স্ত্রীর শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে হঠাৎ সমস্যায় মানসিক চিন্তা ও উদ্বেগ। কাজকর্ম কমবেশি এগবে। অতিরিক্ত পরিশ্রমে ... বিশদ
ওড়িশার চিত্রাকোণ্ডার গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের ছাত্রী ললিতা খিল্লা। তাদের এলাকা বারবার বন্যায় ভাসে। বাচ্চা মেয়েটির উপর বন্যার ভয়াবহতা মারাত্মক প্রভাব ফেলে। সবার অসহায় অবস্থা দেখে কার্যকরী কিছু করার পরিকল্পনা ছকছিল সে। মেয়েটি স্কুলে পাস্কালের থিওরি পড়েছে। শুধু পড়েনি। ভেবেছে সে থিওরি প্রয়োগ করে একখানা নৌকা তৈরি করবে। যা সহজে ডুববে না। বানিয়ে ফেলল বড় আকারের লাল-কালো রঙের একটি নৌকা। নাম দিল ‘টাইটানিক’। ললিতা বলে, ‘টাইটানিকের নাম সকলে জানেন। তাই নাম দেখেই দেখতে এগিয়ে আসছেন।’ এ নৌকায় ব্যবহৃত প্রযুক্তি বোঝাতে গিয়ে ললিতা বলল, ‘ওজন বেড়ে গেলেই নৌকায় থাকা স্পিকার বেজে উঠবে। হরিনাম বাজতে থাকবে।’ বলে হাতেকলমে দেখাল ওজন বাড়লে কীভাবে সাউন্ড বক্সে গান বেজে উঠছে। মেয়েটির ছোটখাটো চেহারা। চোখেমুখে আত্মবিশ্বাস। তার বানানো নৌকার দু’পাশে ভালভ যুক্ত পাইপ লাগানো। বলল, ‘আমরা পাস্কালের সূত্র সকলেই জানি।’ বলেই গড়গড় করে সূত্রটি দিল বলে। তরলের চাপ বাড়লে কীভাবে সেই চাপ সমানভাবে সঞ্চারিত হবে পাইপের মাধ্যমে সে কথা বোঝাল প্রথমে। তারপর বলল, ‘এই সূত্র ব্যবহার করে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে যাত্রীদের প্রাণে বাঁচানো সম্ভব।’ জলের চাপ সঞ্চারিত করার জন্য রেখেছে একটি বেলুন। নৌকায় জল ঢুকলে তা পাম্প করে ওই বেলুনে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ললিতা জানাল, ‘নৌকা নিয়ে অনেকে রেসিং করেন। এ নৌকা তাঁদেরও কাজে আসবে।’
নীল চুড়িদার আর সাদা ওড়না পরে স্কুলের পোশাকেই বিড়লা মিউজিয়ামে হাজির হয়েছিল ললিতা। মুখে সর্বদা হাসি। কেউ সামনে এসে দাঁড়ালে বুঝিয়ে বলে দিচ্ছে সবকিছু। ললিতার সঙ্গে এসেছেন তাঁর শিক্ষক দেব্রবত দাস পট্টনায়েক। তিনিও আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। ছাত্রীটি বলে, ‘আমাদের ওদিকে প্রায়শই বন্যা হয়। চারপাশ জলে ভেসে যায়। তখন নৌকা করেই সকলে যাতায়াত করেন। বন্যার জলে নৌকা এমন করে দোলে সবার ভয় হয়। একদিন শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করি। তারপর নৌকা তৈরির পরিকল্পনা করি আমি।’