বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
দেশ

রাবড়ি বাবার মিঠে হাতে প্রসাদপ্রাপ্তির হাসি ভক্তস্রোতে

নিজস্ব প্রতিনিধি, প্রয়াগরাজ:  ১১ নম্বর পন্টুন ব্রিজ থেকে হেঁটে আসছি। যাব পঞ্চায়েতি আখড়া মহানির্বাণী। স্বস্তিক গেট পেরতেই চোখে পড়ল লাইনটা। প্রায় দেড়শো মানুষের ভিড়। লাঠি হাতে বৃদ্ধা, জনাপাঁচেক তরুণ-তরুণী থেকে বাবার হাত ধরে থাকা পুঁচকে... কে নেই সেই লাইনে। সবাই অপেক্ষমান। লাইন অবশ্য এগচ্ছে বড়ই ধীরে। সে গতির সঙ্গে একমাত্র তুলনা করা যেতে পারে স্ট্যান্ড থেকে সদ্য ছাড়া বাসের। জনতার হাজার হইচইয়ের পরও যার চাকা নড়াতে বড়ই অনীহা থাকে ড্রাইভারের। 
যাক সে কথা। কিন্তু এই লাইনটা কীসের? কাছাকাছি কোনও ভাণ্ডারাও নেই যে প্রসাদ পাওয়ার জন্য লাইন পড়বে। তাহলে? দুটো কাজ এক্ষেত্রে করা যেতে পারে। এগিয়ে গিয়ে দেখা। না হলে লাইনের শেষজনকে জিজ্ঞাসা করা। তবে শেষেরটায় ভরসা করে অনেক সময়েই উল্টো অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই কুম্ভেই। তবু কপাল ঠুকে গিয়ে ধরলাম লাইনের শেষ ব্যক্তিকে। বাসুদেব দাস। দাস পদবী হলেও উনি বাঙালি নন। ওড়িয়া। বললেন, ‘বাবার প্রসাদ মিলবে এই লাইনে দাঁড়ালে। রাবড়ি বানিয়ে সারাদিন নিজের হাতে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করেন।’ সেই প্রসাদী রাবড়ি পাওয়ার আশাতেই ছেলে কনককে নিয়ে লাইন দিয়েছেন।
ফের একবার লাইনের দিকে তাকালাম। মানে কম করে আধ ঘণ্টার ধাক্কা। হবে নাই বা কেন! এই কুম্ভে রীতিমতো হিট ‘রাবড়ি বাবা’ ও তাঁর প্রসাদ। লাইন ছেড়ে হাঁটা দিলাম ছাউনির উদ্দেশে। পৌঁছে আরেক বিপদ। লাইন না দিয়ে পাশ থেকে কেউ এসে প্রসাদ নিয়ে চলে যাবে, এমনটা হতে দেবে না ভক্তরা। এদিকে রাবড়ি শেষ। তৈরি হতে সময় লাগবে অনেকটা। তার মধ্যেই কোনওমতে পরিচয় দিয়ে আসার উদ্দেশ্য নিবেদন করা গেল বাবাকে। ইশারায় ভিতরে বসতে বললেন। কিছুক্ষণ পর ফের কড়াইতে দুধ জাল দেওয়া শুরু করলেন ‘রাবড়ি বাবা’, থুড়ি শ্রী পঞ্চায়েতিআখড়া মহানির্বাণীর শ্রী মহন্ত দেবগিরি। এত মানুষের জন্য প্রতিদিন রাবড়ি বানান? কথার ধরনে বোধহয় একটু ছেলেমানুষি কৌতূহল ছিল। প্রায় দেড় হাত লম্বা হাতা নাড়তে নাড়তেই ঘাড় নাড়লেন তিনি। বললেন, ‘এত মানুষ ভালোবেসে আসেন যে...’
ভক্তদের সেই ভালবাসার জন্য সাধুবাবার দিন শুরু হয় রাত থাকতেই। তিনটের সময় উঠে স্নান, যোগব্যায়াম, ধ্যানের পর প্রতিদিন সকাল আটটার সময় বিশাল কড়াইতে ঢালা হয় দুধ। শুরু হয় রাবড়ি তৈরি। দিনের প্রথম রাবড়ি উৎসর্গ করা হয় আরাধ্য কপিল মুনিকে। তারপর প্রসাদ বিতরণ। চলে প্রায় রাত দেড়টা-দুটো পর্যন্ত। মাত্র এক ঘণ্টা ঘুমোলেই হয়ে যায়? হেসে বললেন, ‘তাহলেই ভাবো... এই গাড়ি চলছে রামভরোসে।’ মেলাজুড়ে লোকের মুখে মুখে নাম ছড়িয়ে গেলেও তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই বাবার। বললেন, ‘২০১৯ সালে কুম্ভমেলায় দেড় মাস ধরে ভক্তদের মিষ্টি বিলিয়ে ছিলাম। সেই ভাললাগা থেকেই রাবড়ি দেওয়া শুরু। যদি প্রচার চাইতাম, তাহলে কি টানা পাঁচ-ছ’বছর ধরে করতাম! এটা মা মহাকালীর আশীর্বাদ পেয়ে করা। এর মধ্যে দিয়েই আত্মা ও পরমাত্মার মিলন হয়।’
কড়াইতে রাবড়ি ততক্ষণে তৈরি। লাল রঙের মগ দিয়ে তা তুললেন অ্যালুমিনিয়ামের ডেকচিতে। সেখান থেকে মাটির ভাঁড়ে করে শুরু হল প্রসাদ বিতরণ। ছেলের হাত ধরে বাবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন বাসুদেব দাস। দু’জনের হাতে দু’কাপ (মাটির ভাঁড় শেষ ততক্ষণে) রাবড়ি দিলেন। প্রসাদ নিয়ে একটু ইতস্তত করে বাসুদেব বললেন, ‘মা ক্যাম্পে শুয়ে। আসতে পারেননি। একটু প্রসাদ যদি...।’ 
‘এ প্রসাদ সবার জন্য...’ বলতে বলতে খুদে কনকের হাতে আরও এককাপ রাবড়ি তুলে দিলেন শ্রী মহন্ত দেবগিরি। মুখে তৃপ্তির হাসি। ধীরে ধীরে সেই হাসি তখন ছড়িয়ে পড়ছে কনক, বাসুদেব হয়ে বাকিদের মুখেও।
ঠিক যেভাবে ছড়ায় সূর্যের আলো। 
22d ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কারও কাছ থেকে কোনও দামি উপহার লাভ হতে পারে। অকারণ বিবাদ বিতর্ক এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্য...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৬.১৮ টাকা৮৭.৯২ টাকা
পাউন্ড১০৬.২৮ টাকা১১০.০২ টাকা
ইউরো৮৮.১৫ টাকা৯১.৫১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা