যে কোনও ব্যবসায় অগ্রগতি আশা করা যায়। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কর্মের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা হতে ... বিশদ
সোম দাস কৃষ্ণ সাধনার নিমিত্তে ঘর ছেড়েছিলেন। ১২ বছর বয়সে দীক্ষা নিয়ে নেন। তারপর মার্গ দর্শনের লক্ষ্যে ঘর-পরিবার ছেড়ে বেড়িয়ে পড়েন আরাধ্য দেবতার সন্ধানে। সাধনপর্ব সমাপ্তে সদ্য ফিরেছেন খড়দহের বাড়িতে। এবার বাড়ির কাছাকাছি কৃষ্ণ সন্ধান করার সময় খোঁজ পেলেন খড়দহে গঙ্গা তীরবর্তী মহাপ্রভু নবরত্ন মন্দিরে থাকা কৃষ্ণের। সেখানে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হল। সেই মন্দির থেকেই হাতালেন মূর্তি। তবে তাঁর কথা থেকে জানা গিয়েছে, চুরির ঘটনার নেপথ্যে লোভ ছিল কম। ঈর্ষাজনিত কারণ ছিল বেশি। ঘটনাটি শুনলে রীতিমতো আশ্চর্য হতে হয়।
শনিবার মন্দিরে কৃষ্ণমূর্তি দেখতে এসেছিলেন সাধক সোম দাস। ততক্ষণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গর্ভগৃহ। ভগবানের দর্শন পাইয়ে দেওয়ার জন্য পুরোহিতকে বিস্তর অনুরোধ করেন। কিন্তু পুরোহিত অনুরোধ রাখেননি। উল্টে অপমান করেন বলে সোমের অভিযোগ। এরপরের ঘটনার কথা বিস্তারিত জানা যাক মন্দিরের পুরোহিত শিবরাম হালদারের বয়ানে। তিনি জানান, সন্ধ্যায় পুজো করতে এসে দেখি গর্ভগৃহের দরজার তালা খোলা। কৃষ্ণমূর্তি উধাও। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিস আসে। স্থানীয় একটি ক্লাবের সিসিটিভি ফুটেজে খড়দহ থানার আধিকারিকরা দেখতে পান, সাদা ধুতি ও উত্তরীয় পরা এক যুবক একটি বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে মন্দিরে ঢুকছে। তার কিছুক্ষণ পর তারা একটি ব্যাগ হাতে বেরিয়ে যাচ্ছে। এরপর ওই ব্যক্তি যে টোটো ও অটোয় চেপেছিল সেগুলির চালকের সঙ্গে কথা বলে পুলিস। খোঁজ করতে করতে পৌঁছয় পশ্চিমপাড়ায় সোমের বাড়িতে। সেখানে একটি কাপড়ে মুড়ে কৃষ্ণমূর্তিটি রাখা ছিল। পুলিস তা খুঁজে বের করে উদ্ধার করে। সোম নিজের বোনকে মূর্তিটি রাখতে বলেছিলেন। কাপড় খুলে দেখতে বারণ করে দিয়েছিলেন। এরপর সোম যান খড়দহে এক গুরু ভাইয়ের বাড়িতে। সেখানেই নামজপ করার সময় আটক করা তাঁকে। থানায় আনা হয়। পুলিস জানিয়েছে, ওই কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গে থাকা রুপোর বাঁশি ও গয়না সোম রুইয়া এলাকার তাঁর মামাবাড়িতে রেখেছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় এই সাধক পুলিসকে বলেন, ‘ভগবান পুরোহিতের একার নয়, সবার। আমাকে ভগবানের দর্শন না করিয়ে অপমান করা হয়েছিল। তাই আমার ভগবানকে আমি মন্দির থেকে নিয়ে গিয়েছি।’
শনিবার রাতে পুলিস কৃষ্ণমূর্তিটি মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়। তারপর কৃষ্ণকে স্নান করিয়ে পুজো করার পর পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বারাকপুরের পুলিস কমিশনার অলক রাজোরিয়া বলেন, ‘পুলিস ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে মূর্তি উদ্ধার করেছে। একজন গ্রেপ্তার। ঘটনার তদন্ত চলছে।’
প্রসঙ্গত বর্ধমানের রাজার হাত ধরে খড়দহের গঙ্গা তীরবর্তী মহাপ্রভু নবরত্ন মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে।