বহু প্রচেষ্টার পর পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে শরিকি সহমত। ব্যবসা, পেশা ও ধর্মকর্মে শুভ সময়। ... বিশদ
ঘাটাল মহকুমার দাসপুর-১, দাসপুর-২ এবং ঘাটাল, এই তিনটি ব্লকের একাংশকে রূপনারায়ণ, শিলাবতী এবং কংসাবতী নদী ঘিরে রেখেছে। এই বিস্তীর্ণ এলাকার পূর্ব দিকে তথা হুগলি জেলার দিকে অনেকটা ঢাল রয়েছে।
সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল শহর সংলগ্ন শিলাবতী নদীর বাঁধের থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হুগলি ও হাওড়ার সীমান্তের রূপনারায়ণ নদীর বাঁধ অনেক নিচু। তাই একদিকে দাসপুর-১ ব্লকের রাজনগর, দাসপুর গঞ্জ, ঘাটাল পুরসভার একাংশ থেকে ঘাটাল ও দাসপুর-২ ব্লকের বেশ কয়েকটি এলাকার বৃষ্টির জল নামতে নামতে রূপনারায়ণ নদীর বাঁধে গিয়ে আটকে যায়। বর্ষার সময় দ্বারকেশ্বর নদ এবং শিলাবতী নদীর জলের চাপ রূপনারায়ণের উপর থাকার ফলে স্লুইস গেট দিয়ে দাসপুর-১, দাসপুর-২ এবং ঘাটাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বৃষ্টির জল রূপনারায়ণে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে দাসপুর-২ ব্লকের রানিচক, ভগবতীপুর, ক্ষুদিচক, চাঁইপাট, উদয়চক, নিমতলা, জোতকানুরামগড়, দরি এই সব এলাকায় জলস্তর বাড়তে শুরু করে। রানিচকের বাসিন্দা জগদীশ মণ্ডল অধিকারী বলেন, বর্ষার সময় ওই ১৫-২০টি গ্রামের ধানজমিতে ৫-১০ ফুট পর্যন্তু জল দাঁড়িয়ে যায়। অনেক গ্রামের রাস্তার ওপরেও দু’-আড়াই ফুট করে জল জমে যায়। মাঠে প্রায় ছ’মাস জল জমে থাকার ফলে চাষ করা যায় না। ওই সময়ে চাষিদের বাড়িতে বেকার বসে থাকতে হয়। আর শীতেও সব এলাকায় নদীর বোরো জল না আসায় চাষ করা যায় না। এমনকী সব্জি চাষও সেভাবে করা যায় না।
ওই সমস্ত এলাকার জমা জল রূপনারায়ণে ফেলার জন্য রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ১৯৮১ সালে রানিচকে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ডিওয়াটারিং প্রজেক্ট করে। যেখানে মোট ১২টি পাম্প রয়েছে। পাম্পগুলির প্রত্যেকটির জলোত্তলন ক্ষমতা মাত্র ২০ কিউসেক (সেকেন্ডে প্রায় ২৮ লিটার)। যে প্রজেক্টের উদ্দেশ্য ছিল, বৃষ্টি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেশিনে জল তুলে রূপনারায়ণে ফেলা হবে। ফলে মাঠে আর জল জমে থাকবে না। চাষিরা বর্ষায় চাষ করতে পারবেন।
রানিচকের বাসিন্দারা বলেন, ওই পাম্পগুলি বিগত কয়েক বছর ধরে বর্ষার সময়ে রাতদিন ধরে চলে। মাসে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার বিদ্যুৎ খরচ হয়। কিন্তু ওই ক’টি পাম্পে যা জল ওঠে তাতে ওই তিনটি ব্লকের জমা জল সেভাবে সরে না। মোট কথা ওই প্রকল্পটি পুরো ফ্লপ। অন্তত ১০০ কিউসেক জলোত্তলন ক্ষমতা সম্পন্ন ২০টি মেশিন না বসালে কোনও কাজই হবে না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। অন্যদিকে তৃণমূল সরকার ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও তারা ওই ডিওয়াটারিং স্কিম নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি। সরকারের এই উদাসীনতার জন্য বাসিন্দারা তৃণমূল ও সিপিএমের ওপর ক্ষুব্ধ। ভোট প্রার্থীরা এলেই তাঁরা ওই সমস্যার সমাধান চাইছেন।