ঘরে বা পথেঘাটে পড়ে গিয়ে শরীরে বড় আঘাত পেতে পারেন। আমদানি রপ্তানির ব্যবসা ভালো হবে। ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারকেলডাঙা এলাকার হারশি স্ট্রিটের বাসিন্দা ইমামউদ্দিনের সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী শাহিদের অনেকদিন ধরে গোলমাল চলছিল। শাহিদের অভিযোগ ছিল, তাঁর মিটার বক্স থেকে হুকিং করে ঘরে লাইট জ্বালাচ্ছেন ইমামউদ্দিন। যে কারণে বিল বেশি আসছে। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। শাহিদ ও ইমামউদ্দিন যৌথভাবে বেশকিছু নির্মাণ কাজ করছিলেন। সেখানে টাকার ভাগ নিয়েও মনোমালিন্য দেখা দেয়। ১৩ এপ্রিল শাহিদের সঙ্গে ওয়ার্ড সভাপতি ও তাঁর ভাইয়ের হাতাহাতি হয়। মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে শাহিদকে আঘাতের অভিযোগ ওঠে। ইমামউদ্দিন ও ফকরুদ্দিনের বিরুদ্ধে কেস রুজু হয়। ফকরুদ্দিন গ্রেপ্তার হলেও, পালিয়ে যান ইমামউদ্দিন। তখনই পুলিস জানতে পারে, ইমামউদ্দিন বেআইনি পার্কিং ও হুকিং সিন্ডিকেট চালান। পাশাপাশি ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ করেন। পাল্টা সিল্ডিকেট চালায় শাহিদ সহ অন্যরা। এর সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তাই নিয়ে রেষারেষি চলছিল।
পুলিস জেনেছে, শাহিদের ছেলে রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ইমামউদ্দিনের স্ত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের। থানায় অভিযোগ জানাতে যান ওই মহিলা। স্ত্রীর সম্ভ্রমহানি হয়েছে শুনে বুধবার ইমামউদ্দিন এলাকায় আসেন। অভিযোগ, শাহিদের বাড়িতে ছুরি নিয়ে তিনি চড়াও হন। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে ব্যাপক ঝামেলা হয়। অভিযোগ, সেই সময় শাহিদ খুন করার হুমকি দেন ইমামউদ্দিনকে। বুধবার রাতে এলাকাতেই ছিলেন ওই কংগ্রেস নেতা। ভোরবেলা তিনি কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য রাস্তায় এলে তাঁকে তাড়া করে মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আসরফ সহ জনা আটেক যুবক। ভয়ে দৌড়তে শুরু করেন ইমামউদ্দিন। শিয়ালদহ ডিআরএম অফিসের কাছে রাস্তায় তিনি পড়ে যান। তাঁকে ঘিরে ধরে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে আটজন। গলা, পেট, মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হয়। তাঁকে খুন করে পালায় অভিযুক্তরা। স্থানীয়রা ইমামউদ্দিনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ফোন করেন থানায়। পুলিস এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ইমামউদ্দিনের স্ত্রীর অভিযোগ, শাহিদ ও তার দলবল স্বামীকে খুন করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। তদন্তে নেমে ওই এলাকায় থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয় পাঁচজনকে। দেখা যায় অভিযুক্তদের মধ্যে শাহিদ রয়েছে। এরপর তল্লাশি চালিয়ে পাপ্পু, আসরফ, শাহিদ আলতাফ সহ পাঁচজনকে ধরা হয়। ঘটনা শুনে এলাকায় এসে ইমামউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্য। প্রদীপবাবুর অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলারের মদতপুষ্ট গুণ্ডারা এই খুন করিয়েছে। এর বিরোধিতা করে কাউন্সিলার শচীন কুমার সিং বলেন, দুই পরিবারের ঝামেলা থেকে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।।