গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
বৃহস্পতিবার ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে আটটা। হাবড়া স্টেশনে এল শিয়ালদহ লোকাল। প্রতি বছরের মতো স্টেশনে চলে আসেন ট্রেনের মহিলা নিত্যযাত্রীরা। লেডিস কম্পার্টমেন্টে উঠে হাতে হাত মিলিয়ে ওঁরা ফুল দিয়ে সাজালেন। ভিতরে অস্থায়ীভাবে ফুল দিয়ে সাজানো হল কবিগুরু ছবি। মহিলাদের পরনে লাল-সাদা শাড়ি। খোঁপায় রজনীগন্ধা। ট্রেন ছাড়ার আগেই শুরু হয়ে যায় রবীন্দ্র বন্দনা। কবির গান দিয়েই কবিপ্রণাম শুরু করেন মহিলা যাত্রীরা। একে একে গান, কবিতার মধ্য দিয়ে কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। মহিলা নিত্যযাত্রীদের উদ্যোগ কবিপ্রণামের অনুষ্ঠানে শামিল হতে শুরু করেন পুরুষ যাত্রীরাও। অভিযোগ, ৮টা ৫৫-র হাবড়া লোকাল ছাড়ার আগেই আরপিএফ রবীন্দ্র-বন্দনাতে বাধা দেয়। সাফ জানানো হয়, ট্রেনের কামরায় কোনও কিছু অনুষ্ঠান করতে গেলে রেলের অনুমতি প্রয়োজন। তাই এটা করা যাবে না। এরপর আইনি যাঁতাকলে পড়ে কার্যত বাধ্য হয়ে মাঝপথে অনুষ্ঠান বন্ধ করে কবিগুরুর ছবি হাতে নিয়ে হাবড়া প্ল্যাটফর্মে এই অনুষ্ঠান করতে হল উদ্যোক্তাদের। রেলের এই পদক্ষেপে হতাশ যাত্রীরা।
উদ্যোক্তাদের কেউ স্কুল শিক্ষিকা, কেউ কলেজের শিক্ষাকর্মী। আবার কেউ শিল্পী। প্রত্যেকেই প্রতিদিন ৮টা ৫৫ মিনিটের হাবড়া লোকালে চেপে গন্তব্যে পৌঁছন। আসা যাওয়ার পথেই পরিচিতি অঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়নী মুখোপাধ্যায়, সোমা বিশ্বাসদের। সেই সূত্রেই সাত বছর ধরে মহিলা কম্পার্টমেন্টে ২৫ বৈশাখ উপলক্ষ্যে কবিগুরুকে স্মরণ করার উদ্যোগ শুরু হয়। সোমা বিশ্বাস বলেন, ২৫ বৈশাখ আমাদের ছুটি থাকে, তাই সাত বছর ধরে ২৬ বৈশাখ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করি মহিলা কামরায়। এবার করতে গিয়ে আমাদের বাধার মুখে পড়তে হল। কী কারণ বুঝতে পারছি না! কামরার ভেতরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো মানুষের জন্মদিন পালনে বাধা পেয়ে লজ্জা লাগছে, কোথায় আমরা রয়েছি।
এদিকে, পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, আরপিএফ হয়তো কোনও অভিযোগের ভিত্তিতে এটা করেছেন। কারণ, একটি কামরায় তো অনেক ধরনের যাত্রী থাকেন। আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালনের বিষয়টিও মানুষের কাছে আবেগের। তাই, বিষয়টি কী হয়েছে খতিয়ে দেখতে
হবে।