নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অন্ধ্র-ওড়িশার দিক থেকে কিছু মেঘ বায়ুমণ্ডলে ঢোকার ফলে সোম-মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গে গরমের তীব্রতা সামান্য কমেছিল। খুব হাল্কা বৃষ্টিও হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশে। আবহাওয়া বিজ্ঞানের মাপকাঠিতে যাকে ‘তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি’ বলে, তা এই দু’দিন ছিল মূলত উপকূল অঞ্চলের কয়েকটি স্থানে। কিন্তু আজ বুধবার থেকে পরিস্থিতি ফের পাল্টে যাবে বলে জানাল আবহাওয়া দপ্তর—সাধারণ থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি ফিরে আসবে গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। তাপপ্রবাহ থাকবে উত্তরবঙ্গের মালদহ ও দুই দিনাজপুর জেলায়ও। আপাতত শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা দিলেও তা আরও বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। দুই মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়া জেলার জন্য ‘লাল’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই জেলাগুলি ছাড়াও তীব্র তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে দুই ২৪ পরগনা, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও ঝাড়গ্রাম জেলায়। কলকাতায় এবং বাকি জেলাগুলিতেও চলবে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি। 
তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও দক্ষিণবঙ্গের অনেক জায়গায় মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি ছিল। তবে আবহাওয়া বিজ্ঞানের মাপকাঠিতে  তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি মূলত ছিল দীঘা, হলদিয়া, ক্যানিং, ডায়মন্ডহারবার, সাগরদ্বীপ প্রভৃতি উপকূল সংলগ্ন বা তার কাছাকাছি এলাকায়। উপকূল এলাকার বাইরে শুধু পানাগড় (৪০.৮) এবং মালদহে (৪০.৮) এদিনও তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি ছিল। 
উপকূল এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং স্বাভাবিকের তুলনায় ৪.৫ ডিগ্রি বেশি হলে তাকে তাপপ্রবাহ বলা হয়। দীঘায় তাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.৮ ডিগ্রি হলেও তাপপ্রবাহ ছিল। দীঘার তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬.৭ ডিগ্রি বেশি ছিল। সাগরদ্বীপে (৩৯.৫ ডিগ্রি) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল ৭ ডিগ্রি। হলদিয়া (৪০.৯ ডিগ্রি) এবং ডায়মন্ডহাররারে (৪১ ডিগ্রি) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ৭ ডিগ্রির মতো বেশি ছিল। এদিন মেদিনীপুর দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে উষ্ণতম (৪১.২ ডিগ্রি) হলেও সেখানে তাপপ্রবাহ ছিল না। 
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সৌরীশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এদিন বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা সমান্য হ্রাসের মূল কারণ ছিল অংশত মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। কলকাতা ও দমদমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নীচে গিয়েছে এই কারণে। ছত্তিশগড় থেকে কেরল পর্যন্ত বিস্তৃত একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখার জন্য অন্ধ্র-ওড়িশার দিক থেকে মেঘ ঢুকেছিল। কিন্তু ওই অক্ষরেখাটি উপরের দিকে মহারাষ্ট্র অভিমুখ নেওয়ায় আপাতত দক্ষিণবঙ্গে  মেঘ আসার অনুকূল পরিস্থিতি আর থাকছে না। উষ্ণ ও শুষ্ক পশ্চিমী হাওয়ার দরুন তীব্র হবে তাপপ্রবাহ।