বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অন্দরমহল

হারানো রান্নার গল্প: রেলওয়ে মাটন কারি

ভারতের মাটিতে রেলগাড়ি প্রথম ছুটে চলে ১৮৫৩ সালে। বম্বে (মুম্বই) থেকে থানে এই চৌত্রিশ কিলোমিটার পথেই ছিল তার গতিবিধি। এরপরে দূরন্ত গতিতে বাড়তে থাকে ভারতের রেলপথ। সারা দেশে একের পর এক স্থাপিত হতে থাকে ছোট-বড় নানা রেল স্টেশন। সারাদেশকে এই যে একই সুতোয় বাঁধা, ভারতীয় রেলের এই কাজের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে ভারতীয় টি বোর্ড। তারা ট্রেনের কামরায় চা বিক্রি শুরু করে। জনসাধারণের কাছে চা আরও জনপ্রিয় করে তোলার এ ছিল এক অভিনব প্রয়াস। এরপর ১৯৬০ সাল নাগাদ কলকাতার চৌরঙ্গি এলাকায় শুরু হয় কেলনাড অ্যান্ড কোম্পানি। প্রথমে পূর্ব ভারতীয় রেলে খাবার সরবরাহের স্বত্ব নেয় এই কোম্পানি। শুধুমাত্র রেলগাড়িতেই নয়, দেশের বড় স্টেশনগুলোতেও ক্রমশ তাদের রেস্তরাঁ চালু হয়।  সেখানে যেতেন ব্রিটিশ ও গণ্যমান্য ভারতীয়রা। এখানকার বেয়ারাদের ঠাটবাটের কোনও অভাব ছিল না। রেস্তরাঁগুলোতে ব্রিটিশ, ভারতীয় হিন্দু ও মুসলমানদের আলাদা বসার ব্যবস্থা ছিল। তার আসল কারণ, এঁদের খাদ্যরুচি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেই অনুযায়ী রেস্তরাঁয় রান্না ও পরিবেশনের ভাগ করা থাকত। উত্তর ও দ঩ক্ষিণ ভারতীয় খাবারের পাশাপাশি অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ও মোগলাই খাবারেরও আধিক্য ছিল মেনুতে। সঙ্গে থাকত নানা ধরনের পানীয়, চা ও কফি। পরে স্পেনসার অ্যান্ড কোম্পানি খাবার সরবরাহের দায়িত্ব নিলেও খাবারের মানে কোনও হেরফের হয়নি। তবে কয়েকটি খাবার অচিরেই অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তারই অন্যতম রেলওয়ে মাটন কারি। অত্যন্ত সহজ এই রান্নার প্রণালী। বিশেষ উপকরণও লাগে না এতে। সেই সময় রান্নার প্রচুর তরিবত করার উপায় বা সময় কোনওটাই ভারতীয় রেলের কেটারিংয়ের কাছে ছিল না। ফলে সহজে, কম সময়ে সুস্বাদু রান্না তৈরি করাই ছিল এই কেটারিং সার্ভিসের উদ্দেশ্য। আজ সেই সহজ ও সুস্বাদু রেলওয়ে মাটন কারির রেসিপি আপনাদের জানাব। বাড়িতে কম সময়ে রান্নাটা করে দেখুন। একবার খেলে ভুলতে পারবেন না এই গ্যারান্টি আমার।

উপকরণ: খাসির মাংস ৫০০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ৩টে (বড় সাইজের), কারিপাতা ১০-১২টা, আদা ও রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ করে, শুকনো লঙ্কা ৩টে, লাল লঙ্কার গুঁড়ো ১ ১/২ চা চামচ, গোটা গোলমরিচ ১২টা, গোটা গরমমশলা অল্প, নুন স্বাদমতো, সাদা তেল প্রয়োজন অনুযায়ী, তেঁতুলের ক্বাথ ২ ১/২ চা চামচ অথবা ভিনিগার ১ ১/২ চা চামচ। 
পদ্ধতি: অন্যান্য অনেক রান্নার মতোই এই রান্নারও পদ্ধতিগত নানা ধরন রয়েছে। আজ যে রেসিপিটি আপনাদের সামনে তুলে ধরব সেটি ব্রিজেট হোয়া‌঩‌ই঩টের লেখা ‘অ্যাংলো ইন্ডিয়ান কুইজিন: আ লেগেসি অব লেবার্স ফ্রম দ্য পাস্ট’ বই থেকে সংগৃহীত। সেখানে যেমনটি বলা হয়েছে তাতে প্রথমেই মাংসটাকে আদা, রসুন বাটা ও লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে। খানিকক্ষণ এইভাবেই রেখে দিন। এবার কড়াই আঁচে বসিয়ে চার থেকে পাঁচ টেবিল চামচ তেল গরম করে নিন।  গোলমরিচ ও গোটা গরমমশলা একসঙ্গে থেঁতো করে নিন। গরম তেলে পেঁয়াজ, শুকনো লঙ্কা কুচি ও কারিপাতা দিয়ে ভাজতে থাকুন। পেঁয়াজ স্বচ্ছ হওয়া পর্যন্ত ভাজবেন। এবার তাতে থেঁতো করা মশলা দিয়ে মাংস যোগ করুন। সবটা একসঙ্গে আধঘণ্টা মতো কষিয়ে নিন। কষতে কষতেই মাংসের সুগন্ধে ঘর ভরে উঠবে। আধঘণ্টা কষানোর পর এতে চার কাপ গরম জল মেশান। এরপর স্বাদ মতো নুন ও তেঁতুলের ক্বাথ বা ভিনিগার যোগ করুন। জল দেওয়ার পর আঁচ বাড়িয়ে জল ফুটতে দিন। তা ফুটতে শুরু করলে ঢাকা দিয়ে আঁচ একদম কমিয়ে দিন। এই অবস্থায় ততক্ষণ রান্না করুন যতক্ষণ পর্যন্ত মাংস সুসিদ্ধ না হয়। মোটামুটি চল্লিশ মিনিট লাগবে মাংস সিদ্ধ হতে। মাংস সেদ্ধ হলেই বুঝবেন রেলওয়ে মাটন কারি রেডি। শেষে একটি কথা জানাই, তেঁতুল বা ভিনিগারের ব্যবহার কেন করা হয়? রেলগাড়ির রান্নাঘরে বা স্টেশনে অনেক উপকরণ দিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে রাঁধা সম্ভব নয়। তেঁতুল বা ভিনিগার অল্প উপকরণেও রান্না সুস্বাদু করতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে রান্নাটি যাতে তাড়াতাড়ি নষ্ট না হয়, সে দেখভালও এই তেঁতুল বা ভিনিগারের ব্যবহারের মাধ্যমেই সম্ভব। মোটামুটি পঁয়তাল্লিশ থেকে পঞ্চাশ মিনিটের মাথায় দেখবেন জল সম্পূর্ণই প্রায় মরে গিয়েছে এবং তা থেকে তেল ছেড়ে দিয়েছে। তখনই বুঝবেন রান্না তৈরি। ভাত বা রুটি যেটাই আপনার পছন্দ তার সঙ্গেই পরিবেশন করতে পারেন এই রেলওয়ে মাটন কারি।
4d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন।  অর্থপ্রাপ্তির যোগ...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৮৩ টাকা৮৭.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৪.০৫ টাকা১০৭.৭৪ টাকা
ইউরো৮৭.৩০ টাকা৯০.৬৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা