সন্তানের স্বাস্থ্যহানির জন্য মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বেগ। ক্রমোন্নতি ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ও দায়িত্ব বৃদ্ধি। বিদ্যায় ... বিশদ
জঘন্য এই অপরাধে ফাঁসির সাজার পক্ষেই সর্বত্র জনমত গড়ে উঠেছিল। সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থসারথি দত্তও মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। কিন্তু ‘আবেগের স্রোতে না ভেসে’ আমৃত্যু কারাদণ্ডের পক্ষেই রায় দেন বিচারক। রায়দানের আগে তাঁর মন্তব্য, ‘আমি দুঃখিত। ঘটনাটি বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়। তাই এই মামলায় অপরাধীকে আমি আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিলাম।’ সাজা ঘোষণা ঘিরে এদিন সকাল থেকেই শিয়ালদহ চত্বরে ছিল উপচে পড়া ভিড়। বিচারক আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া মাত্র এজলাসে হুলুস্থুল পড়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় পুলিসকে।
নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অমর্ত্য দে বলেন, ‘আমরা যাবতীয় তথ্য‑প্রমাণ দিয়ে আদালতে সওয়াল করেছিলাম, কেন এই মামলায় দোষী সাব্যস্তের সর্বোচ্চ সাজা হওয়াটা জরুরি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আদালত যদি এই নির্দেশ দেয়, আমাদের কী করণীয় থাকতে পারে?’ অন্যদিকে, সঞ্জয়ের জন্য লিগ্যাল এইড থেকে নিযুক্ত কৌঁসুলিরা রায় ঘোষণার পরই সংবাদমাধ্যমের কাছে জানান, তাঁরা শীঘ্রই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন।
এদিন ১২টা ৩৬ মিনিটে এজলাসে ওঠেন বিচারক। কোর্টের লকআপ থেকে সঞ্জয়কে আনা হয় ১২টা ৪১’এ। বিচারক কাঠগড়ায় দাঁড়ানো সঞ্জয়কে বলেন, তার কী কী সাজা হতে পারে। ওই কথা শুনেই সঞ্জয় হাতজোড় করে বলে, ‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নির্দোষ। পুলিস আমার উপর অত্যাচার করেছে। এখানে-ওখানে জোর করে সই করিয়েছে। সিবিআই হেফাজতে যাওয়ার পর জোকা ইএসআই হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেহালা থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে আনা হয় বি আর সিংয়ে।’ বিচারক বলেন, ‘ঘটনার পর বাড়ির লোক আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি?’ উত্তরে সঞ্জয় বলে, ‘না স্যার।’ এরপরই ধৃতের কৌঁসুলি সেঁজুতি চক্রবর্তী বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে ফাঁসির সাজা হয়। অনেক ক্ষেত্রে বিরলতম ঘটনাতেও ফাঁসির সাজা হয়নি।’ এরপরই পাঞ্জাব, দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের তিনটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের খতিয়ান তুলে ধরে সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ডের কঠোর বিরোধিতা করেন তিনি। ওই কৌঁসুলির বক্তব্য, ‘মৃত্যুদণ্ড দিতে হলে পর্যাপ্ত পাথুরে প্রমাণ চাই। এ ক্ষেত্রে তা নেই।’ সব বক্তব্য শোনার পর বিচারক ২টো ৪৯ মিনিট নাগাদ সাজা ঘোষণা করেন। দৃশ্যত হতাশা ছড়িয়ে পড়ে কোর্টরুমে।