সন্তানের স্বাস্থ্যহানির কারণে মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগ। পরীক্ষায় মনোমতো ফললাভ ও নামী প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ। ... বিশদ
স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর কোনও সুযোগই পাচ্ছিলেন না নবদ্বীপের বাসিন্দা নীরজ গুইন (নাম পরিবর্তিত)। কারণ, স্ত্রী তাঁর এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর সঙ্গে ‘ব্যস্ত’ থাকেন সারাক্ষণ। দিনের পর দিন এই পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন তিনি। এই অভিযোগ স্ত্রী শুভশ্রী মজুমদারের (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চেয়ে শিয়ালদহ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নীরজ। নিম্ন আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে জানিয়ে দেয়, বান্ধবীর সঙ্গে সময় কাটানো মানসিক অত্যাচার নয়। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নীরজ। মামলার বয়ান সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি চাকুরীজীবী নীরজের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী শুভশ্রীর বিয়ে হয় ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর। তিনমাস নবদ্বীপে শ্বশুরবাড়িতে থাকার পর তাঁরা নীরজের কর্মসূত্রে কোলাঘাটের কোয়ার্টারে চলে আসেন। তখন থেকে সমস্যার সূত্রপাত। নীরজের অভিযোগ, ওই কোয়ার্টারেই তাঁদের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন স্ত্রীর বান্ধবী মৌসুমি রায় (নাম পরিবর্তিত)। এরপর আর তাঁর জন্য সময় হয় না তাঁর স্ত্রীর। বান্ধবীর সঙ্গে হাসিঠাট্টা আর গল্পে কেটে যায় তাঁর স্ত্রীর সারাদিন। ২০০৮ সালের মে মাসে শুভশ্রী তাঁর কর্মসূত্রে শিয়ালদহের নারকেলডাঙার কোয়ার্টারে চলে আসেন। অভিযোগ, তারপর অন্তত চারবার স্ত্রীর কোয়ার্টারে গিয়ে তাঁর সঙ্গে থাকার চেষ্টা করেন নীরজ। কিন্তু তাঁকে অবজ্ঞার শিকার হতে হয়। সেই বছর সেপ্টেম্বরে ডিভোর্স চেয়ে স্ত্রীকে নোটিস পাঠান নীরজ। তাতে ফল হয় উল্টো! ডিভোর্সের নোটিস পাওয়ার এক মাসের মধ্যে নীরজ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নবদ্বীপ থানায় ৪৯৮এ ধারায় বধূ নির্যাতনের মামলা করেন শুভশ্রী। সেই মামলার তদন্ত শুরু করে পুলিস। নীরজের দায়ের করা ডিভোর্সের মামলাও চলতে থাকে শিয়ালদহ আদালতে। প্রায় ন’বছর পর বধূ নির্যাতনের মামলা থেকে মুক্তি পান নীরজ। স্ত্রীর অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়।
এদিকে, হাইকোর্টে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে দীর্ঘদিন এই ডিভোর্স মামলার শুনানি চলে। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে জানায়, স্বামীর আপত্তি সত্ত্বেও তাঁকে এড়িয়ে দিনের পর দিন স্ত্রীর এই আচরণ নিঃসন্দেহে মানসিক অত্যাচারের পর্যায়ে পড়ে। এই যুক্তিতে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে ডিভোর্সের আবেদনও মঞ্জুর করে আদালত।