সংবাদদাতা, বহরমপুর: আজ, বুধবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় মেতে উঠবে বাংলা। তার আগে সব্জির বাজারে কার্যত আগুন। কয়েকদিনের তুলনায় সমস্ত সব্জির দাম অনেকটা বেড়েছে। খরচ কাটছাঁট করে ধনদেবীর আরাধনায় কেনাকাটা সারেন সর্বজনীন পুজো উদ্যোক্তা থেকে গৃহস্থরা। তবে তুলনামূলকভাবে ফলের দাম বাড়েনি। বাজারদর যাই হোক না কেন মঙ্গলবার সকাল থেকে বহরমপুর সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় ফল ও সব্জির বাজারে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। খরিদ্দার সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খান ব্যবসায়ীরা।
আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। বিভিন্ন জায়গায় মা দুর্গার বেদিতেই লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি বাঙালি পরিবারে ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করা হয়েছে। বহু জায়গায় ফল, লুচি, মণ্ডার পাশাপাশি দেবীকে পোলাও, খিচুড়ি, পাঁচ তরকারি, পরমান্ন দিয়ে ভোগ নিবেদনের প্রথা রয়েছে। ফলে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় ফলের পাশাপাশি সব্জির বাজারেও হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।
দুর্গাপুজোর আগে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন সব্জির ক্ষতি হয়েছে। বাজারে কাঁচা সব্জির জোগান কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে গিয়েছে। এদিন সকাল থেকে বহরমপুরের কান্দি বাসস্ট্যান্ড বাজার, নতুন বাজার, গোরাবাজার, স্বর্ণময়ী বাজার কার্যত ভিড়ে ঠাসা ছিল। তবে বাজারের থলে ভরাতে ক্রেতাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। এদিন কেজি প্রতি লঙ্কা ২০০টাকা কেজি , বেগুন ৮০-১০০, পটল ৫০, কুমড়ো ৪০টাকা, সজনে ডাঁটা ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছোট সাইজের ফুলকপি ৬০-৮০টাকা জোড়া। বাঁধাকপির দামও ৫০-৬০টাকা ছিল। স্বর্ণময়ী বাজারের ব্যবসায়ী দীনেশ মণ্ডল বলেন, দুর্গাপুজো থেকে কিছু সব্জির দাম একই জায়গায় রয়েছে। তবে মিষ্টি কুমড়ো, ফুলকপি, বেগুনের দাম কিছুটা বেড়েছে। সূতিরমাঠ পাড়ার পুজোয় পংক্তিভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা অনিমেষ সরকার বলেন, এবার খিচুরির প্রসাদ বিতরণে খরচ গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।
আতা, তরমুজ, আনারস, কলা ছাড়া বাকি ফলের দাম গত কয়েকদিনের তুলনায় বাড়েনি বলে জানান ক্রেতারা। আপেল বিক্রি হয়েছে ১২০টাকা কেজি দরে। ন্যাসপাতি ১২০টাকা, মোসাম্বি ১০টাকা প্রতি পিস, কমলালেবু ১৫টাকা প্রতি পিস দরে বিক্রি হয়েছে। পানিফল ১০০টাকা কেজি, পেয়ারা ৪০, শশা ৪০, বেদানা ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে ছিল আমের দাম। এদিন এক-একটি আম বিক্রি হয়েছে ১০০টাকায়। আনারস ৭০টাকা, আতা ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। ফল বিক্রেতা বাবু শেখ বলেন, ফলের আমদানি এবার যথেষ্ট ভালো। জোগান ভালো থাকায় ফলের দাম নাগালের বাইরে যায়নি। এদিন সকাল থেকে দশকর্মার দোকানগুলিতেও যথেষ্ট ভিড় লক্ষ্য করা যায়। শহরের এক বধূ বলেন, সব্জি ও ফলের দাম বেশি হলেও কোনও উপায় নেই। লক্ষ্মীর আরাধনায় সাধ্যমতো আয়োজন করছি। ফল, সব্জির সঙ্গে নাড়ু, মিষ্টি সহ প্রয়োজনীয় সবকিছু কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরছি।