উচ্চতর বিদ্যায় শুভ। যে কোনও কর্মে উপার্জন বাড়বে। ব্যবসার গতি ও আয় বাড়বে। ... বিশদ
প্রতিটি স্টিকার একটি স্বচ্ছ তেলতেলে কাগজের উপর সাঁটানো থাকত। তার পিছন দিকে থাকত আঠা। সেটিকে যত্ন সহকারে অত্যন্ত সন্তর্পণে তুলে শিশুরা লাগিয়ে ফেলত অ্যালবামের কোনও পাতায়। কেউ আবার ভিনটেজ গাড়ির স্টিকারও জমাত। তাতে কোনও গাড়ির মাথায় পাতলা পর্দা লাগানো। কোনওটির আবার সামনের দিকে রয়েছে ঘোরানোর জন্য হাতল, ডানপাশে লাগানো বিরাট ভোঁপু। ইঞ্জিনের সামনের দিকটা প্রকাণ্ড লম্বা। সেসব দুর্দান্ত গাড়ির ছবি দেখে অনেকেরই মন মজত। এছাড়া দেশি-বিদেশি জাহাজ বা ফাইটার জেটের স্টিকারও কালেকশনে স্থান পেত। কোনও জাহাজের উপর প্লেন রাখা রয়েছে। কোনওটির প্রকাণ্ড ডেক। তাতে উর্দি পরা একাধিক লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে। উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধ জাহাজের পাশাপাশি শিশুরা জমাত পালতোলা জাহাজের স্টিকারও। ফ্যান্টমের দৌলতে যে তখন তাদের জলদস্যুদের সঙ্গে পরিচয় হয়ে গিয়েছে! প্রকাণ্ড কাঠের জাহাজ। তাতে খাড়া মাস্তুল থেকে সাদা বা কালো পর্দার মতো কাপড় একের পর এক নেমে এসেছে। হাওয়া লাগায় ফুলে রয়েছে সেগুলি। এগিয়ে চলেছে দুরন্ত গতিতে। পিছনের দিকে কাপ্তানের ঘর। ডেকের উপরের দিকে রয়েছে কাঠের গোল কারুকার্য করা হুইল। জাহাজের গায়ে রয়েছে সারি সারি কামানের মুখ। সবই স্টিকারে নিপুণভাবে ফুটে উঠত। তালিকায় ছিল বিভিন্ন আদ্যিকালের বন্দুকের স্টিকারও। সামনের দিকের নল এখনকার বন্দুকের মতো সরু নয় বরং বেশ গোল গোল। কোনওটির রং মেহগনি কাঠের মতো, কোনওটি আবার ডার্ক চকোলেট কালারের। গায়ে সোনালি বা রুপোলি রঙের সুন্দর কাজ। সবগুলির আদল ভাস্কো-দ্য-গামা আমলের মতো। আজব দেখতে এই বন্দুকগুলির পাশে আবার লেখা থাকত তার নামও। কোনওটির নাম মার্সিনারি, কোনওটি দ্য লেডি ব্ল্যাক, কোনওটির নাম আবার জেনেরিক বা দ্য নেভিগেটর। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেট, ফুটবলের প্রেমে মজত শিশুমন। ফলে তৎকালীন ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকর, নভজ্যোত সিং সিধু, মহম্মদ আজহারউদ্দিন, অজয় জাদেজা, রবিন সিং, সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়, নয়ন মোঙ্গিয়া, সঞ্জয় মঞ্জরেকর, বিনোদ কাম্বলি, অনিল কুম্বলে কিংবা জাভাগাল শ্রীনাথের স্টিকারে ভরে যেত অ্যালবামের পাতা। সেসময় ডব্লুডব্লুএফ-ও বেশ সাড়া ফেলেছিল। আন্ডারটেকর, রক, কার্ট অ্যাঙ্গেল, ট্রিপল এইচ, হাল্ক, স্টিভ অস্টিন অনায়াসে জায়গা করে নিত পাতায় পাতায়। এছাড়া ঠাকুর-দেবতা, মনীষীদের স্টিকার তো ছিলই। ইমোজির মতো দেখতে অনেক স্টিকার আবার অন্ধকারে জ্বলত। বেশ কয়েকটি বাবলগাম সংস্থা এক অভিনব পন্থা বের করেছিল। প্রোডাক্টকে জনপ্রিয় করতে বাবলগামের সঙ্গে ফ্রিতে দিত জলছবি। সেইসব জলছবি আটকানোর পদ্ধতিও ছিল অত্যন্ত মজার। স্বচ্ছ প্লাস্টিকের ছবি পাতায় আটকে তার উপর জল ফেলে খানিকক্ষণ ঘষলেই তা আটকে যেত। পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গের ‘জুরাসিক পার্ক’ ছবিটি জনপ্রিয় হওয়ায় ডায়ানোসরের জলছবিও মিলত। তোমাদের মধ্যে কি কেউ জমাও স্টিকার?