বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল সুভদ্রার। ঝাপানডাঙা স্টেশনে সে বসে আছে। এখানে এসেছিল এক গুরুবোনের বাড়ি। ফিরে যাচ্ছে উত্তরপাড়ায়, নিজের ঘরে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। এখনও কয়েকটা কাক ডাকছে। কেমন ক্লান্ত স্বর ওদের। স্টেশনের শেডের ওপর বসে কাকগুলো। একটু পরেই ওরা ঘরে ফিরে যাবে। সেও ফিরে যাবে তার আপন ঘরে। নিরালা নিঝুম একটা ঘর। মাথার ওপর ছাদ থাকলেও সেই ঘরের কোনও আকর্ষণ নেই তার কাছে। একমাত্র ছেলেটা আজ ছ’মাস হল নিখোঁজ। কোথায় যে আছে, কী করছে কে জানে! পুলিস ডেকে নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েকটা বডি দেখিয়েছে, কিন্তু কোনওটাই নবারুণের নয়। সুভদ্রা জানে, নবারুণ মরতে পারে না। রোজ সে মনে মনে বলে, ‘ফিরে আয় নবারুণ। একবার মায়ের কথা ভাববি না? তোর বাবা চলে গেছে, তুইও যদি হারিয়ে যাস, আমি কী নিয়ে থাকব বল!’
দূরে ট্রেন আসছে। ঘোষণাও হয়ে গিয়েছে। কাঁধের ব্যাগটা ঠিক করে উঠে দাঁড়াল সুভদ্রা। তখনই তার বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল। চকিতে সে যাত্রীদের মধ্যে দেখল নবারুণের মুখ। ওই তো, ওই তো নবারুণ দাঁড়িয়ে আছে। সেই নীল টি শার্টটা দেখা যাচ্ছে। এখানে ও কী করছে! নবারুণও কি ট্রেনে উঠবে? কয়েকজন উঠল। কয়েকজন নামল। স্টেশন অনেকটাই এখন ফাঁকা। নবারুণের দিকে তাকিয়ে দেখতে গিয়ে ট্রেন বেরিয়ে গেল। তা যাক। স্টেশনের নিভু নরম আলোয় সুভদ্রা এখনও তাকিয়ে নবারুণের দিকে। ওই তো স্টেশনের ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে। চোখে সেই চশমাটা। ছোটবেলা থেকেই আকাশ দেখতে ভালোবাসত নবারুণ। বাবার কোলে চেপে রাতে আকাশে তারা দেখত। চোখে জল এসে গেল সুভদ্রার। আস্তে আস্তে কাছে গিয়ে ডাকল, ‘নবারুণ।’
নবারুণ ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল। বলল, ‘মা তুমি? এখানে?’
সেই প্রশ্নে কোনও অবাক বিস্ময় নেই। কোনও কৌতূহল নেই। যেন যন্ত্রের মতো একটা নিয়মরক্ষার প্রশ্ন! তাছাড়া সুভদ্রার মনে হল, নবারুণের গলাটা কেমন বদলে গেছে। কেমন একটা ঘড়ঘড়ে গলা। কোটরগত চোখের দৃষ্টিটাও কিছুটা ঘোলাটে, অন্ধকার এক গহ্বরের মতো। চোখের মণিটা পাথরের মতো স্থির। এই ছ’মাসে ছেলেটা কেমন বদলে গেছে!
সুভদ্রা উত্তর দেয়, ‘হ্যাঁ একটা কাজে এসেছিলাম। তুই এখানে কেন?’
‘আমি তো এখানেই থাকি মা।’
‘কেন বাবা, কার ওপর অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে এলি? বাড়ি ফিরে চল বাবা।’
‘না মা, আমার পক্ষে আর ফেরা সম্ভব নয়। আমার অনেক কাজ বাকি। তুমি বরং আমার সঙ্গে চল। এখন থেকে আমার সঙ্গে থাকবে।’
‘কোথায় বাবা? বিয়ে করেছিস নাকি?’
নবারুণ বলল, ‘না মা একাই থাকি। আমি ওই অন্ধকার আকাশটার মতোই একা। চল মা।’
চোখে জল আসে সুভদ্রার। ভাবে, দেখাই যাক ছেলে কোথায়, কীভাবে থাকে। তারপর ওকে জোরাজুরি করে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। সে পা বাড়ায় ছেলের পিছু পিছু।
‘হেঁটে যেতে পারবে তো মা? এই একটু দূরে।’
অন্ধকার নেমে এসেছে। স্টেশন থেকে বেরিয়ে কিছুটা গিয়েই রাস্তা ছেড়ে একটা শুঁড়িপথ ধরল নবারুণ। এখানে পথ আরও অন্ধকার। দু’পাশে অসংখ্য গাছ, ছোট ছোট লতাগুল্ম, আগাছা। ঝুঁকে পড়ে সেগুলো নেমে এসেছে মাটির কাছাকাছি। মুখে, চোখে লাগছে ডালপালা।
সুভদ্রা বলল, ‘বড় অন্ধকার, পথ দেখা যাচ্ছে না। দাঁড়া টর্চটা জ্বালাই।’
‘দরকার নেই মা আমার সঙ্গে চল, আমি তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি।’
তবু সুভদ্রা কাঁধের ব্যাগ হাতড়ে টর্চটা বের করে আনে।
বোতাম টিপতেই টর্চের আলো জ্বলে ওঠে। কিন্তু মুহূর্তেই সেটা নিভে যায়। আবার চেষ্টা করে সুভদ্রা। টর্চের আলো আর জ্বলল না।
অন্ধকারের এক মস্ত গহ্বরের মধ্যে সে হাঁটতে থাকে। সামনে ছায়া ছায়া নবারুণ। আর এক পা বাড়াতেই পায়ের ওপর দিয়ে সড়সড় করে কী যেন চলে গেল। অন্ধকারে দেখা না গেলেও সুভদ্রা বুঝল, একটা সাপ তার পায়ের ওপর দিয়ে চলে গেল। ‘ও মাগো’ বলে চমকে উঠল সে। শিরশির করে উঠল গা’টা। প্রতিটি রোমকূপ যেন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে।
ভিতর থেকে কে যেন বলছে, ‘আর এগস না সুভদ্রা, বিপদে পড়বি!’
মুহূর্তে থমকে গেলেও আবার মুচকি হেসে পা বাড়ায় সুভদ্রা। অন্ধকারেই হাসতে হাসতে সে ভাবে, ছেলের সঙ্গে যাচ্ছি, আবার ভয় কীসের?
আর এক পা বাড়াতেই সে আঁতকে উঠল। পিছন থেকে কে যেন তার শাড়ির নীচের অংশটা টেনে ধরেছে। আবার বুকটা কেঁপে উঠল। শরীরের সব রক্ত যেন চলকে উঠল। পরক্ষণেই সুভদ্রা বুঝতে পারল, কোনও কাঁটাতারে তার কাপড়টা আটকে গিয়েছে।
নবারুণ বলে, ‘ভয় নেই মা, আমার সঙ্গে যতক্ষণ আছ, ততক্ষণ কোনও ভয় নেই। তুমি বরং আমার হাত ধর।’
ছেলের কথায় একটু ভরসা পেল সুভদ্রা। সে ছেলের হাতটা ধরল। কিন্তু পরক্ষণেই চমকে উঠল সে। কী পাথরের মতো ঠান্ডা হাত! যেমন শীর্ণ, তেমন শীতল! অস্বাভাবিক মনে হলেও সুভদ্রা ছেলের হাতটা ধরেই থাকল। কতদিন পর ছেলেটার দেখা পেয়েছে। কাল সকালে যেভাবে হোক ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
সুভদ্রা বলল, ‘কোথায় যাচ্ছি বল তো? তুই থাকিস কোথায়? ঘন অন্ধকার জায়গা, এখানে থাকিস নাকি?’
‘আর একটু যেতে হবে মা।’ নবারুণের গলাটা শুনে গায়ে কেমন কাঁটা দিচ্ছে তার। দূর গ্রহের থেকে কাঁপতে কাঁপতে আসা এক ঘড়ঘড়ে স্বর। অস্বাভাবিক, ভয় জাগানো।
‘কোন অভিমানে তুই এখানে পড়ে আছিস বাবা। বাড়ি ফিরে চল।’
কিছুক্ষণ নবারুণ কোনও উত্তর দিল না। অন্ধকারে মা ও ছেলে পথ ধরে হাঁটছে। গাছের ফাঁক দিয়ে নবমীর জ্যোৎস্নার একটা আভা আসছে মাত্র। তাতে ভালো করে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। পায়ের নীচে শুকনো পাতার খসখস শব্দের এক অলৌকিক পরিবেশ। জোনাকিরাও যেন স্বতঃস্ফূর্ত নয়।
একটু পরে নবারুণ বলল, ‘আমাকে তো তুমি চিনতে পারনি মা।’ যেন অনেক দূরে থেকে ভেসে আসা কান্না জড়ানো এক অভিমানী স্বর।
চমকে উঠে সুভদ্রা বলে, ‘চিনতে পারিনি? কী বলছিস তুই?’
দেখতে দেখতে ওরা একটা পুকুরের ধারে এসে দাঁড়াল। নবারুণ বলল, ‘মা এখানে একটু বসি। তুমিও বোসো। তোমার কোলে একটু মাথা দিয়ে শুই। কতদিন তোমার কোলে মাথা রেখে শুইনি। কতদিন তোমার হাতের মাখা ভাত খাইনি।’
অন্ধকারের মধ্যে ছেলের গলার স্বর শুনে সুভদ্রার মনে হল, নবারুণের চোখটা হয়তো ছলছল করছে। সুভদ্রা বসল পুকুর পাড়ে। কোলের উপর মাথা দিয়ে শুল নবারুণ। ছ’মাস ধরে সুভদ্রা ছেলের জন্য অপেক্ষা করেছে। আজ এই মুহূর্তটুকুর কথা ভেবে সে আবেগ বিহ্বল হয়ে উঠল। চোখ দিয়ে তার জল গড়িয়ে পড়ল।
নবারুণ মায়ের গালে হাত দিয়ে জলের স্পর্শ পেয়ে বলল, ‘মা তুমি কাঁদছ?’ চোখের জল মুছিয়ে দিল সে।
নবারুণ বলল, ‘আমি তোমার কুসন্তান মা। মানুষ হতে পারিনি। বদসঙ্গে পড়ে বখে গিয়েছিলাম। তোমরা অনেক চেষ্টা করেছিলে, আমাকে মানুষ করার। আমি ভালো পথে ফিরতে পারিনি মা।’
সুভদ্রা ছেলেকে থামিয়ে দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলল, ‘তুই কি কারও ভয়ে এখানে লুকিয়ে আছিস বাবা! ভয় নেই আমার সঙ্গে বাড়ি ফিরে চল, দেখবি সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।’
নবারুণ মায়ের হাতটা চেপে ধরে বলল, ‘না মা তা আর সম্ভব নয়।’
‘কেন সম্ভব নয় বাবা? সেরকম হলে আমরা উত্তরপাড়ার ফ্ল্যাটটা বিক্রি করে দিয়ে অন্য কোথাও গিয়ে থাকব। তুই নতুন করে জীবন শুরু করবি। একটা বিয়ে করবি।’
চুপ করে থাকে নবারুণ। মাথার ওপর ভাঙা চাঁদের প্রতিবিম্ব সামনের পুকুরের জলে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। হাওয়ার ওঠানামায় সেটা টলছে। কাছে দূরে কোথাও আলোর চিহ্নমাত্র নেই। দূরের জঙ্গলের মধ্যেও ঝুপসি আঁধার। মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল দু’তিনটে বাদুড়। চামচিকের চামসি গন্ধ চারিদিকে।
নবারুণ বলল, ‘মা তুমি আমাকে চিনতে পারনি!’
সুভদ্রা বলল, ‘তখনও তুই একথাটা বললি, এখনও বলছিস। আমি তোর কথা ভালো করে বুঝতে পারছি না বাবা।’
নবারুণ বলল, ‘দাঁড়াও, তোমাকে একটা জিনিস দেখাই।’
গায়ের নীল টি শার্টটা পেট পর্যন্ত তুলে নবারুণ বলল, ‘মা, এখানে তোমার হাতটা রাখ।’
অন্ধকারের মধ্যে ছেলের পেটের ওপর হাত রাখতেই চমকে উঠল সুভদ্রা। হাতটা যেন এক গভীর গর্তের মধ্যে ঢুকে গেল। হাতের মধ্যে জড়িয়ে যাচ্ছে সাপের মতো অসংখ্য কী যেন সব। কিলবিল করছে পেটের ভিতরকার নাড়িভুঁড়ি। চটচটে কাদার মতো হাতে লেগে গেছে তরল কোনও পদার্থ। হাতটা বের করে আনার চেষ্টা করে সুভদ্রা! পারে না। তার হাত ধরে কেউ যেন টানছে।
চমকে উঠে ‘আঁক আঁক’ করে ওঠে সুভদ্রা। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে হাতটায় টান মারে। হাতটা বেরিয়ে আসতেই আধো অন্ধকারে দেখল চাপ চাপ রক্ত। টপটপ করে পড়ছে মাটির ওপর। আরও আঙুলের মধ্যে জড়িয়ে থাকা অজানা পদার্থগুলো জীবন্ত হয়ে লকলক করছে। ভয়াবহ এক আতঙ্কে হামাগুড়ি দিয়ে ছিটকে গেল সুভদ্রা। অজানা ভয়ে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠল। কাঁপা কাঁপা গলায় সে বলল, ‘কে তুই?’
নবারুণ বলল, ‘আমি নবারুণ মা। তুমি এখনও আমাকে চিনতে পারছ না? তুমি জানো না মা, ওরা আমাকে কুপিয়ে কুপিয়ে মেরেছে। আমার পেটে ভোজালি চালিয়ে ফালা ফালা করে দিয়েছে। আমার মুখটাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে এমন করে দিয়েছিল যে, তুমিও আমার দেহটা সেদিন শনাক্তও করতে পারনি।’
বিহ্বল সুভদ্রা। এই মুহূর্তে তার অস্তিত্ব বলে যেন কিছু নেই। একটা শূন্যতার মধ্যে, একটা অনুভূতিহীন সময়ের মধ্যে সে নিশ্চল হয়ে গিয়েছে। সে কী করবে বুঝতে পারছে না। এই মুহূর্তে ছেলের অশরীরী ছায়ার সামনে বসে সে যেন আর তার মধ্যে নেই। পা, কোমর সব ভারী হয়ে গিয়েছে। চলৎশক্তি হারিয়ে ফেলেছে সে। শুধু গোঙানির মতো একটা শব্দ করে কাঁদতে থাকে। বাৎসল্যের অনুভূতির সঙ্গে এখন মিশে যায় এক আধিভৌতিক আতঙ্ক।
নবারুণ বলে চলে, ‘পাপাই, কান্তি, তুতুলরা আমাকে মেরেছে মা। ওদের সঙ্গে হিস্সা নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছিল। সিন্ডিকেটের টাকা ওরা নিজেরাই ভাগ করে খেতে চেয়েছিল। আমি তার প্রতিবাদ করায় ওরা আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রচুর মদ খাইয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলে। তারপর এই ঝোপের মধ্য দিয়ে টেনে এনে পুকুরে ফেলে দিয়ে যায়। ওই দেখ মা, পুকুরের ওই কোণে।’
যন্ত্রের মতো সেদিকে তাকিয়ে দেখে সুভদ্রা। ঝাপসা আলোয় দেখে, কী যেন একটা ভাসছে।
নবারুণ বলল, ‘ওটা আমারই লাশ মা।’
অসহ্য যন্ত্রণায় তার বুক ফেটে যাচ্ছে। সুভদ্রা হাত বাড়ায় ছেলের দিকে। ভাবে, কত যন্ত্রণা সহ্য করে ছেলেটা মারা গিয়েছে। সে তার কিছুই জানতে পারেনি। এই রাতে আবছা চাঁদের আলোয় এক বিহ্বল মুহূর্ত তৈরি হয়। আতঙ্কের ভিতরে মোচড় দিয়ে ওঠে যন্ত্রণা। নবারুণ হামাগুড়ি দিয়ে মায়ের কাছে এগিয়ে আসে। সুভদ্রা নবারুণের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে, ‘তুই কত কষ্ট পেয়েছিলি বাবা!’
নবারুণ বলে, ‘আর কোনও কষ্ট নেই মা। তোমাকে দেখার পর থেকে আমি খুব আনন্দে আছি। আমার খুব ইচ্ছে, এবার আমি তোমার সঙ্গেই থাকব।’
সুভদ্রা বলল, ‘আমি তোর কাছেই থাকতে চাই রে বাবা। তোকে ছেড়ে আর কোত্থাও যাব না।’
নবারুণ বলে, ‘তাই থেকো মা। আর আমার কোনও কষ্ট থাকবে না।’
এক অদ্ভুত অনুভূতি যেন ঘিরে ধরে সুভদ্রাকে। বুকের ভিতর অসম্ভব এক আনন্দের অনুরণন, এক অলৌকিক শূন্যতার ভিতরে সে যেন উড়ে যায়। বোধহীন এক অস্তিত্ব তাকে গ্রাস করে। অজ্ঞান হয়ে ঘাসের ওপর পড়ে যেতে যেতে সুভদ্রা দেখল তীক্ষ্ণ কলরোলে আকাশটা ভরে গেল। ঝাঁক ঝাঁক বাদুড় উড়ে গেল এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। শিকারের সন্ধানে ডেকে উঠল পেঁচার দল। দূরে অসংখ্য শেয়ালের দল অস্থির হয়ে উঠল রক্তপানের ব্যাকুলতায়। সমস্ত ঘাসপোকা বেরিয়ে এল মাটি ফুঁড়ে। এক আদিম, আধিভৌতিক রাতের ভিতরে চমকে উঠে গড়িয়ে গেল বিবর্ণ ভাঙা চাঁদ।
পরদিন সকালে দেখা গেল, সেই পুকুরের ধারে ভিড় জমেছে গ্রামবাসীদের। স্থানীয় থানার পুলিস এসেছে। এসেছে পুলিসের কুকুরও। এসেছে মিডিয়ার রিপোর্টাররা। কেউ কেউ সেখান থেকে লাইভ টেলিকাস্ট করতে শুরু করেছে। পুকুরের জলে সুভদ্রার ভেসে ওঠা লাশটা পুলিস তুলে নিয়ে গেল পোস্টমর্টেমের জন্য।