প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
‘আমরা এখন সব কিছুতে কেমন যেন সিরিয়াস হয়ে গিয়েছি’, গোমড়া মুখে বলছিলেন অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু। সুদীপ জানার প্রথম ছবি ‘অদ্বিতীয়া’র সাজঘরে সেদিন সাজো সাজো রব। বিশ্বনাথ বললেন, ‘জীবনে তো রসবোধের অভাব নেই। উপকরণেরও ঘাটতি নেই। আসলে কোথায় যেন কানেক্টিভিটির খামতি রয়েছে যাচ্ছে।’
তাই বলে কি বাংলায় কমেডি ছবি তৈরি হচ্ছে না? বিলক্ষণ হচ্ছে। ‘এক নম্বর মেস বাড়ি’, ‘হাঙ্গামা ডট কম’, ‘বুমেরাং’— গড়গড় করে কয়েকটা বাংলা কমেডি ছবির নাম বলে চলেন বিশ্বনাথ। এই ধারায় অভিজিৎ সেনের ‘প্রধান’কেও রাখতে চান অভিনেতা। বলেন, ‘অনির্বাণের (চক্রবর্তী) চরিত্রটাকে লঘু রসাত্মক ভিলেন বলা যেতে পারে।’ মানুষের বিনোদন বিলাসের উদাহরণ হিসেবে হিন্দি ছবি ‘স্ত্রী ২’-এর সাফল্যও বিশ্বনাথকে উৎসাহিত করছে। তবুও বাংলায় নির্ভেজাল হাসির ছবির হাহাকার কেন? বিশ্বনাথের বিশ্লেষণে প্রথমেই যে দুর্বলতার দিকটি উঠে আসে সেটি হল চিত্রনাট্য। ‘তেমন চিত্রনাট্য না হলে কমেডিটাকে ভাঁড়ামো বলে মনে হয়। মানুষ এখন অনেক বেশি বিবেচক। অত সহজে ঠকানো যায় না।’ পরিচালকদের রসবোধের দিকটাও জরুরি বলে মনে করেন অভিনেতা। তাঁর কথায়, ‘ডিরেক্টরকেও তো ততটাই রগুড়ে হতে হবে। বেশ করে জমিয়ে, রসিয়ে গল্পটা না বলতে পারলে অভিনেতারাও তাঁদের ভেতরের উল্লাসটাকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলবেন কী করে?’
‘অদ্বিতীয়া’য় বিশ্বনাথের চরিত্রের নাম কাঞ্চন। বলতে গিয়ে হো হো করে হেসে ওঠেন অভিনেতা। ‘কত দিন হয়ে গেল দেখা হয় না! কাঞ্চন, আমি, রুদ্রনীল ঘোষ, খরাজ মুখোপাধ্যায়— একসঙ্গে আর আড্ডা হয় না। কতদিন হয়েছে খরাজদার বাড়িতে থেকে গিয়েছি। সেই রাতভর আড্ডার বিকল্প হবে না। এখন আমরা নিজেরা নানা বিষয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছি, আর দেখাই হয় না সবার সঙ্গে’, বিষণ্ণ বিশ্বনাথের গলায় অতৃপ্তির আক্ষেপ। তবে আশা হারাতে রাজি নন বিশ্বনাথ। বললেন, ‘একটু সময় লাগবে হয়তো। তবে হবে। আর একটা ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ বা আরেকটা ‘বসন্ত বিলাপ’ আজকের সময়ের মতো করে ঠিক তৈরি হবে।’ তার জন্য অভিনেতা বিশ্বনাথের দায়িত্ব কতটা? ‘অনেকটা। সঠিক পরিচালককে সাহায্য করা, সেই চিত্রনাট্যকে সময় দেওয়া অথবা প্রোডাকশন হাউজগুলোকে রাজি করানো আমার দায়িত্ব। সর্বোপরি নিজের সেরা পারফরম্যান্স দেওয়া। সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে আসুন। বিশ্বনাথ কখনও দায়িত্ব এড়িয়ে যায়নি।’
গত ২৫ বছর ধরে অভিনয় করতে গিয়ে পরিচালনা করার কথা ভেবেছেন কখনও? বিশ্বনাথের উত্তর, ‘অবশ্যই পরিচালনা করার ইচ্ছে আছে। তবে এখনও সময় আসেনি। আমার কাছে প্রফুল্ল রায়ের একটা গল্প আছে। সেই গল্পে একজন দারোগার চরিত্র আছে, যেটায় খরাজদাকে ভেবে রেখেছি, প্রথম সিনেই যে প্রত্যেক ক্রিমিনালের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে বলছে, ‘আমার আর দু’মাস চাকরি বাকি, এরমধ্যে এমন কিছু করিস না যাতে আমার এত দিনের সাধনা কালিমালিপ্ত হয়।’ আমি এমন ধরনেরই ছবি করব। মানুষ আপনিই হাসবে। জোর করে হাসাতে হবে না।’