যে কোনও ব্যবসায় অগ্রগতি আশা করা যায়। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কর্মের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা হতে ... বিশদ
যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশনের নাম ঘোষণায় ভুল। ডিসপ্লে বোর্ডে বিভ্রান্তিকর চলমান শব্দবন্ধ। কখনও স্পিকার খারাপ। কোনও ক্ষেত্রে স্পিকারের আওয়াজ এতটাই কম যে, যাত্রীদের কান পর্যন্ত ঘোষণা পৌঁছয় না। ১৫ মার্চ থেকে হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড রুটে যাত্রী পরিষেবা চালু হয়েছে। এসপ্ল্যানেড স্টেশনে নেমে জোড়া ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা নেওয়ার সুযোগ খুলে গিয়েছে। কিন্তু মেট্রো রেকগুলির সার্বিক ঘোষণা ব্যবস্থাপনায় চরম গাফিলতি থাকায় বহু যাত্রী এসপ্ল্যানেডে নামতেই পারছেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গন্তব্যের স্টেশন পেরিয়ে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট স্টেশনটির নাম ঘোষণা হচ্ছে। আবার চরম তাপপ্রবাহের সময় একাধিক রেকের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ব্যবস্থা সেভাবে কাজ করছে না। যাত্রীদের বক্তব্য, মেট্রো কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও সুরাহা মিলছে না। কয়েকটি এসি রেকে সমানে টপটপ করে জল পড়ে। সবমিলিয়ে মেট্রো রেকের ভিতরকার একাধিক সমস্যায় ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা যাত্রীদের।
এই মুহূর্তে নর্থ-সাউথ মেট্রো করিডরে তিন ধরনের রেক চলাচল করে। ২০১০ সালে প্রথম ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড (বিএইচইএল) এর তৈরি রেক এই ব্লু লাইনে আমদানি করা হয়েছিল। বর্তমানে বিএইচইএল’র ১৩টি রেক (৩০১-৩১৩) এই লাইনে যাত্রী পরিষেবায় যুক্ত। অন্যদিকে ২০১৭ সালে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রেটেড কোচ ফ্যাক্টরির তৈরি উন্নত কারিগরি প্রযুক্তির মেধা রেক দেশের প্রথম মেট্রো রুটে ছুটতে শুরু করে। এখন ১৪টি মেধা রেক (৪০১-৪১৪) সংশ্লিষ্ট রুটে আপ-ডাউন করে। করোনা পরবর্তী সময় চীন থেকে আনা একমাত্র ডালিয়ান রেকটি (৫০১) এই মেট্রো করিডোরে চলছে। তিন ধরনের রেকগুলির মধ্যে ঘোষণা সংক্রান্ত মান সবচেয়ে খারাপ বিএইচইএল শ্রেণির পরিবেশবান্ধব যানে। আট বডির এই রেকগুলির প্রতিটি কোচে তিনটি করে ইন্টারনাল কোচ ডিসপ্লে রয়েছে। সূত্রের দাবি, করোনার পর থেকে অধিকাংশ রেকের ডিসপ্লে বোর্ড খারাপ। এই বোর্ডে বাংলা, হিন্দি ও ইংরাজি ভাষায় বর্তমান ও পরবর্তী স্টেশনের নাম ভেসে ওঠে। তার বদলে বেশিরভাগ বোর্ডে জ্বলজ্বল করে ‘কলকাতা মেট্রো ওয়েলকামস ইউ’ লেখা। ফলে যাত্রীরা সঠিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই রেকগুলির বৈশিষ্ট হল, বর্তমান ও পরবর্তী স্টেশনের নাম ঘোষণার জন্য চালক কিংবা মোটরম্যানকে নির্দিষ্ট বোতামে চাপ দিতে হয়। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে মোটরম্যানদের সক্রিয়তার অভাব প্রকট হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট বোতামে চাপ দিচ্ছেন না চালকরা। স্টেশনের নাম ঘোষণা ছাড়াই একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে মেট্রো চলাচল করছে।
অভিযোগ, নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে মোটরম্যানদের একাংশ ‘ছলের’ আশ্রয় নিচ্ছেন। ঘোষণা ব্যবস্থা ও ডিসপ্লে বোর্ডের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টেশনের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তা ডিসপ্লে বোর্ডে ভেসে ওঠে। অনেক ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বোতাম টিপতে ভুলে গেলে মোটরম্যানরা সাউন্ড বক্সের আওয়াজ দেন বন্ধ করে। কিন্তু তাঁরা প্রযুক্তির জালে ধরা পড়ে যাচ্ছেন। সাউন্ড মিউট করে রাখলেও ডিসপ্লে বোর্ডে স্টেশনের নাম চলে আসছে। অপরদিকে মেধা রেকগুলিতে মোটরম্যানকে এই কাজ প্রতি ক্ষেত্রে করতে হয় না। একবার সেট করে দিলে প্রতিটি স্টেশনে ঘোষণা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হতে থাকে। মেট্রো সূত্রে দাবি, সফ্টওয়্যারের সমস্যায় জেরে বহুদিন ধরেই ঠিক মতো ঘোষণা হচ্ছে না। যেমন কালীঘাটে মেট্রো দাঁড়িয়ে রয়েছে, কিন্তু তখন ঘোষণা হচ্ছে ‘পরবর্তী স্টেশন কালীঘাট’। বহু ভিন রাজ্যের যাত্রী এর ফলে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। চীনা রেকটির অধিকাংশ স্পিকার খারাপ কিংবা ভলিউম অত্যন্ত কম। আবার টানেলের ভিতর চরম শব্দে বহুক্ষেত্রেই কোনও ঘোষণা শোনাই যায় না।