ব্যবসা সূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ... বিশদ
এরপরই সিদ্ধান্ত হয়, ল্যাপটপ বা ট্যাবলেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্র যদি তুলে দেওয়া যায় তাঁদের হাতে, কেমন হয়! মান্ধাতার আমলের ব্যবস্থাও পাল্টাবে, তাছাড়া ট্যাবে ইন্টারনেট কানেকশন দিয়ে বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পের কাজও করা যাবে। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতিতে রাজ্যের ১০ হাজার ৩৫৬ জন এএনএম-আর স্বাস্থ্যকর্মীর হাতে আধুনিক ট্যাব তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পুজোর আগে ট্যাব কেনার সরকারি প্রক্রিয়া ও টেন্ডার সম্পূর্ণ হয়ে যায়। পুজোর ছুটি শেষে দপ্তর খোলার পরপরই রাজ্যের সব ক’টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মাধ্যমে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতো প্রান্তিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ভরকেন্দ্রে কাজ করা ১০ হাজারের বেশি কর্মীর হাতে তুলে দেওয়া হল এই ট্যাব।
সূত্রের খবর, ট্যাব হাতে ধরিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছে দপ্তর। এতদিন গ্রামীণ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ‘আনমোল’ কেন্দ্রীয় অ্যাপস-এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে চলে যেত। ট্যাব চালু করে বাংলার স্বাস্থ্য তথ্য নিজেদের হাতেই রাখতে চাইছে রাজ্য সরকার।
দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, এখনও এইসব ট্যাবে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। প্রথমে প্রশিক্ষণ হবে। তারপর নেট সংযোগ দিয়ে চালু করা হবে। কিন্তু, সরকারি ট্যাব দিয়ে যদি কেউ হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক করেন? যদি ব্যক্তিগত ফোন করেন, চ্যাট করেন? উত্তরে হাসতে হাসতে ওই স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, শুধু সরকারি কাজকে সহজ করতে ও কাজে গতিতে আনতে এই ট্যাব দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক বন্ধ রাখব এখানে। কলিং অপশন দেওয়া হবে, তবে খুব সীমিতভাবে এবং দপ্তরের কাজের জন্য। তাই গল্প করার সুযোগ থাকবে না!
শনিবার এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, জানুয়ারি থেকে এই পরিষেবা চালু করে দেওয়া হবে। এতগুলি করে খাতায় রেকর্ড রাখা সত্যিই কষ্টসাধ্য কাজ। এরপর থেকে এএনএমদের একটি ট্যাব ৪০টি খাতার রেকর্ড বহন করবে। ওঁদের পক্ষে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতেও সুবিধা হবে। ফাস্ট এএনএম বা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিমেলদের রাজ্যব্যাপী সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল এএনএম-আর এমপ্লয়িজ সোসাইটির রাজ্য সম্পাদিকা রেখা সাহু বলেন, সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের নার্সিং ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা এবং খাতার বহর কমানো—এই দুটি দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। তবে এখনও ট্যাবে কোনও কানেকশন পাইনি। হয়তো শীঘ্রই চালু হবে।
রাজ্যের সমস্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত এএনএম-আরদের কাজ কী? রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার সমস্ত মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য লিপিবন্ধ করা এবং সেজন্য আলাদা খাতা রাখা, উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কী কী পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে, সে সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নিয়ে আলাদা খাতা বা ক্লিনিক রেজিস্টার রাখা, গ্রামের বাচ্চাদের কী কী টিকা কবে দেওয়া হয়েছে, কী কী বাকি ইত্যাদির জন্য ভ্যাকসিন রেজিস্টার বা আলাদা খাতা রাখা, উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধ, টিকা সহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের স্টকের অবস্থা নিয়ে স্টক রেজিস্টার এবং সেজন্যও আলাদা খাতা রাখা এমন অজস্র কাজের জন্য ৪০-৪২টি খাতায় রোজ রেকর্ড আপডেট করতে হয় তাঁদের। সেই জায়গায় এবার এসে গেল আধুনিক প্রযুক্তির ট্যাব!