নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে যে অঙ্কের বিমা করার দরকার, তা বাস্তবে হচ্ছে না। সেই কারণে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে সংস্থাগুলি। কলকাতায় মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত এক আলোচনাসভায় এমনই মন্তব্য করলেন একটি বেসরকারি বিমা সংস্থার প্রধান (রিটেল ও গভর্নমেন্ট বিজনেস) আনন্দ সিংগি। তিনি বলেন, গোটা বিশ্বে সামগ্রিকভাবেই অনিশ্চয়তা বাড়ছে। তাই ব্যবসার স্বার্থরক্ষার কারণেই শিল্প সংস্থাগুলির বিমা করা জরুরি। সেক্ষেত্রে ব্যবসার সম্পদের মূল্য অনুযায়ী যতটা অঙ্কের বিমা করা জরুরি, অনেক ক্ষেত্রেই তা করা হয় না। প্রয়োজনের তুলনায় কম অঙ্কের বিমা ছোটশিল্পের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সঠিক অঙ্কের বিমা না-করার জন্য বিরাট আর্থিক লোকসানের মুখে পড়তে হয় সংস্থাগুলিকে। অথচ খুব ছোট অঙ্কের প্রিমিয়াম মিটিয়ে সেই ক্ষতি এড়ানো যায়। ওই বিমাকর্তার বক্তব্য, এক লক্ষ টাকার প্রিমিয়ামের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকার সম্পত্তিকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। তাঁর কথায়, যে পরিমাণ সম্পদ শিল্প সংস্থাগুলিতে থাকে, তার চেয়ে কম অঙ্কের বিমা করালে ক্লেম পেতেও অনেক সমস্যা তৈরি হয়। ওই বিমাকর্তার কথায়, দেশে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৩০ লক্ষ। তার ৮৫ শতাংশই বিমার আওতার বাইরে।
আনন্দ সিংগির দাবি, জীবন বিমার বাইরে যেসব সাধারণ বিমা রয়েছে, বিশ্বে তার ক্রেতার হার ৪ শতাংশ। অর্থাৎ বিশ্বে প্রতি ১০০ জনের চারজন সাধারণ বিমা কেনেন। অথচ ভারতে সেই হার মাত্র ১ শতাংশ। এখানে ১৪০ কোটি দেশবাসীর মধ্যে অতি অল্প সংখ্যক মানুষের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য বিমা আছে। অথচ সাধারণ বিমা ব্যবসার ৩৭ শতাংশই দখল করে আছে স্বাস্থ্যবিমা। এর থেকেই বোঝা যায় এদেশে বিমার ব্যবসা বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট পরিসর রয়ে গিয়েছে। ভারতের মতো দেশে জীবন বিমার বাইরে সাধারণ বিমার বাজার মাত্র তিন লক্ষ কোটি টাকার। ওই অনুষ্ঠানে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার কস্তুরি সেনগুপ্ত বলেন, প্রবীণ নাগরিকদের সুবিধায় বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএআই ২৪ ঘণ্টার জন্য হেল্পলাইন চালু করেছে। আয়ুশ চিকিৎসাকেও যাতে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা যায়, তারও উদ্যোগ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।