অপরাধীরও নাগাল পায়নি পুলিস। কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস অবশ্য এখনও আশ্বাস দিচ্ছেন, ‘আমরা গুরুত্ব সহকারে ওই মামলার তদন্ত জারি রেখেছি।’