নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সরকারি চাকুরে হয়েও নিজের নামে কোম্পানি খুলে প্রোমোটিং ব্যবসা চালাচ্ছিলেন। এই কারণে চাকরি গেল নবান্নের এক কর্মীর। তাপস যশ নামে কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক দপ্তরের ওই আপার ডিভিশন (ইউডি) অ্যাসিস্ট্যান্টকে চাকরি থেকে পাকাপাকি বরখাস্ত করার নির্দেশ জারি করেছে দপ্তর। এই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই কর্মীর নিয়োগকারী সংস্থা রাজ্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, ওই কর্মী আর কোনও সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবেন না। সরকারি কর্মীদের সার্ভিস রুল লঙ্ঘন করে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। সাম্প্রতিক সময়ে এই কারণে কারও চাকরি গিয়েছে, এমন ঘটনার কথা মনে করতে পারছেন না প্রবীণ সরকারি কর্মচারীরা। 
স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দপ্তরে কর্মরত থাকার সময় থেকে তাপসবাবুর বিরুদ্ধে (২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে) বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। ওই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ফ্ল্যাট বুকিংয়ের টাকা ফিরিয়ে দিতে তিনি যে চেক ইস্যু করেছিলেন, তা ‘ফেরত’ এসেছিল। কারণ, তাঁর অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে জানা যায়, ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য যে নথি তৈরি করা হয়, তাতে সরকারি কর্মী হওয়া সত্ত্বেও ব্যবসায়ী হিসেবে নিজের পরিচয় উল্লেখ করেছেন তাপসবাবু। শুধু তাই নয়, সরকারি কর্মী হওয়া সত্ত্বেও নিজের নামে ট্রেড লাইসেন্স বার করে ‘যশ রিয়েলটরস’ নামে একটি কোম্পানি খোলেন। এর জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। জমি কিনে সেখানে ২০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করে সরকারি অনুমতি ছাড়াই সেগুলি বিক্রি করেন। 
তদন্ত প্রক্রিয়া চলার সময় ওই সরকারি কর্মী বদলি হন কর্মিবর্গ দপ্তরে। তাঁকে দ্বিতীয়বার শো-কজ করা হয়। তারপর তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ব্যবস্থা নিয়েছে দপ্তর। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক জানিয়েছেন, অনিয়ম-দুর্নীতিতে কোনও সরকারি কর্মী যুক্ত থাকলে তিনি যে ছাড় পাবেন না, এই ঘটনা তা দেখিয়ে দিল।