বহু প্রচেষ্টার পর পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে শরিকি সহমত। ব্যবসা, পেশা ও ধর্মকর্মে শুভ সময়। ... বিশদ
পঞ্চায়েত হোক বা লোকসভা—বিভিন্ন নির্বাচন ঘিরে যে অজস্র হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে, তা মানুষকে কতটা বিচলিত করে, তার হদিশ পেতে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল রাজ্যের একাধিক জেলায়। জেলাগুলির ‘স্পর্শকাতর’ কিছু এলাকার সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী, সাধারণ গ্রামবাসী এবং প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে রাজনৈতিক হিংসায় যুক্তদের সঙ্গে কথা বলেন সমীক্ষকরা। ২১ থেকে ৩৫ বছর বয়সিদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। উঠে আসে চমকে দেওয়ার মতো সব তথ্য।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ৪৩০ জন। পুরুষ ছিলেন ২৯০ জন। মহিলা ১৪০। এর মধ্যে ৮৬ শতাংশ জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় ভোটকেন্দ্রিক হিংসায় অংশ নেওয়ার জন্য আজও তাঁরা অনুশোচনায় ভোগেন। ৭৩ শতাংশ মহিলা জানিয়েছেন, ভোটদানকে কেন্দ্র করে হিংসা, পাল্টা হিংসার জন্য তাঁদের ঘরবাড়ি তছনছ হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ প্রিয়জনকে পর্যন্ত হারিয়েছেন। তবে ৭৯ শতাংশ জানান, নিজেরা নন, অন্যের প্ররোচনা ও উসকানিতে পা দিয়েই তাঁরা মারামারি ও হিংসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। ১৪ শতাংশ সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী আফশোস করে বলেন, ‘কাদের জন্য এসব করলাম! যাঁদের জন্য করলাম, তাঁরাই তো দল বদল করে ফেলেছেন। নিজের স্বার্থ বুঝে নিয়েছেন। মাঝখান থেকে আমরাই বোকা বনে গিয়েছি।’
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পরিসংখ্যানবিদ সুদীপ ঘোষ এবং তাঁর টিম এই সমীক্ষা চালান। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের ১১ তারিখ পর্যন্ত তাঁরা মুশির্দাবাদের ডোমকল, জলঙ্গী, ভরতপুর, বেলডাঙা, রেজিনগর এবং বর্ধমানের ভাতার ও গলসিতে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। সুদীপবাবু বলেন, ‘আমরা কথা বলে দেখলাম, ভোটের হিংসা মানুষ ভুলতে পারে না সহজে। চিরস্থায়ী ক্ষত তৈরি করে দেয় অনেকের মনে।’
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৬৯ শতাংশ জানিয়েছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাঁরা রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। হুমকির মুখেও পড়েছিলেন। ৫৪ শতাংশ জানান, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, সম্পত্তি ধ্বংসের মতো কাজে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। ৭৬ শতাংশ জানিয়েছেন, এসব হিংসার ফলে ভুগতে হয়েছে তাঁদের পরিবারকেও। আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। অর্ধেকের বেশি অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, হিংসা ও পাল্টা হিংসার জেরে তাঁদের ঘরছাড়া হয়েও থাকতে হয়েছে দীর্ঘদিন। ভোটে হিংসা কি আটকানো যায় না? তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র ডাঃ শান্তনু সেন বলেন, ‘ভোটের হিংসা কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। যারা যুক্ত থাকে, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। তবে দেখা গিয়েছে, যাদের মানুষের রায়ের উপর ভরসা নেই বা সেই রায় মেনে নিতে পারে না, তারাই এসব কাণ্ড করে।’ বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ এবং মুখ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘হিংসামুক্ত ভোট করতে গেলে শাসক দলকেই এগিয়ে আসতে হবে। জঙ্গলে হরিণ হিংসা করতে আসে? আসে বাঘই!’