যে যন্ত্রের সাহায্যে অনেক দূরের বস্তুকে স্পষ্ট দেখা যায়, তাকে টেলিস্কোপ বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র বলে। এটি দূরবর্তী বস্তু থেকে নির্গত বিকিরণ সংগ্রহ, পরিমাপ ও বিশ্লেষণের কাজে ব্যবহৃত হয়। টেলিস্কোপ সাধারণত লেন্স ও দর্পণ অর্থাৎ আয়নার সাহায্যে তৈরি করা হয়।
ছোট্ট বন্ধুরা, তোমরা সবাই জীবনবিজ্ঞানে প্রাণী ও উদ্ভিদের পার্থক্য পড়েছে। সেখানে পরিষ্কার লেখা রয়েছে, উদ্ভিদ স্বেচ্ছায় স্থান পরিবর্তন করতে পারে না। কিন্তু প্রাণী গমনে সক্ষম। অর্থাত্ গাছ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিজের ইচ্ছা মতো ঘুরে ফিরে বেড়াতে পারে না।
হইহই করে বড়দাদুর ঘরে ঢোকে শুভমরা। শুভম, রনি, সৌম্য, সৌরভ, রাহুল, সৃজা আর বরেণ্যা। সবাই জেঠতুতো, খুড়তুতো ভাই-বোন। বরেণ্যাই শুধু বড়পিসির মেয়ে। গরমের ছুটি কাটাতে আরামবাগ থেকে কলকাতায় এসেছে সে মামার বাড়িতে।
সভ্যতার চাকা এগিয়ে চলেছে মানুষের স্পর্শে। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে মানুষের বুদ্ধির জোরে। সবার উপরে তার অনুভূতি। সে ভালোবাসতে জানে, সে কাঁদতে জানে, সে আপন করে নিতে জানে— তার সর্বোত্তম গুণ মনুষ্যত্ব। মানুষ পারে অন্য প্রাণীকে পোষ্য করে তুলতে।
ছোট্ট বন্ধুরা, এতদিনে তোমরা সবাই নিশ্চয়ই ‘লগান’ ছবিটা দেখে ফেলেছ। ক্যাপ্টেন রাসেলের টিমকে ক্রিকেট মাঠে হারিয়ে ভুবন ও তার দলবলের লগান মকুব করার বিজয়কাহিনি। ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থায় গরিব ভারতীয় চাষিদের অজন্মার বছরেও খাজনা দিতে হতো।
গরমের ছুটি শেষ হয়ে গেল। কিন্তু ছুটি মানেই দেদার মজা। সময়, সুযোগ বুঝে দলবেঁধে বেরিয়ে পড়া। দূরে না হলেও কাছেপিঠে কোথাও। আর, শহরের মধ্যে সারাদিন হইচই করার মতো জায়গারও তো অভাব নেই। যেমন, আলিপুরের চিড়িয়াখানা বা ইকো পার্ক।
উচ্চতর বিদ্যায় শুভ। যে কোনও কর্মে উপার্জন বাড়বে। ব্যবসার গতি ও আয় বাড়বে। ... বিশদ
শৌণক সুর: ক্লাস এইটের পল্টুর আজ ভারী মজা। গোটা বাড়ি জুড়ে একপ্রকার নেচেই বেড়াচ্ছে সে। কোথা থেকে একটা পাখি তাদের বাড়ি উড়ে এসেছে। গায়ের রং কচি কলাপাতার মতো সবুজ। পিঠের দিকে, ডানার কাছে কালো রঙের ছিট ছিট দাগ। মনে হচ্ছে কেউ যেন নিব পেন থেকে তার গায়ে কালি ছিটিয়ে দিয়েছে। পল্টুদের বারান্দার গ্রিল গলে সেখানে রাখা টবের এককোণে বসেছিল সেটি। ভালো করে উড়তে পারছে না। বোধহয় ডানায় চোট। তার বাবা দেখতে পেয়ে সেটিকে ধরে এনে ঝুড়ি চাপা দিয়ে রেখেছে। দু’টি বাটিতে দিয়েছে জল ও ভাত। কারণ এই পাখির খাদ্য কী তা তারা জানে না। তারপর থেকেই পল্টুর দাবি যে, সে পাখি পুষবে। ওইরকমই, আরও কয়েকটা চাই। অগত্যা কী আর করা যায়। দু’-চারটি বাড়ি পরেই একজন পাখি পুষত। নানান পাখি রয়েছে তার। তাকেই ডেকে আনা হল। সে এসেই বলল এই পাখির নাম বদরি (বাজরিগর)। এর বাস অস্ট্রেলিয়ায়। নতুন যারা পাখি পুষতে শুরু করেছে তাদের জন্য এই পাখিই আদর্শ। ঝামেলা অনেক কম। অন্যান্য পাখির তুলনায় খাবারের ঝক্কিও তেমন একটা নেই। এর বেশ কিছুদিন পর নবাগত এই পাখির ডানার সমস্যা মিটে যেতেই সপরিবারে গ্যালিফ স্ট্রিটের পথে পা বাড়ল পল্টু। ততক্ষণে সে জেনে নিয়েছে এই পাখি দানা খায়। মাঝারি জাতের কাঁকরি দানা। বেশ খানিকটা এনেও রেখেছে সে। একটি বাটিতে দানা, অন্যটিতে জল দিচ্ছে সে। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে। খাঁচা নেই তো। সেটিও কিনতে হবে। গ্যালিফ স্ট্রিটের হাটে এসেই চোখ ছানাবড়া অষ্টম শ্রেণির এই ছাত্রের। বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জাতের কুকুর, পায়রা, খরগোশ, রঙিন মাছ, গাছ ইত্যাদি। রয়েছে হাঁস-মুরগিও। হাট শুরুর একটু পর থেকে দেখা যাচ্ছে প্রচুর খাঁচা। কিচমিচ শব্দে কান পাতা দায়। তাতে বিভিন্ন রকমের পাখি রয়েছে। বল্টুদের বাড়িতে যেরকম রঙের পাখি রয়েছে, সেরকম তো রয়েছেই, এছাড়া রয়েছে আরও নানা রঙের পাখি। তার আগে বাড়ির আদলে তৈরি একধরনের খাঁচা কেনা হল। রং গোলাপি। এর সুবিধা হল সামনে বাড়ির দরজার আদলে একটি দরজা রয়েছে। তার দুই পাশে ছোট জানলার আদলে আবার দুটি দরজা। নীচ থেকে টেনে ওপরের দিকে সামান্য তুলতে হয়। সেখানে একটি করে সাদা রঙের বাটি বসানো রয়েছে। একটিতে থাকবে পাখির জল, অন্যদিকে থাকবে খাবার। এই খাঁচায় গোটা ছয়েক পাখি ধরবে। সেটা কিনে এবার পাখি যেখানে বিক্রি হচ্ছে সেখানে যাওয়া হল। সেখানে সবুজের পাশাপাশি নীল, সাদা, হলুদ, মাল্টি কালারের বদরি রয়েছে। বেছে বেছে পাঁচটি কেনা হল। সেখানে রয়েছে বহু প্রজাতির পাখি। তার মধ্যে একটি দেখতে কিছুটা কাকাতুয়ার মতো। নাম জিজ্ঞাসা করতে জানা গেল, সেটি ককাটেল। তারও আবার ভাগ রয়েছে। একটি পুরো সাদা ধবধবে। অন্যটির গলার কাছে লাল-হলুদের সামান্য রং রয়েছে। মনে হচ্ছে কেউ যেন ইচ্ছে করে রং মাখিয়ে দিয়েছে। এছাড়া এক ধরনের পাখি দেখা গেল, সেগুলির গড়ন কিছুটা টিয়া পাখির মতো। কিন্তু অতটা বড় নয়। বরং বেশ খানিকটা ছোট। গায়ের রং হলুদ, গলা থেকে মাথা পর্যন্ত আবার পুরো লাল। ভারী সুন্দর দেখতে এই পাখির নাম লাভবার্ড। অন্য একটির গায়ের রং কচি কলাপাতার মতো সবুজ। গলা থেকে মাথা পর্যন্ত রয়েছে লাল-কমলা-হালকা হলুদ রঙের সমাহার। এটিও লাভবার্ড কিন্তু এই জাতের নাম গ্রিন ফিশার। অন্য খাঁচায় একটি পাখির গায়ের রং গাঢ় সবুজ। গলা থেকে মাথা পর্যন্ত ছাই কালার। এটির নাম কোনার। তবে এই পাখিরও অন্য একটি রং রয়েছে। গা হলুদ-কমলা রঙের, মাথার দিকটা কিছুটা লালচে। ডানায় রয়েছে আবার হলুদ-সবুজের ছোঁয়া। ঝলমলে রঙের সমাহার দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। এই পাখিকে বলা হয় সান কোনার। ছোট ছোট খাঁচায় চড়ুই পাখির সাইজের কিছু পাখি রয়েছে। কোনওটি পুরো সাদা রঙের, ঠোঁট টকটকে লাল। কোনওটির পিঠ-ডানা আবার ছাইরঙা, পেটের দিকটা সাদা। মাথা কালো, গলার দিকে সাদা দাগ, এরও লাল ঠোঁট। এই পাখির নাম জাভা। আর একটি পাখিও ওই ধরনেরই দেখতে। তাদের লেজে আবার জেব্রার মতো ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। এগুলির নাম জেব্রা ফিঞ্চ। এছাড়াও হোয়াইট এবং গোল্ডেন ফিঞ্চও রয়েছে। পাখির পাশাপাশি এখানে রয়েছে হরেকরকম খাঁচা। কোনওটির রং লাল, কোনওটি গোলাপি, কোনওটি আবার নীল। পাশাপাশি দেখতে পাওয়া যাবে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি খাঁচা, স্টিলের খাঁচাও। সেগুলিও দেখতে ভারী সুন্দর। তোমরা নতুন যারা পাখি পুষছ তারা প্রথমেই একটা সমস্যায় পড়ো। পাখিকে কী খাওয়াবে এই প্রশ্ন থাকে অনেকের মনে। গ্যালিফ স্ট্রিটে কিন্তু এই সমস্যা নেই। যার কাছ থেকে পাখি কিনছ তাকেই জিজ্ঞাসা করে নাও, ওই পাখি কী খায়। তিনিই তোমাকে সমস্ত তথ্য দিয়ে দেবেন। ব্যস আর কী, ওই হাটেই বিক্রি হয় পাখির দানা। পাখি-খাঁচা-দানা নিয়ে চলে এসো বাড়ি। তাহলে তোমরা কবে যাচ্ছ গ্যালিফের হাটে, পাখির সন্ধানে?
