বহু প্রচেষ্টার পর পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে শরিকি সহমত। ব্যবসা, পেশা ও ধর্মকর্মে শুভ সময়। ... বিশদ
রতনপুর গ্রামের তারকেশ্বর মাইতির তিন ছেলে। ধৃত নারায়ণ বড়। মেজ ছেলে মিঠুন কর্মসূত্রে হায়দরাবাদে থাকতেন। বেশ কিছুদিন আগে বাড়ি ফিরেছিলেন। মিঠুনের কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে। যেখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াতেন। জায়গাজমির ভাগ-বাঁটোয়ারা সহ পারিবারিক বিষয় নিয়ে দাদা-বউদির সঙ্গে তাঁর বিবাদ লেগেই থাকত। ১০দিন আগে মিঠুন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান। তাঁকে আর এলাকায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিবেশীরা মিঠুনের ব্যাপারে দাদা-বউদিকে জানতে চান। তারা জানিয়ে দেয়, মিঠুন ফের হায়দরাবাদে চলে গিয়েছে। এনিয়ে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। ভাই নিখোঁজ হলেও থানায় কোনও ডায়েরি করেনি নারায়ণ। এমনকী মিঠুন নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে জানিয়ে সোমবার হিন্দু শাস্ত্রমতে ক্রিয়াকর্ম সম্পন্ন করার জন্য ব্রাহ্মণ ডেকে কথা বলছিল নারায়ণ। বিষয়টি প্রতিবেশীরা জানতে পারেন। তাঁদের সন্দেহ হয়। তাঁরা নারায়ণ ও সোমাকে চেপে ধরেন। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে খুনের ঘটনা স্বীকার করে নেয় দম্পতি। মঙ্গলবার পুলিসকে সমস্ত ঘটনা জানানো হয়। মহকুমা পুলিস আধিকারিক দিবাকর দাস ও আইসি প্রদীপকুমার দাঁর নেতৃত্বে পুলিস বাহিনী দুপুরে গ্রামে হাজির হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে দেহ তোলা হয়। গর্তে মাটি চাপা দেওয়ার পর উপরে খড় বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। খুনের ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন সামনে এসেছে। দম্পতির পক্ষে গর্ত খুঁড়ে দেহ পুঁতে দেওয়া সম্ভব? আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা প্রশ্ন উঠেছে। পুলিস রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সম্পতি ও পারিবারিক বিবাদের জেরে প্রায়শই দাদা ও বউদি মিঠুনকে মারধর করত। এমনকী মিঠুনও বউদিকে মারধর ও খারাপ ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ ছিল। পঞ্চায়েতের কাছে অভিযোগও জানিয়েছিলেন সোমা। অনুমান, এরকম পরিস্থিতিতে তাকে খুনের ছক কষে অভিযুক্তরা। মৃতের প্রতিবেশী জেঠিমা জ্যোৎস্নারানি সাঁতরা, স্থানীয় বাসিন্দা বৃহস্পতি মাইতি বলেন, নারায়ণ ও বউমাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তারা প্রথমে কিছু বলেনি। পরে সব ঘটনা সামনে আসে। আমরা ওদের কঠোর শাস্তি চাই। পঞ্চায়েত সদস্য সরোজকুমার প্রধান বলেন, পারিবারিক বিষয়ে বিবাদ থাকতেই পারে। কিন্তু খুন কোনও সমাধান নয়। আমরা পুলিসকে ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি। মহকুমা পুলিস আধিকারিক বলেন, সম্পত্তি ও পারিবারিক বিবাদের কারণে খুনের ঘটনা বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কি না জানার চেষ্টা চলছে।