সব কর্মেই অর্থকড়ি উপার্জন বাড়বে। কর্মের পরিবেশে জটিলতা। মানসিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করুন। ... বিশদ
গুয়াহাটি শহরের বশিষ্ঠ চড়িয়ালি স্টপেজে নেমে মিনিট পাঁচেক এগিয়ে গেলেই হাইওয়ের ধারে বিজেপির সুবিশাল অট্টালিকা, কারও নজর এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। বড় রাস্তা দিয়ে বাস কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে যে বা যাঁরাই যাচ্ছেন, ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতেই হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের অসম এপি সেন্টারকে। ভবনের একেবারে সামনে সুউচ্চ কালো রঙের গেট। তার বাঁদিকে নরেন্দ্র মোদি এবং হিমন্ত বিশ্বশর্মার ছবি দিয়ে লেখা—এবার আবার মোদি সরকার। ভবনের একেবারে উপরে বাঁদিকে দৈত্যাকার একটি ঘড়ি, যা বহুদূর থেকে দেখা যাচ্ছে। ঠিক তার পাশেই পদ্মফুল প্রতীক ডিজিটাল লাইটিংয়েরর মাধ্যম ফুটে উঠছে। কালো রঙের প্রথম গেট সাধারণত খোলা হয় না। ভিপিআইপি আসলে তবেই খোলে। ঠিক তার পাশ দিয়েই রয়েছে দ্বিতীয় গেট। সামনে গাড়ি রাখার জন্য বিরাট পার্কিংপ্লেস।
বিল্ডিংয়ের ভিতরে ঢুকে প্রথমেই চোখে পড়বে কড়া নির্দেশ বোর্ড। তাতে লেখা, প্লাস্টিকের জলের বোতল কার্যালয়ের ভিতরে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। সিঁড়ি দিয়ে একতলায় রিসেপশনে ওঠার সময়ই দু’পাশের বাহারি গাছ মনে করিয়ে দেবে, নামী সংস্থার হোটেলে প্রবেশ অনুভূতি। এক তলায় রিসিপশনে ভারত মাতার বিশালাকার ছবি। তার সঙ্গেই রয়েছে পদ্মফুল প্রতীক। আর এক পাশে গ্লোসাইন বোর্ডে জ্বলজ্বল করছে লেখা, ‘দেশ আগে পার্টি পরে, ব্যক্তি সবার শেষে’। নরেন্দ্র মোদির ছবি দিয়ে সাজানোর চারদিক। রয়েছে অমিত শাহ-জেপি নাড্ডার ছবিও। ভবনটি অটল বিহারী বাজপেয়ির নামাঙ্কিত, তাঁর একটা বিরাট আকারের প্রতিকৃতিও রয়েছে। অসমের ঐতিহ্যবাহী সাদা-লাল গামছা আর জাপি দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে রিসেপশন সংলগ্ন বিভিন্ন অংশ।
এখানে আবার নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার জন্য রয়েছে ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স ব্যবস্থা। রিসেপশনে কিউ আর কোড রয়েছে, তাতে স্ক্যান করে বিভিন্ন পদাধিকারীরা তাদের দৈনিক উপস্থিতি জানান দেন। রাজ্য কমিটির পদাধিকারী, নির্বাচনী কমিটির সদস্য, অফিসের কর্মচারীরা, কখন আসছেন, যাচ্ছেন সবটাই স্ক্যান করে নিতে হয়। পদ্মপার্টির ডিজিটাল অফিস। দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক পদাধিকারী, সেল, মোর্চার জন্য আলাদা আলাদা ঘর। কনফারেন্স রুম, ভিডিও কনফারেন্স রুম, আই টি রুম, ডিজিটাল রুম, লাইব্রেরি সহ একাধিক ব্যবস্থাপনা। ৫০৬ নম্বর রুমে লেখা ‘কল সেন্টার’। নজর করার মতো বিষয় হল তুলসি মণ্ডপ। কোনও রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিসে তুলসী মণ্ডপ, বিরলই বলা চলে। সেখানে নজির অসম বিজেপির। তিনতলার সেই তুলসি মণ্ডপ প্রতিদিন নিয়ম করে গঙ্গা জল ঢালা আর সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানোর দায়িত্বে তফসিলি মোর্চার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা। ‘মামা’ হিমন্ত বিশ্বশর্মার অফিস চারতলায়। অ্যান্টি চেম্বার, বৈঠকের জন্য আলাদা ঘর রয়েছে। জানা গেল, ভিভিআইপি রুম সব ছয় তলায়, বৈভবের পান্থশালা। গোটা উত্তরপূর্ব ভারতে এমন পার্টি অফিস আর একটিও নেই। আসলে কী এটি দম্ভ, ক্ষমতা প্রদর্শনের নিদর্শন স্বরূপ! অসমবাসীর প্রশ্নটা থেকেই গেল!