নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: দুষ্কৃতীদের ‘টার্গেট’ছিলেন তিনিই। পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে গুলি চালানোর আগে তার নাম ধরেই ‘খোঁজ’ করেছিল দুষ্কৃতীরা। এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণের মাঝেও ‘সাহস’ দেখান বাঁকড়া ৩ পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান টুকটুকি শেখ। একজনের হাত থেকে কেড়ে নেন আগ্নেয়াস্ত্র। না হলে বড়সড় বিপদ ঘটত, এমনটাই মনে করছেন সবাই। রোজকার রুটিন মেনে বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতে এসেছিলেন ডোমজুড় ব্লকের বাঁকড়া ৩ পঞ্চায়েতের প্রধান টুকটুকি শেখ। নিজের ঘরে বসে পঞ্চায়েতের কাগজপত্রে সইসাবুদ করছিলেন। সঙ্গে অন্যান্য পঞ্চায়েত সদস্য-সদস্যা এবং কয়েকজন সাধারণ মানুষও ছিলেন। হঠাৎ হুড়োহুড়ির শব্দ শুনে সজাগ হন তিনি। শুনতে পান, কেউ বা কারা তাঁর খোঁজ করছেন। ‘প্রধান ম্যাডাম কই?’ এরপর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধান। এলোপাথাড়ি গুলি চালানো শুরু হয় পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরেই। 'টার্গেট' যে তিনিই, তা বেশ বুঝতে পেরেছিলেন। প্রাণভয়ে অন্যদের সঙ্গে টেবিলের তলায় লুকিয়ে পড়েন টুকটুকি। ততক্ষণে সেই ঘরেও ঢুকে গিয়েছে এক দুষ্কৃতী। টেবিলের তলা লক্ষ্য করে গুলি চালাতে উদ্যত হওয়া মাত্রই টুকটুকি ঝাঁপিয়ে পড়েন এক দুষ্কৃতীর উপর। তার হাত থেকে কেড়ে নেন আগ্নেয়াস্ত্র। অস্ত্র হাতছাড়া হয়ে যাওয়া মাত্রই রণে ভঙ্গ দেয় ওই দুষ্কৃতী। প্রধান বলেন, দুষ্কৃতীরা ঢোকার পরে ম্যাডাম কোথায় বলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। আমাদের এক সদস্য জিজ্ঞাসা করেন কেন কী দরকার? এরপরই সকলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে ফেলে তারা। মুহূর্তের মধ্যে পরপর গুলি চালানো শুরু করে। সেই সময় পঞ্চায়েতেই ছিলেন আমার বাবা ও কাকা। তাঁদের গায়ে গুলি লাগে। আমি প্রাণ বাঁচানোর জন্য টেবিলের তলায় ঢুকে পড়েছিলাম। যখন বুঝতে পারি এবার টার্গেট আমিই, তখনই তার হাত থেকে বন্দুকটা কেড়ে নিই। এরপরই তারা পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার পরে আরও চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন প্রধান টুকটুকি শেখ। তিনি বলেন, যারা এদিন গুলি চালাতে এসেছিল সম্ভবত তারাই এর আগে আমার বাড়ির চারপাশে ঘোরাফেরা করছিল। আমি বিষয়টি পুলিস প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। লিখিত আকারে জানিয়েছিলাম। আমি ছাড়াও পঞ্চায়েতের সদস্যদেরও টার্গেট করা হয়েছিল।