বহু প্রচেষ্টার পর পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে শরিকি সহমত। ব্যবসা, পেশা ও ধর্মকর্মে শুভ সময়। ... বিশদ
বিরোধীদের ভোটব্যাঙ্কে চিড় ধরাতে ধর্মীয় বিভাজন বিজেপির দীর্ঘদিনের কৌশল। প্রথম দফার ভোটের পর মোদিব্রিগেডের এই প্রবণতা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। আর তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তৃণমূলের কটাক্ষ, সমাজের সব শ্রেণির মানুষের ভোট ঝুলিতে আসবে না বুঝেই মেরুকরণের চেনা অস্ত্র ব্যবহার শুরু করেছে বিজেপি। লাগাতার নিশানা করা হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। গেরুয়া শিবিরের এই ‘কৌশল’ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ফাঁস করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দু’টি জনসভাতেই বিজেপির বিরুদ্ধে বিভেদের রাজনীতির অভিযোগে সরব হয়েছেন তিনি। প্রথমে বোলপুরের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে হাসন, আর তারপর বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী কীর্তি আজাদের সমর্থনে ভাতারের সভা। মমতার আক্রমণ, ‘মোদি-শাহরা এতই ঘাবড়ে গিয়েছেন যে, এইসব ভয়ঙ্কর কথা বলতে হচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন, ভেদাভেদ করে দেশ চালানো যায় না। নির্বাচনেও হয় না। ওরা বিভেদের প্রাচীর তুলতে চায়। মোদিবাবু দাবি করেন, তিনি নাকি সেরার সেরা। কিন্তু গণতন্ত্রকে জেলখানায় ভরে গোটা বিশ্বের সামনে দেশকে হেনস্তা করেন।’
বিজেপি কীভাবে ধর্মের বিভাজন ঘটাচ্ছে, তার কিছু তথ্য মঞ্চ থেকে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরেন নেত্রী। তাঁর কথায়, ‘সিপিএম ও কংগ্রেসকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ ধরানোর চেষ্টা করছে। চাইছে, ওই ভোট যেন তৃণমূলের দিকে না আসে।’ তাই মানুষের কাছে মমতার আবেদন, ‘এক দেশ এক দল এক সরকার এক নেতা—এটাই করতে চাইছে বিজেপি। ওদের ভোট দিলে আগামী দিনে সাধারণ মানুষের ধর্মের অধিকার থাকবে না। তফসিলি জাতি-উপজাতি, এমনকী আদিবাসীদের অধিকারও থাকবে না।’
এদিন দু’টি জনসভাতেই মমতা তাঁর সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরেন। জানিয়ে দেন আগামীর লক্ষ্যও। বলেন, ‘দিল্লিতে মহাজোট ইন্ডিয়া ক্ষমতায় আসবেই। বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, ওরা ৩৪ বছর অত্যাচার করেছে। আর এখন কংগ্রেস বিজেপির বন্ধু হয়ে রোজ আমাদের গালি দিচ্ছে। বিজেপি দেশ থেকে চলে গেলে আমরা সিএএ বাতিল করব। হতে দেব না এনআরসিও।’
মমতার বক্তব্য যে সাধারণ মানুষের মন ছুঁয়ে গিয়েছে, তার প্রমাণ মিলেছে প্রতিটি জনসভায়। প্রখর রোদের মধ্যেও বীরভূম ভেসেছে জনস্রোতে। সভা দু’ঘণ্টা দেরিতে শুরু হলেও জনতার উচ্ছ্বাস এতটুকু কমেনি। মমতা যতবার ‘খেলা হবে’ সুর তুলেছেন, তাতে গলা মিলিয়েছে আম জনতা। বুঝিয়েছে, বাংলায় বিভেদের জায়গা নেই।