বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ

‘ঠিক পেয়ে যাব’ বিশ্বাসে ভর করেই পূর্ণকুম্ভে, আজ প্রথম শাহী স্নান 

সুদীপ্ত রায়চৌধুরী, প্রয়াগরাজ: ‘আরে কিছু ভাবিস না। একটা ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে। এত মানুষ থাকছে... আমরা পারব না!’ কালকা মেলের জেনারেল কামরায় ঠাসাঠাসি ভিড়ের মধ্যে কোনওমতে বসার জায়গা পেয়ে ভাইকে বলেছিল প্রণব। মাস দুয়েক আগে হাত ভেঙে বেসরকারি কোম্পানির চাকরিটা খুইয়েছে পলাশ। তার মধ্যেই দাদার ফোন। ‘চল, কুম্ভে।’ টাকাপয়সার টানাটানি। কিন্তু হঠাৎ করে একটা ফ্রিল্যান্স কাজ চলে আসায় অসুবিধা হয়নি। যা হয়েছে... আসার ঠিক না থাকায় ট্রেনের টিকিট, আর থাকার জায়গা বুক করা হয়নি।
ঘণ্টাচারেক আগে স্টেশনে চলে এসেছিলেন। তাই জেনারেল কম্পার্টমেন্টে কোনওমতে জায়গা জুটে গিয়েছিল। তখনই ভরসা করে ভাইকে আশ্বাস দিয়েছিল প্রণব। কিন্তু পূর্ণকুম্ভের প্রয়াগরাজে এসে মনে হল, সত্যিই ‘ঠাঁই নাই।’ হোটেল-লজ সর্বত্র উপচে পড়া ভিড়। চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সর্বত্র শুনতে হয়েছে, ‘একটাও ঘর খালি নেই। এখানে কোনও হোটেলেই পাবেন না। বরং মেলায় গিয়ে চেষ্টা করুন।’ কী করবে ভাবতে ভাবতেই এক ভদ্রলোক এসে হাজির ওই হোটেলে। সঙ্গে স্ত্রী-মেয়ে। জায়গা নেই। হোটেলের ম্যানেজার কাউকে একটা ফোন করলেন। তারপর জানালেন, ব্যবস্থা একটা হবে। তবে সেটা হোটেলে নয়। একটা বড় বাড়ি বলা যেতে পারে। সেখানে একটা ঘর মিলবে। ভাড়া? তিন দিনের জন্য মাত্র ১৫ হাজার। শুনে একটু ইতস্তত করলেন। তারপর রাজিও হয়ে গেলেন ভদ্রলোক। 
ভাড়া শুনে অবাক হলে বলে রাখা যাক, সিভিল লাইনস, এসপি মার্গ, এমজি মার্গ হোক বা পুরনো শহরের দারাগঞ্জ, রামবাগ—সর্বত্রই হোটেল ভাড়া অন্য সময়ের থেকে প্রায় ৩-৪ গুণ বেশি। তাও মাসছয়েক আগেই প্রায় সমস্ত ঘর বুকড। ডরমেটরি লজে তিল ধারণের জায়গা নেই। ঘর পেলেও তার ভাড়া বাড়ছে তৎকাল প্রিমিয়ামের গতিতে। ভালোমানের হোটেলে ভাড়া ১০-১৫ হাজার থেকে শুরু। উঠেছে ৪০ হাজার পর্যন্ত।
কিন্তু সবার সেই সামর্থ্য কোথায়! আর কোনও কিছু ঠিক না করে শেষবেলায় কপাল ঠুকে চলে আসার লোকও যে কম নেই। বাস, টোটো ব্রিজ পার করতেই সেখানে নেমে পড়ছেন দলে দলে। রাস্তার দুই লেন টপকে তাঁরা হাঁটছেন মেলার মাঠের দিকে। হাতে ট্রলি, মাথায় ব্যাগ। সারিবদ্ধ মানুষের মিছিল চলেছে কুম্ভ-পানে। মঙ্গলবারই যে মকর সংক্রান্তি। প্রথম শাহী স্নান। ১২ বছর পর আবার। এই প্রয়াগে। বিকেল পর্যন্তই সরকারি হিসেব বলছে, পুণ্যার্থী ১ কোটি ৬০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আরও মানুষ আসছেন। বিশ্বাসে ভর করেই। 
কোথায় থাকবেন? হঠাৎ করে এঁদের কাউকে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর মেলে না। শুধু থাকে অবাক চোখে চেয়ে থাকা দৃষ্টি। হয়তো তার মধ্যে মিশে আছে খানিক অসহায়তা। কেউ হয়তো পাশ থেকে বলে উঠলেন, ‘আরে, চিন্তা মত করো। কুছ না কুছ জুগাড় ঠিক হো জায়গা।’ ভরসা পায় চোখগুলো। কে জোগাড় করে দেবে? কেউ জানে না। তবু ভরসা পায় অচেনা মানুষের আশ্বাসে। ওদের বিশ্বাস, কুম্ভে কেউ চাইলেই চলে আসতে পারে না। ডাক আসে। সেই ডাকে সাড়া দিয়েই প্রতি কুম্ভে ছুটে আসেন এত লক্ষ কোটি মানুষ। 
যেমন এসেছেন প্রণব-পলাশরা। এদিক ওদিক ঘুরে কোথাও জায়গা না পেয়ে উদাসিন আখড়ায় বসেছিল দু’ভাই। বাইরে তখন বেশ বৃষ্টি নেমেছে। গেরুয়া পোশাক পরা একটা ছেলে সবাইকে চা দিচ্ছিল। তাকেই ধরল দু’জনে। বড় মহারাজকে বলায় তিনি থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন। ছোট ছোট ঘরগুলোতে খাট নেই। বাঁধানো মেঝের উপর ঢালাও বিছানা। সেখানেই জুটে গেল জায়গা। হয়তো জুটিয়ে দিলেন অন্য কেউ। সবার অলক্ষে।
যাঁরা কোনও আশ্রম বা আখড়ায় জায়গা পেলেন না, তাঁদের গন্তব্য মেলার মাঝে কোনও সংগঠনের আশ্রয় শিবির। বালি মাটির উপর ছড়ানো বিচালি। তার উপরে চাদর পেতে ঘুমোচ্ছেন কতশত মানুষ। পাতলা কম্বলে এই ঠান্ডা আটকায়? ধুনিতে কাঠ দিতে দিতে ধর্মগিরি মহারাজ বললেন, ‘শুধু কম্বলে কী হয়! অন্য একটা চাদর আছে সবার গায়ে। সর্বশক্তিমানের।’ তাঁর তাঁবুতে ধুনির সামনে বসে জনসাতেক লোক। একপাশে ব্যাগপত্র ডাঁই করে রাখা। রাত কাটাবেন এখানেই। এভাবেই। প্রবল ঠান্ডায়। কষ্ট সহ্য করে। সব বাধা ফুৎকারে উড়িয়ে। কিছু না কিছু জুটে যাবেই—বিশ্বাসে ভর করে। 
27d ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মে সাফল্য ও খ্যাতি লাভের যোগ। ব্যবসা ভালো হবে। হস্তশিল্পীদের উপার্জন বৃদ্ধি পাবে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৬.৬৩ টাকা৮৮.৩৭ টাকা
পাউন্ড১০৬.৯২ টাকা১১০.৬৭ টাকা
ইউরো৮৯.১৭ টাকা৯২.৫৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
9th     February,   2025
দিন পঞ্জিকা