জেলা পেরিয়ে ভোটের উত্তাপ এবার আছড়ে পড়তে চলেছে খাস কলকাতায়। ১ জুন শহরবাসীর আঙুলে পড়বে নির্বাচনের কালি। তার ঠিক চারদিন আগে কলকাতা সাক্ষী থাকতে চলেছে মমতা-মোদির ‘হাইভোল্টেজ’ প্রচারের।
সকাল সাড়ে ৯টা। সাঁকরাইলের ধূলাগড় এলাকায় কারবালার কাছে একটি বুথে তৃণমূল ও সিপিএমের এজেন্টদের দেখা মিললেও খুঁজে পাওয়া গেল না বিজেপি’র কোনও এজেন্টকে। তাঁদের কি বসতে দেওয়া হয়নি?
সকাল থেকেই মেঘের মুখ ভার। গলদঘর্মে নাজেহাল অবস্থা ভোটারদের। ভোটের লাইন ভিড় যত বেড়েছে ততই বাড়ছিল অস্বস্তি। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ কালো হয়ে আসে আকাশ। তখন শীতল বাতাসে স্বস্তি মেলে। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি।
ঘুগনির ঝোলে ডোবানো পাউরুটির শেষ অংশটুকু খুব তৃপ্তি করে মুখে পুরলেন মিতালি দেব। তারপর একটু জল গলায় ঢেলে হাসিমুখে বললেন, ১৯৯৬ সাল থেকে ভোট করছি ভাই। এক সময়ে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ছিলাম। আমি মানুষের চোখের ভাষা চিনি। এই ভোটে কী হতে চলেছে, সেটা স্পষ্ট।
আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের তারকেশ্বর ব্লকে বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে থাকা কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হলেন তৃণমূল বুথ সভাপতি তাপস বেরা। তাঁর পা ভাঙে। চিকিৎসার জন্য তাঁকে দ্রুত তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কেউ দিনভর রইলেন খোশমেজাজে। কেউ নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে রাগী রাগী মুখ করে দাপিয়ে বেড়ালেন একটিই বিধানসভা এলাকা। আবার কেউ বিন্দুমাত্র আবেগ না দেখিয়ে চালিয়ে গেলেন লড়াই। হুগলি লোকসভা নির্বাচনের তিন মুখ্য প্রার্থী ভোটের দিন কাটালেন পরস্পরের থেকে একেবারেই ভিন্ন মুডে।
বাগদার বাসিন্দা বছর ছিয়াশির যমুনা বাইন। বয়সের ভারে সেভাবে চলাচলও করতে পারেন না। কিন্তু গণতন্ত্রের শ্রেষ্ঠ উৎসবে তাঁর অংশগ্রহণ চাই-ই চাই। মায়ের আবদার মেটাতে উদ্যোগী ছেলে। পরিবারের লোকের সঙ্গে মাকে ভোট কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন।
সকালে ইভিএম খারাপ, কয়েকটি ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর, মারধর ও ছোটখাটো সংঘর্ষের দু’-একটি ঘটনা। এর বাইরে সার্বিকভাবে উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ পর্ব মিটল শান্তিতেই। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বাগনানের কাজিরচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
বেশ অকপটেই বিজেপি কর্মীরা বলছেন, ‘এই ঘুষ আমরা এমনি এমনি দিচ্ছি না, এটা মাথায় রাখবেন।’ বলে লুচি-আলুর দম তুলে দিচ্ছেন ভোটারদের হাতে। কোথাও আবার দেদার বিলি করছেন লাড্ডু।
পঞ্চায়েত ভোটের একেবারে উল্টোপথে হাঁটল ডোমজুড় ও জগৎবল্লভপুর। প্রায় অধিকাংশ জায়গায় অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে সোমবার। কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর এলেও তা বড় আকার নেয়নি। একটি জায়গায় সিপিএম এবং অন্য একটি জায়গায় বিজেপি এজেন্ট ও কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ।
ভোটে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব ছিল তাঁদের কাঁধেই। দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে এলাকায় টহল দিচ্ছেন তাঁরা। তবে ভোটের দিন মানেই অতিরিক্ত দায়িত্ব। ফলে তাঁদের খাবারের আয়োজনেও ছিল স্পেশ্যাল মেনু, যাকে বলে ‘পাওয়ার মিল’।
বহু প্রচেষ্টার পর পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজনে শরিকি সহমত। ব্যবসা, পেশা ও ধর্মকর্মে শুভ সময়। ... বিশদ
সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: ‘দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় চারটি লোকসভা আসন রয়েছে। এই চারটি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের মধ্যে কে সব থেকে বেশি ব্যবধানে জিতবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। আমি চাই, ডায়মন্ডহারবারের থেকেও মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী আরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতুন’। মঙ্গলবার পাথরপ্রতিমায় কলেজ মাঠে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে একথা বলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালের থেকেও এবার আরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিততে হবে তৃণমূল প্রার্থীকে। অতীতে বিধানসভা পিছু যে ভোট পেয়েছিল দল, এবার তার থেকে অন্তত পাঁচ হাজার বেশি ভোটে লিড দিতে হবে। মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রকে আগামী দিনে ডায়মন্ডহারবারের মডেলে সাজানো হবে। যে উন্নয়নের মডেল আজ সর্বত্রই আলোচনার বিষয়। গত দশ বছরে ডায়মন্ডহারবারে ৫,৫৮০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বারাণসীতেও উন্নয়নের এত কাজ হয়নি। সেই ডায়মন্ডহারবার মডেল আগামী দিনে মথুরাপুরে কার্যকর করা হবে’।
২০২১ সালের নির্বাচনে নামখানায় এসে অমিত শাহ বলেছিলেন, সুন্দরবনের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র দু’লক্ষ কোটি টাকা দেবে। অভিষেক বলেন, ‘তিনি কিছুই দেননি। এমনকী, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বিজেপির কোনও নেতা সুন্দরবনে আসেননি। রাজ্য সরকারই সুন্দরবনের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই লোকসভা কেন্দ্রের তীর্থস্থান হল গঙ্গাসাগর। গঙ্গাসাগর মেলার সময় দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষাধিক পুণ্যার্থী আসেন।
এই মেলাকে জাতীয় মেলা হিসেবে ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র তা করেনি। এই সরকার বাংলা বিরোধী’।
এদিন তিনি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলির খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এই জেলার প্রায় সাড়ে ২০ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাচ্ছে। প্রায় ২৮ লক্ষ ছাত্রী কন্যাশ্রীর সুবিধা পাচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য সরকারি প্রকল্পে সহায়তা পাচ্ছেন এই জেলার মানুষ’।
২০২১ সালের নির্বাচনে নামখানায় এসে অমিত শাহ বলেছিলেন, সুন্দরবনের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র দু’লক্ষ কোটি টাকা দেবে। অভিষেক বলেন, ‘তিনি কিছুই দেননি। এমনকী, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বিজেপির কোনও নেতা সুন্দরবনে আসেননি। রাজ্য সরকারই সুন্দরবনের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই লোকসভা কেন্দ্রের তীর্থস্থান হল গঙ্গাসাগর। গঙ্গাসাগর মেলার সময় দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষাধিক পুণ্যার্থী আসেন।
এই মেলাকে জাতীয় মেলা হিসেবে ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র তা করেনি। এই সরকার বাংলা বিরোধী’।
এদিন তিনি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলির খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এই জেলার প্রায় সাড়ে ২০ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাচ্ছে। প্রায় ২৮ লক্ষ ছাত্রী কন্যাশ্রীর সুবিধা পাচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য সরকারি প্রকল্পে সহায়তা পাচ্ছেন এই জেলার মানুষ’।
