নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: জনপ্রতিনিধি হিসেবে উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) ও ঈশা খান চৌধুরী। সংসদ ও বিধানসভায় দু’জনের মালদহের জন্য সোচ্চার হননি। এখন বরকত গনিখান চৌধুরীর নাম ভাঙিয়ে ভোটে জিততে চাইছেন ঈশা খান। শুক্রবার এই ভাষাতেই কোতোয়ালি পরিবারের কংগ্রেস শিবিরকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম নুর। গনি পরিবারের অন্যতম সদস্য মৌসম এদিন মালদহের দুই প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও শাহনওয়াজ আলি রায়হানকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এদিন বিকেলে পুরাতন মালদহের একটি বেসরকারি হোটেলে আয়োজিত ওই সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েনও উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিক বৈঠকে মৌসম কড়া ভাষায় কোতোয়ালি পরিবারের সদস্যদের একাংশকে আক্রমণ করেন। সেখানে জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, মালদহের উন্নয়ন চাইলে কংগ্রেসকে একটি ভোটও দেবেন না। আমি মালদহের একটি বিশেষ পরিবারের সদস্য। বরকত সাহেবের পরিবার থেকে উঠে এসেছি। দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরী ভোট প্রচারে বের হয়ে বরকত সাহেবের কথা বলছেন। কিন্তু বিধায়ক থাকাকালীন তিনি এলাকায় সময় দেননি। বিধানসভাতেও মালদহের উন্নয়নের জন্য কোনও আওয়াজ তোলেননি। ঠিক একইভাবে ওই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদের (ডালুবাবু) এলাকায় বা সংসদে কী ভূমিকা ছিল, তা মানুষ ভালোভাবেই জানেন। তিনি আরও বলেন, গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে রাজ্যসভার সদস্য করেছেন। বরকত সাহেবের দেখানো পথে আমি মালদহের ভাঙন সহ অন্যান্য সমস্যা নিয়ে সংসদে সোচ্চার হয়েছি। আমাদের দলের দুই প্রার্থী অনেক ত্যাগ স্বীকার করে রাজনীতিতে এসেছেন। তাঁরাও আমার মতো সংসদে আওয়াজ তুলবেন। তাঁদের বিপুল ভোটে জেতানোর জন্য আমি জোড়া ঘাসফুল প্রতীকে বোতাম টেপার জন্য জেলাবাসীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
জেলা কংগ্রেস সহ সভাপতি তথা দলের দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রের প্রার্থী ঈশা খান চৌধুরী বলেন, দলের চাপে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে মৌসম নুর ওই ধরনের মন্তব্য করেছেন। বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক থাকাকালীন কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের কাছে তদ্বির করে থমকে থাকা সড়ক প্রকল্পের জন্য ১৪০ কোটি টাকা আদায় করে এনেছিলাম। ফরাক্কা সংলগ্ন এলাকায় ভাঙন মোকাবিলায় ডালুবাবু ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করিয়েছিলেন। আরও অনেক কাজ আমরা জেলার উন্নয়নের জন্য করেছি।
ঈশার সংযোজন, মৌসম ২০০৯-১৯ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন। ফলে কংগ্রেস কাজ করেনি বললে, তার দায় তাঁকেও নিতে হবে।
কোতয়ালি পরিবারের সদস্য মৌসমের এধরনের মন্তব্যে হতাশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেস প্রার্থী ঈশার কথায়, রাজনীতির মধ্যে পরিবারকে আমরা আনতে চাই না। এই ধরনের সংস্কৃতি তৃণমূল জেলায় আমদানি করেছে।
এবারের নির্বাচনে উত্তর মালদহ কেন্দ্রে টিকিট না পেয়ে মৌসম কিছুটা হতাশ হন। তাঁকে সেভাবে দলের হয়ে প্রচারে নামতে দেখা যায়নি। ফলে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়ায়। মৌসমের নিষ্ক্রিয়তা পরোক্ষে কংগ্রেসের সুবিধা করে দিতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছিলেন। সেই কারণে মৌসম এদিন সরব হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
নিজস্ব চিত্র