নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: হাতে লাঠি। বাঁ পা মাটির সঙ্গে ঘষে ঘষে সাগর থেকে উঠে আসছেন পাড়ে। বাঁ হাত একপ্রকার অকেজো। খালি গা, ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে এক হাত দিয়েই প্রণাম করলেন। তিনি কৃষ্ণধন হালদার। কলকাতার পণ্ডিতিয়া রোডের বাসিন্দা। ১০ বছর আগে ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে তাঁর বাঁ দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে। শরীরের একাংশ অসাড়। সেই অবস্থাতেই সাগরে কপিলমুনির মন্দিরে এসে স্নান করলেন ৬৯ বছরের ওই বৃদ্ধ। অনেকদিন ধরেই এখানে আসবেন বলে ঠিক করেছিলেন। কিন্তু সঙ্গ দিচ্ছিলেন না কেউই। বাড়িতে দুই ছেলে থাকলেও তাঁরা রাজি নন এখানে আসতে। তাই এবার কারও উপর ভরসা না করে অসম্ভব মনের জোরে চলে এসেছেন গঙ্গাসাগরে। একবার নয়, দু’বার স্নান করলেন সমুদ্রে। মৃদু গলায় তিনি বলেন, আর সুযোগ পাব কি না জানি না, তাই সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে দু’দিন পুণ্য অর্জন করলাম বাবা কপিলমুনির দেশে এসে।
কৃষ্ণধনবাবু হাইকোর্টে কাজ করতেন। বর্তমানে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন। বেশ কয়েক বছর আগে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তারপর থেকে একাকী জীবন তাঁর। বললেন, ছেলেদের কী আর সময় আছে, আমাকে এখানে নিয়ে আসার! তাই কারও ভরসায় থাকিনি। নিজের ব্যবস্থা নিজেই করেছি। এখানে আসতে কষ্ট হলেও স্নান করে সেসব ভুলে গিয়েছি। লাঠি হাতেই জলে নেমে স্নান সারলেন তিনি। তারপর পা টেনে টেনে ধীরে ধীরে হেঁটে চললেন বাড়ির পথে।