গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
এদিকে, হাসপাতালে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরাও ঘটনার সমালোচনা করেন। কেউ বলেন, নিরাপত্তারক্ষীরা অতিসক্রিয়তা দেখিয়েছেন। ওরা নিজেরা নিয়ম মানে না। হাসপাতালে অন্যদের পান-গুটখা নিয়ে প্রবেশে বাধা দিলেও, ওদের একাংশ পান-গুটখা খায়। আসলে ওদের কার্যকলাপ এমন যেন, ধরে আনতে বললে, ওরা বেঁধে নিয়ে যায়।
ঘটনার সূত্রপাত, মঙ্গলবার দুপুরে। সাধন গোস্বামী নামে জলপাইগুড়ি শহরের সেনপাড়ার এক বাসিন্দা তাঁর স্ত্রী গৌরী গোস্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই রোগীর আত্মীয় ব্যাগে পানের কৌটো নিয়ে সুপার স্পেশালিটিতে ঢুকেছিলেন। এমন সময় হাসপাতালের গেটে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের পথ আটকায়। আর তারপরই বচসার সূত্রপাত। সাধন গোস্বামীর অভিযোগ, কিছুদিন ধরে পাইলসের ব্যথায় ভুগছি। তারই চিকিৎসার জন্য এদিন হাসপাতালে আসি। হাসপাতালে ঢোকার মুখে আমার স্ত্রীর ব্যাগ দেখতে চায় নিরাপত্তাকর্মীরা। কথায় কথায় এক নিরাপত্তাকর্মী আমার স্ত্রীর ব্যাগ ছিনিয়ে চেন খুলে ব্যাগের সমস্ত জিনিস মাটিতে ফেলে পা দিয়ে মাড়িয়ে দেয়। এ ব্যাপারে আমি প্রতিবাদ করতেই নিরাপত্তারক্ষীরা আমাকে মারে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হাসপাতালেরই একটি ঘরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। বুকে, পেটে লাথি ঘুষি মারতে থাকে। ওদের টানাহেঁচড়ায় আমার জামাও ছিঁড়ে যায়। পরে অন্য রোগীদের পরিজনরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করতেই আমাকে ওরা ছাড়ে।
সাধনবাবুর স্ত্রী গৌরী গোস্বামী বলেন, এদিন হাসপাতালে ঢোকার মুখে আমার হাতে থাকা ব্যাগ এমনভাবে একজন নিরাপত্তারক্ষী ছিনিয়ে নেয়, তাতে আমার হাতে আঘাত লাগে। হাতে ব্যথাও আছে। এদিকে, এদিন অশান্তির পর আমার মেয়ে ও নাতনি হাসপাতালে আসে। ওরাও স্বীকার হয় হেনস্তার। হাসপাতালে যদি কোনও নতুন নিয়ম হয়েই থাকে, তাহলে আমরা তা মানতে রাজি। কিন্তু যেভাবে নিরাপত্তারক্ষীরা দুর্ব্যবহার করল তা ঠিক নয়। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাব।
এদিকে, প্রত্যক্ষদর্শী কনকচন্দ্র রায় নামে হলদিবাড়ির এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের এক আত্মীয় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি। এদিন তাঁকে দেখতেই হাসপাতালে আসা। সেসময় আমি দেখি নিরাপত্তারক্ষীরা একজন বয়স্ক লোককে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। সীমা দাস নামে ক্রান্তির আরএক বাসিন্দা বলেন, আমি চিকিৎসার জন্যই হাসপাতালে আসি। আমিও দেখেছি নিরাপত্তাকর্মীরা দুর্ব্যবহার করছে। চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছে। নিরাপত্তারক্ষীদের আরও সহনশীল হওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাঃ প্রদীপকুমার বর্মা বলেন, বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর না নিয়ে কিছু বলব না।
হাসপাতালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ বলেন, সম্প্রতি একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর বিড়ি, সিগারেট, পান, গুটখা নিয়ে প্রবেশের ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হয়েছে। তার জেরেই হয়তো বচসা। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।