বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের সহকারি কৃষি অধিকর্তা সজল পতি জানিয়েছেন, রাসায়নিক সার ও বিষমুক্ত সব্জি উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি ও উদ্যানপালন দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ঘরে ঘরে কিচেন গার্ডেন’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আতমা প্রকল্পের এই উদ্যোগে সামান্য খরচে উন্নত মানের বীজের চারা লাগিয়ে সব্জি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। সিড বেডে চারা তৈরি করে এক টাকা, দেড় টাকা দামে বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় তা বিক্রি করছে ফার্মার ইন্টারেস্টেড গ্রুপ। এই বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত বা ব্লক অফিসের সামনে কিংবা কৃষিমেলায় মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ নামমাত্র দামে ভালো চারা সংগ্রহ করতে পারছেন। আপাতত লঙ্কা, বেগুন, লাউ, কুমড়ো সহ ১২-১৫ রকমের সব্জির প্রায় ২ লক্ষ চারা উৎপাদন করা হয়েছে। চাহিদা বুঝে পরবর্তীতে আরও চারা তৈরি করা হবে।
কৃষি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সুন্দরবন অঞ্চলে ব্যাপক অর্থে সব্জি চাষ না হলেও অনেকেই বাড়ির আশপাশে নানা সব্জি লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু, তার জন্য তাঁরা এতদিন ভালো বীজ পেতেন না। স্থানীয়ভাবে যে বীজ কিনতেন, তার গুণমান তেমন ভালো না হওয়ায় আশানুরূপ ফলন মিলত না। সেই অভাব পূরণ করতেই এবার এগিয়ে এসেছে কৃষি দপ্তর। উন্নত মানের বীজের চারা তৈরি করে সাধারণ মানুষের হাতে তা তুলে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে কীভাবে জৈব প্রযুক্তিতে সব্জি চাষ করা যায়, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, ফসলের রোগপোকার আক্রমণ প্রতিরোধ প্রসঙ্গে হুগলির শ্রীরামপুর মহকুমার সহকারি কৃষি অধিকর্তা অরূপ পাঠক বলেছেন, জাবপোকা, কাটুইপোকার সঙ্গে আলুর জমিতে এইসময় ইঁদুরেরও মারাত্মক আক্রমণ হয়। ফলে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বীজের জন্য যাঁরা আলু চাষ করেছেন, ৬৫-৭০দিন বয়স হলে আলু গাছের মাটির উপরের অংশ কেটে দিতে হবে তাঁদের। কাটার পর অবশ্যই ছত্রাকনাশক বা ক্লোরোথ্যালোনিল স্প্রে করতে হবে। অন্যদিকে সর্ষে এবং ডালশস্য চাষ করেছেন যেসব কৃষক, তাঁরা যদি এখনও জমিতে জিঙ্ক, বোরন এবং অনুখাদ্য স্প্রে না করে থাকেন, তা হলে দ্রুত ওইকাজ সেরে ফেলতে হবে। যাঁরা জলদি আলু চাষ করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আর দিন ২০ পর থেকে আলু তোলা শুরু হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আলু তোলার ১০-১২দিন আগে থেকে সেচ দেওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। তা ছাড়া আলুতে এইসময় কোনওভাবেই ভারী সেচ দেওয়া চলবে না। তাতে ছত্রাকঘটিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। সবসময় হাল্কা সেচ দিতে হবে। আলুর জমিতে একটিই ছত্রাকনাশক ব্যবহার না করে তা পাল্টে পাল্টে প্রয়োগ করতে হবে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ফসলের জমিতে কাটুই পোকার আক্রমণ রুখতে আগেই কীটনাশক স্প্রে না করে একটি বিকল্প উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। সেটি হল, এক একর জমির জন্য ৫ কেজি চালের কুড়ো, ৫০০গ্রাম চিটে গুড়, ৫০০গ্রাম ক্লোরোপাইরিফস মিশিয়ে ঠিক যেভাবে বড়ি দেওয়া হয়, সেভাবে জমির বিভিন্ন অংশে সন্ধ্যার দিকে দিয়ে রাখতে হবে। একইভাবে জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ হলে প্রথমেই কীটনাশক ব্যবহার না করে একটি উপায় অবলম্বন করলে সুফল পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে যদি ১০০গ্রাম মিশ্রণ বানানো হয়, তা হলে ৯৩ গ্রাম ভাঙা চাল, ২ গ্রাম ভোজ্য তেল, ৩ গ্রাম চিটে গুড় নিয়ে মাখতে হবে। এর সঙ্গে দুই গ্রাম ব্রোমোডায়ালোন যোগ করতে হবে। এতে ইঁদুরের উপদ্রব কমবে। আবার ফসলেরও তেমন কোনও ক্ষতি হবে না।
সর্ষেতে এইসময় জাবপোকা ও শিকড় ফোলা রোগ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি বলে জানিয়েছেন পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার সহকারি কৃষি অধিকর্তা পরিমল বর্মন। তিনি বলেন, জাবপোকা দমনে বিঘায় ৩-৪টি হলুদ আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করতে হবে। নিমতেল ১০,০০০পিপিএম প্রতি লিটার জলে ৩ মিলিলিটার মিশিয়ে ১০দিন অন্তর স্প্রে করলেও সুফল পাওয়া যায়। রাসায়নিক কীটনাশক হিসেবে ইমিডাক্লোরোপিড ১৭.৫শতাংশ এসএল ০.৫ মিলিলিটার প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। শিকড় ফোলা রোগ নিয়ন্ত্রণে সর্ষে বোনার ১৫দিন আগে বিঘা প্রতি ১০০-১৫০ কেজি চুন বা ডলোমাইট এবং ১-২টন জৈবসার প্রয়োগ করতে হবে জমিতে।