উচ্চতর বিদ্যায় শুভ। যে কোনও কর্মে উপার্জন বাড়বে। ব্যবসার গতি ও আয় বাড়বে। ... বিশদ
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের শান্তিপুর। বর্ষায় নদী-নালা-খাল-বিল জলে ভরে ওঠে। পড়ার ফাঁকে ছুটির দিনে ছিপ নিয়ে চলে মাছ ধরা। আর বর্ষার জলে টইটম্বুর পুকুরে বন্ধুদের সঙ্গে চলে দাপাদাপি। শালুক আর শাপলায় ভরা পুকুরের রূপ দেখলে মন ভরে যায়। তবে, বর্ষাকালে অবসর কাটে গল্পের বইয়ের পাতায়। আমার প্রিয় চরিত্র ফেলুদা। তাই প্রদোষ মিত্তিরের গোয়েন্দাগিরি বারবার পড়েও যেন মন ভরে না। তার সঙ্গে তো অবশ্যই রয়েছে তোপসে আর জটায়ু। আর বর্ষাকালের রাতে ভূতের গল্প পড়ার রোমাঞ্চই আলাদা।
—মহার্ণব দে, দশম শ্রেণি
ভালোবাসার বাড়ি
আমার ভালোবাসার বাড়ির নাম শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল। অঝোর ধারার বৃষ্টিতে ক্লাসরুমেই সবচেয়ে আনন্দ হয়। তিন বিঘা জমির উপর আমাদের স্কুল। রয়েছে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। স্কুলে অজস্র বন্ধু। ক্লাসের ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প, জানলা দিয়ে বৃষ্টির জলে হাত ভেজানো— এই মজার বিকল্প নেই। বৃষ্টিতে ভিজে বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে ফুটবল খেলতে দারুণ লাগে। তারপর কাদা মেখে বাড়ি ফেরার পর কপালে জোটে মায়ের বকুনি।
—সোহম দাস, নবম শ্রেণি
হঠাৎ রেনি ডে-র মজা
হঠাৎ রেনি ডে পেলে কার না মজা লাগে! প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে জুতো হাতে করে স্কুলে পৌঁছে যখন স্যাররা রেনি ডে ঘোষণা করেন, তখন ভীষণ মজা হয়। যদিও এবছর এখনও তেমন বৃষ্টির দেখা মেলেনি। বর্ষার অবিরাম বারিধারা মন উদাস করে দেয়। চোখের সঙ্গে মনও জানলা পেরিয়ে বাইরে চলে যায়। স্নান করে গাছপালাগুলো কেমন সবুজ হয়ে ওঠে। বর্ষার জলে ধুয়ে যায় সমস্ত মলিনতা। আর এই সময়ে বাড়ির বাগানে ফোটা নানান ফুলের গন্ধ জানলা দিয়ে ভেসে আসে। আর সেই সঙ্গে বাজতে থাকে মায়ের প্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত।
—সৌরতারা মৈত্র
বর্ষার উৎসব মানেই রথ
শান্তিপুরে সারা বছরই লেগে থাকে কোনও না কোনও উৎসব। আর আমার কাছে বর্ষার শ্রেষ্ঠ উৎসব রথযাত্রা। গত মাসেই ধুমধাম করে রথ ও উল্টোরথ পালন করেছি আমরা। রথ টানার মজা আমার কাছে এক্কেবারে অন্যরকম। তাই এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। বন্ধুরা মিলে রথ সাজিয়ে টানি এবং রাস্তায় সকলকে বাতাসা বিলি করি। তাছাড়া রথের দিন এখানকার বহু সর্বজনীন পুজো কমিটি খুঁটি পুজো করে। খুঁটি পুজো হয় আমাদের পাড়াতেও। খুঁটি পুজো হলেই কেমন যেন পুজোর আমেজ চলে আসে।
প্রাঞ্জল দাস, অষ্টম শ্রেণি
অঝোর বৃষ্টিতে মামাবাড়ি
বর্ষার কথা শুনলেই মনটা ছোটবেলায় ফিরে যায়। একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। ভরা বর্ষায় সেবার যাচ্ছি মামাবাড়ি। গ্রাম্যপথ। পথঘাট কাদায় ভর্তি।
এত কাদা যে, হাঁটু পর্যন্ত বসে যাচ্ছে। বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছি, হঠাৎ কাদায় খেলাম জোর আছাড়। জামাকাপড় কাদা মাখা। মুখেও কাদা। মামাবাড়িতে ঢোকার পর দিদিমা প্রথমে চিনতে পারেনি। আমার অবস্থা দেখে মামা-মামিরা খুব হেসেছিল।
ওই ঘটনাটা ছাড়া কিন্তু মামাবাড়িতে দারুণ কেটেছিল। ছিপ দিয়ে পুকুরে মাছ ধরা, গাছে উঠে পেয়ারা পাড়া। এখনও বর্ষাকালে একবার অন্তত মামাবাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করি।
—পীযূষ সর্দার, একাদশ শ্রেণি
খিচুড়ি খাওয়ার ঋতু
এখন তো সারা বছরই গরম। শীতকালটাও কমতে কমতে এক-দু’মাসে ঠেকেছে। তাই সুকুমার রায়ের ‘অবাক জলপান’ নাটকের মতো জলের মানে বৃষ্টির আশায় বসে থাকি। মনে হয় কবে বর্ষা আসবে। কারণ বর্ষাই আমার প্রিয় ঋতু। তার অবশ্য একটা অন্য কারণ আছে। আমি প্রচণ্ড খিচুড়ি খেতে ভালোবাসি। হাঁসফাঁস গরমে তো আর খিচুড়ি খেতে ভালো লাগে না। বর্ষাকালে জমে যায় মায়ের হাতের তৈরি খিচুড়ি ও ডিম ভাজা। শুধু ডিম ভাজা নয়, এই সময় মাঝেমধ্যেই খিচুড়ির সঙ্গে জুটে যায় মাছের রাজা ইলিশ। খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশমাছ ভাজার স্বাদ যেন অমৃত।
—নিলয় ঘোষ, অষ্টম শ্রেণি