Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ছোট গল্প: জামাইয়ের মোবাইল 
বিপুল মজুমদার

হ্যালো অর্পি, শোন মা, সামনের জামাইষষ্ঠীতে ওঙ্কারকে একটা স্মার্টফোন দিতে চায় তোর বাবা। তা তোদের যদি কোনও চয়েস থাকে, ইয়ে মানে কোনও কালার বা কোম্পানি, তাড়াতাড়ি সেটা জানিয়ে দিস তো ভালো হয়।’
মায়ের মুখে স্মার্টফোনের কথা শুনে কপালে ভাঁজ পড়ল অর্পিতার। সে হা-হা করে উঠল, ‘ও লাইনে একদম পা বাড়িও না মা। ওঙ্কারকে তো তুমি ভালোই চেনো। কারও কাছ থেকে কিছু নেওয়ার নামে গায়ে যেন ওর জ্বর আসে। তাছাড়া খানিকটা পুরনো পন্থীও বটে। যে সেটটা ও ব্যবহার করছে পুরোপুরি সেটা বরবাদ না হওয়া পর্যন্ত অন্যদিকে তাকাবেই না!’
‘তা বলে মান্ধাতা আমলের ওই লজঝড়ে মার্কা ফোন!’ অর্পিতার মা গায়ত্রী ঝংকার দিয়ে উঠলেন, ‘আজকাল ওসব বস্তাপচা জিনিস কেউ ইউজ করে নাকি! তোর ভাই বলেছে, দাগে দাগে ওর ডিসপ্লে স্ক্রিনটা এতটাই ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে যে ঠিকমতো নাকি, দেখাই যায় না। সবুজই বলল, কোনও একটা জায়গায় আবার নাকি চিড়ও ধরেছে।’
‘সে যেমনটাই হোক না কেন, ও জিনিস ও চেঞ্জ করবে না! শোন মা, জামাইষষ্ঠীতে শুধু খাওয়াদাওয়ার অ্যারেঞ্জমেন্টটাই করো, ওসব মোবাইল ফোবাইল কেনার চিন্তা মাথায় এনো না।’
‘কী বলছিস অর্পি, চোখের সামনে ওইরকম বদখত চেহারার একটা মোবাইলকে দেখেও বলছিস কেনার চিন্তা না করতে! বিয়ে হয়ে মাথাটা কী গেছে নাকি তোর! তাছাড়া চিন্তাটা তোর বাবার, তার কথা অগ্রাহ্য করবি?’
মাকে ভালোই চেনে অর্পিতা। কোনও একটা বিষয় পেলে তা নিয়ে ঘেঙিয়েই যাবে মানুষটা। তাই ভেতরে ভেতরে বিরক্ত হলেও অনেক কষ্টে সেটা চাপা দিল। গম্ভীর হয়ে বলল, ‘বাবাকে তুমি বোঝাও মা। গতবার জামাইষষ্ঠীতে জামাইকে বাইক কিনে দেবে বলে কী ঝোলাঝুলিটাই না করল। ওঙ্কার রাজি না হওয়ায় বলল, তাহলে সাইকেল নাও! তাতেও ওঙ্কার অসম্মতি জানালে রাগের চোটে খাওয়ার পাত থেকেই উঠে গেল। এবার বাবাকে বলে দিও সেসব 
যেন না হয়।’
মেয়ের কথা শুনে মোবাইলের অন্যপ্রান্তে থাকা গায়ত্রী মুহূর্তখানেকের জন্য থমকে গেলেন। পরক্ষণেই গলায় ঝাঁঝ তুলে বলে উঠলেন, ‘বাইক নেয়নি ঠিক আছে, কিন্তু সাইকেল নিলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হতো শুনি! বাড়ির জামাই ভাঙাচোরা একটা সাইকেল নিয়ে ড্যাং ড্যাং করে ঘুরে বেড়াবে এটা কোনও শ্বশুরের সহ্য হয়। তোর বাবারও তা সহ্য হয়নি। কিন্তু ওঙ্কারের সেই এক কথা, পুরনো সাইকেলটা নাকি ওর বন্ধুর মতো। তাই বাহনটাকে ও ছাড়তে পারবে না! ভাগ্যিস ক’দিন বাদে ওই ঘটনাটা ঘটেছিল। লরির তলে পড়ে ওটার ভবলীলা সাঙ্গ না হলে আজও হয়তো ওই বিদঘুটে জিনিসটাকে নিয়েই ও যাতায়াত করত!’
‘সেদিন কিন্তু ওঙ্কারের মস্ত বড় একটা ফাঁড়া গিয়েছে মা। সাইকেলটাকে স্ট্যান্ড করে সিগারেট কিনতে ফুটপাথের দোকানটায় জাস্ট ও ঢুকেছে। কোথা থেকে একটা লরি এসে সাইকেলটাকে পিষে দিয়ে বেরিয়ে গেল ঝড়ের গতিতে! উফ্‌, ভাবলে এখনও আমার গায়ে কাঁটা দেয়। সেদিন আর কয়েক সেকেন্ড যদি দেরি হতো ওঙ্কারের...!’
‘ঘটনাটা বিপজ্জনক হলেও ওটার একটা ভালো দিকও কিন্তু আছে রে অর্পি। সেদিন সাইকেলটার ওভাবে ইন্তেকাল না ঘটলে ওঙ্কার কিছুতেই নতুন একটা সাইকেল কিনত না। জামাইয়ের সাইকেল নিয়ে অনেকেই তো তোর বাবাকে উল্টোপাল্টা কথা শোনাচ্ছিল। ওই ঘটনার পর হাঁপ ছড়ে যেন বাঁচলেন উনি!’
‘ঠাকুর বলেছেন লোক না পোক। লোকের কথাকে তোমরা এত পাত্তা দাও কেন বল তো! যাই হোক, সাইকেল নিয়ে যা হওয়ার হয়েছে, আমি চাই না মোবাইল নিয়ে আবার সেইরকম কিছু হোক। ওঙ্কার যেমন আছে তেমনটাই ওকে থাকতে দাও মা।’
ওঙ্কারের সঙ্গে মেয়ের প্রেম নিয়ে বাড়ির সকলেরই আপত্তি ছিল। তাই পালিয়ে বিয়ে করেছিল অর্পিতা। তারপর দীর্ঘ দু’বছরের মান-অভিমানের পর গত বছরের জামাইষষ্ঠীতে আবার দু’তরফের পুনর্মিলন। কিন্তু গত এক বছরের চেষ্টার পরেও মেয়ের কোনও পরিবর্তন হল না! গায়ত্রীর গলা দিয়ে তাই অভিমান ঝরে পড়ল, ‘তুই তো আগে এমনটা ছিলিস না অর্পি! চিরকাল তুই বাবার ভক্ত। বিয়ের আগে বাবার কোনও কথাতেই না ছিল না তোর। আর এখন...!’
‘এখন আমি বরের ভক্ত এটাই তো তুমি বলতে চাও? বল বল, বলে যদি শান্তি পাও তবে তাই বল।’
‘আরে বাবা রেগে যাচ্ছিস কেন! শোন, স্মার্টফোন তো লোকে এমনি এমনি ব্যবহার করছে না। জিনিসটার অনেক উপযোগিতাও আছে। ছাত্রদের ছবি আঁকা শেখায় ওঙ্কার। সঙ্গে স্মার্টফোন থাকলে প্রচুর সুবিধা হবে ওর। হোয়াটঅ্যাপে ছবি পাঠানো, ফেসবুকে প্রচার, ইউটিউবে নানারকম ভিডিও আপলোড— এইসব সুবিধা ও পাবে কোথায়। ওতে ইনকামটাও বেশ বেড়ে যাবে ওর। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে পুরোদস্তুর যে পিছিয়ে পড়বে ছেলেটা!’
‘পিছিয়ে পড়বে নাকি এগিয়ে যাবে সেটা ওর বিবেচনার উপর ছেড়ে দাও মা। সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে আর তুমি ঘ্যানঘ্যান করো না। প্লিজ এবার খ্যামা দাও।’
‘না, পারছি না খ্যামা দিতে! কারণ চাওয়াটা আমার নয়, তোর বাবার। তাই তাকে এসে বোঝা তুই। পারলে আজই চলে আয়। এসে বোঝা মানুষটাকে। আমি বাপু এর মধ্যে নেই।’
‘তোমরা না... কী আর বলব! ঠিক আছে, দেখছি কী করা যায়। আজ না পারলে কাল যাব শিওর। স্নান সেরে ঠাকুরকে জলমিষ্টি দিতে হবে। রাখছি এখন। টা-টা!’
দুই
কথার ডালি সাজিয়ে যেন তৈরি হয়েই ছিলেন অভ্রনীল। মেয়ে ঘরে ঢুকতেই ভুরু কুঁচকে বলে উঠলেন, ‘সব ব্যাপারেই তোদের এত আপত্তি কীসের বুঝি না বাপু! হাতি ঘোড়া তো দিতে চাইছি না, চাইছি সামান্য একটা স্মার্টফোন দিতে। তাতেও এত গাঁইগুঁই! ওঙ্কার কি কিছু বলেছে তোকে? বলেছে যে শ্বশুরবাড়ির কোনও জিনিস ও নেবে না?’
বাবার কথায় থতমত খেয়ে গেলে অর্পিতা। আগের বারেও বাইক আর সাইকেল দেবেন বলে এমন গোল পাকিয়েছিলেন বাবা। এবার মানুষটার হাতিয়ার স্মার্টফোন! আসল কথা হল না শুনতে অভ্যস্ত নন বাবা। সেটা জানা থাকায় অর্পিতা শান্তভাবে বলল, ‘তুমি তো জানো বাবা, ওঙ্কারের চাহিদা খুবই সামান্য। সাদামাটাভাবে জীবন কাটাতেই ও পছন্দ করে। তাই নিজে কিছু না বললেও আমি জানি তোমাদের প্রস্তাব ও ফিরিয়ে দেবেই। তাছাড়া, মোবাইল তো ওঙ্কারের একটা আছেই। আর একটা নিয়ে ও করবেটা কী!’
দিদির কথায় বাবার মুখখানা কালো হয়ে উঠেছে দেখে সবুজ এবার ব্যাটনটা হাতে তুলে নিল। ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল, ‘এটা কিন্তু ওঙ্কারদার ভীষণ বাড়াবাড়ি দিদি। আজকাল লোকে মুড়িমুড়কির মতো একে ওকে মোবাইল গিফ্ট করছে। ওঙ্কারদা একটা লজঝড়ে মোবাইল নিয়ে ঘোরে দেখে বাবাকে কথাটা আমিই বলেছিলাম। জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ি থেকে সব জামাইকেই লোকে কিছু না কিছু দিয়ে থাকে। আমরা যদি স্মার্টফোন দিই তাহলে আপত্তি কীসের!’
অর্পিতা বুঝতে পারল গোটা এপিসোডটাই ভাইয়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। সবুজের প্ররোচনাতেই স্মার্টফোনের চিন্তাটা বাবা-মায়ের মগজে ঢুকেছে! কিন্তু আগে তো এমনটা ছিল না সবুজ। গতবারে বাবা যখন ওঙ্কারকে বাইক দেবেন বলে খেপে উঠেছিলেন তখন বাবাকে থামিয়েছিলেন এই সবুজই। পরে সাইকেল পর্বেও বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল অনেক। কিন্তু এখন ওর গলাতে যে উল্টো সুর! অর্পিতা লোকমুখে শুনেছে রায় বাড়ির মেয়ে জুলির সঙ্গে সবুজ নাকি ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে! একসময় ওঙ্কারের কাছে ছবি আঁকা শিখতে জুলি। আপাদমস্তক নাক উঁচু স্বভাবের মেয়ে। নির্ঘাত ওই জুলির প্রভাবেই সবুজের এই মুড বদল! অর্পিতার চোয়াল তাই শক্ত হয়ে উঠল, ‘পুরনো জিনিসের উপর তোর জামাইবাবুর বড্ড মায়া রে ভাই। তাছাড়া প্রেমপর্বের সময় ওই মোবাইল থেকেই দিনের পর দিন আমার সঙ্গে কথা বলেছে ওঙ্কার। সেইজন্যও বোধহয় জিনিসটার উপর এত টান ওর! তাই যা বলছি শোন, গিফ্ট না দিলে একান্তই যদি তোদের না চলে তাহলে ছবি আঁকার কয়েকটা তুলি দিস। ওঙ্কার ওতেই খুশি হবে। আর তাতেও যদি তোদের আপত্তি থাকে তাহলে বাদ দে জামাইষষ্ঠী।’
ভাইকে কথাগুলো বলে দিয়েও অর্পিতা হনহন করে বাবা-মায়ের ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই অনেকক্ষণ যাবৎ চুপ করে বসে রইলেন অভ্রনীল। পরে নীরবতা ভেঙে ছেলেকে বললেন, ‘সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকাতেই হয় সবুজ। তুই বলেছিলি না, জামাইবাবুর মোবাইলের জন্য বন্ধুরা তোকে নাকি রাতদিন আওয়াজ দিচ্ছে। তা আওয়াজ যাতে বন্ধ করা যায় এবার সেই ব্যবস্থা কর। খুঁজে পেতে ধরে আন কোনও পকেটমারকে! মক্কেলটাকে লাগিয়ে দে ওঙ্কারের পেছনে! কী রে, আমি কী বলতে চাইছে বুঝতে পারছিস তো? পারবি না কাজটা করতে!’
বাবার কথায় হাজার ওয়াটের আলো জ্বলে উঠল সবুজের চোখেমুখে। দু’চোখ ছুঁচালো করে খলনায়কের মতো হেসে বলল, ‘এই শর্মা পারে না এমন কাজ নেই। কারশেডের ওদিকে পঞ্চু নামের একজনকে চিনি আমি। লোকে বলে ট্রেনে বাসে পকেটমারি করা নাকি ওর পেশা। তুমি বললে যখন, তাহলে ওর পাত্তাই আমাকে লাগাতে হবে!’
তিন
ডোরবেলের আওয়াজ শুনে খবরের কাগজ রেখে উঠে গিয়ে দরজা খুললেন অভ্রনীল। উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা সিড়িঙ্গে মার্কা ছেলেটিকে চিনতে না পেরে বললেন, ‘তুমি কে বাবা? ঠিক চিনলাম না তো।’
ছেলেটির বিষণ্ণ মুখ, ‘আমি পঞ্চু। সবুজদা বাড়িতে আছে?’
পঞ্চু নামটা শুনেই উত্তেজিত হয়ে উঠলেন অভ্রনীল, ‘ও তুমিই সেই পঞ্চু! তা খবর কী? কাজটা হয়েছে?’
‘সবুজদাকে একবার ডাকুন জেঠু। যা বলবার ওর সামনেই বলব।’ পঞ্চুর কথা শেষ হতেই চটিতে ফটাফট শব্দ তুলে দোতলা থেকে নেমে এল সবুজ। এসেই হড়বড় করে বলে উঠল, ‘অপারেশন সাকসেসফুল তো পঞ্চু? কই দেখি সেই মাল!’
পঞ্চুর মুখ কাঁচুমাচু, ‘আমার ওস্তাদের উপদেশ ছিল— মারবি গণ্ডার লুটবি ভাণ্ডার! ছুঁচো মেরে কখনও হাত গন্ধ করবি না। কিন্তু সবুজদা, আপনি যে জিনিস তুলতে বলেছেন সে তো ছুঁচোরও অধম। মাগো ও জিনিস কেউ ছোঁয় নাকি!’
‘মানে!’ পঞ্চুর কথায় ভুরু জোড়া প্রায় ধনুক সবুজের, ‘কী বলতে চাস তুই?’
‘আপনার দেখিয়ে দেওয়া লোকটাকে তিনদিন ধরে লাগাতার আমি ফলো করে গেছি। ভেবেছিলাম মওকা পেলেই টুক করে সেরে ফেলব কাজটা। খানিক আগে পেয়েও গেলাম সেই মওকা। ভদ্রলোক বারাসত থেকে এয়ারপোর্ট যাবেন বলে বাসে উঠেছিলেন। আমি বাসে উঠে এঁটুলির মতো সেঁটে গেলাম ওনার পাশে। ডাকবাংলোর পর ভিড় বাড়তেই হাত লাগালাম কাজে। বিশ বছরের অভিজ্ঞতা দাদা। দু’মিনিটের মধ্যেই ভদ্রলোকের মোবাইল আমার হাতে! কিন্তু তারপরেই হল কেলোটা। মোবাইলটা দেখেই গা ঘিনঘিন করে উঠল আমার। মন বলল, এমন জঘন্য একটা জিনিসের জন্য গুরুবাক্য লঙ্ঘন করলি! এক পয়সার দাম নেই যার সে জিনিসের জন্য ফালতু ব্যাটারি দিলি! কী বলব দাদা, ভাবতে ভাবতেই নিজের উপর ধিক্কার এসে গেল। শেষে কী করি, রদ্দি ওই মালটাকে ফের ওই ভদ্রলোকের পকেটেই চালান করে দিলাম! মানে যেখানকার মাল সেখানেই আবার রেখে দিলাম আর কী! তারপর নেমে এলাম বাস থেকে। হল না দাদা, আমার দ্বারা হল না। ওই মাল ঝাপলে নির্ঘাত পাপ হতো আমার। মহাপাপ...!’
পঞ্চু বকবক করে আরও কী সব বলে চলেছে। সেসব শোনার আর ধৈর্য নেই সবুজের। সে দরজার পাল্লায় হাত রেখে আড়চোখে তার বাবার দিকে তাকাল একবার। অভ্রনীলও বেলুনের মতো চুপসে গেছেন। মুখের ভাঁজে ভাঁজে তার বিষণ্ণতার কালো ছায়া। তারই মধ্যে নেতানো গলায় কোনওক্রমে বলে উঠলেন, ‘পকেটমারের আবার পাপপুণ্য! পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে দিয়ে ইমিডিয়েট ওকে বিদেয় কর সবুজ।’
বাবার কথায় টাকা আনার জন্য দোতলার সিঁড়ির দিকে পা বাড়াতে গিয়ে কী মনে হওয়ায় হঠাৎ থমকে দাঁড়াল সবুজ। নিচু গলায় বাবাকে বলল, ‘এর মতো আর কাউকে পাওয়া যায় কি না সেটা দেখব একবার?’
অভ্রনীল মাথা ঝাঁকালেন, ‘দরকার নেই।’
‘তাহলে অন্য কোনও রাস্তা ধরি? ইয়ে মানে যাতে করে মোবাইলটার দফারফা করা যায়!’
‘নো নেভার!’ বিষণ্ণতা কাটিয়ে গর্জে উঠলেন অভ্রনীল, ‘খবরদার। আর কোনও বাড়াবাড়ি নয়! গতবার মাতাল এক লরিওয়ালাকে দিয়ে যে কাণ্ডটা তুই ঘটিয়ে ছিলিস তাতে কেলেঙ্কারির একশেষ হতে পারত। জান চলে যেতে পারত ওঙ্কারের! উফ্‌। ভাবলে গায়ে এখনও কাঁটা দেয়। আমাকে আগে জানালে ও কাজের পারমিশন আমি কিছুতেই দিতাম না। শত হলেও ও আমাদের জামাই সবুজ, শত্রু নয়। তাই অর্পি যা বলেছে সেইরকমটাই হবে। ভালো দেখে কয়েকটা তুলিই আমরা গিফ্ট করব ওঙ্কারকে। যম জামাই ভাগনা তিন না হয় আপনা! থাক ব্যাটা যতদিন খুশি রদ্দি ওই মোবাইলটাকে নিয়ে। আমাদের কী!’ 
অঙ্কন: সুব্রত মাজী
28th  July, 2024
রাত্রিটা ভালো নয়

এটাই শেষ ট্রেন ছিল। স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে পথিক দেখল, চারদিকটা খুব ফাঁকা লাগছে। শীতকাল বলেই কী? নইলে এত তাড়াতাড়ি তো রাস্তাঘাট এমন শুনশান হয় না। তার পক্ষে অবশ্য এটা ভালোই। ভিড় থাকলে রিকশ পাওয়া দুষ্কর। আবার বেশি ফাঁকা হলেও রিকশওয়ালাগুলো সব পিটটান দেয়।
বিশদ

15th  September, 2024
ফেরা
ছন্দা বিশ্বাস 

সোপান সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বলল, ‘তাহলে কী ঠিক করলি?’ পরমের হাতে সিগারেটটা অসহায়ভাবে পুড়ছিল। ওরা ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টেশনে ঢোকার মুখে বাঁ-পাশে একটা স্মোকিং জোনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। কয়েকজন জার্মান যুবতী দ্রুত সিগারেট নিঃশেষ করে ভিতরে ঢুকে গেল।  বিশদ

08th  September, 2024
গগনবাবু ও প্যাংলা তাপস
রম্যাণী গোস্বামী

গগনবাবু একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মোটামুটি উপরতলার কর্মী। যাদবপুরে নিজেদের ফ্ল্যাট। মাস গেলে ইএমআই বাদ দিলে মাঝারি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স, কয়েকটা মিউচুয়াল ফান্ড, হৃষ্টপুষ্ট গিন্নি, ফ্যাশানেবল কলেজ পড়ুয়া কন্যা এবং একটি মাহিন্দ্রা কেইউভি— এই হল মোটামুটি তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান। বিশদ

01st  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হনুমান মহারাজজি
সমৃদ্ধ দত্ত

 

সেই গল্পটা তো আমাদের সকলেরই জানা। মহাশক্তিশালী ভীম হস্তিনাপুর যাওয়ার পথে একটি জঙ্গল পেরচ্ছিলেন। তাঁর শরীরে তো একশো হাতির শক্তি। সেকথা সর্বজনবিদিত। দ্বিতীয় পাণ্ডব নিজেও সেকথা জানেন। সোজা কথায় তাঁর নিজের বাহুবল নিয়ে যে গর্ব ছিল একথাও অবগত আমরা।  বিশদ

01st  September, 2024
ছেলের সঙ্গে দেখা
সন্দীপন বিশ্বাস

বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল সুভদ্রার। ঝাপানডাঙা স্টেশনে সে বসে আছে। এখানে এসেছিল এক গুরুবোনের বাড়ি। ফিরে যাচ্ছে উত্তরপাড়ায়, নিজের ঘরে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। এখনও কয়েকটা কাক ডাকছে। কেমন ক্লান্ত স্বর ওদের। স্টেশনের শেডের ওপর বসে কাকগুলো। বিশদ

25th  August, 2024
ঘাটশিলার বীরেশ
রাজেশ কুমার

ব্যাগ বোঁচকা আর এক কিলো পুঁটিমাছ নিয়ে সকাল সকাল পড়লাম এক অশান্তিতে। হয়েছেটা কী, দু’দিনের জন্য ঘুরতে এসেছিলাম ঘাটশিলা। ঠিক ঘুরতে না বলে শনির দশা কাটাতেই বলা ভালো। অনেক দিন বেড়াতে যাব, বেড়াতে যাব ভাবলেও যাওয়া হচ্ছিল না কোথাও। কিছু না কিছু বিপত্তি এসে হাজির হচ্ছিল ঠিক। বিশদ

18th  August, 2024
অভিশপ্ত কুলধারা

অলৌকিক তকমা স্থান-নামের সঙ্গে আলাদা মাত্রা যোগ করে। অলৌকিক ব্যাপার নিয়ে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী দু’পক্ষেরই নিজস্ব দাবিদাওয়া আর মতামত অন্তহীন।
  বিশদ

11th  August, 2024
দিল্লি দরবার
সমৃদ্ধ দত্ত

এমন কিছু নতুনত্ব নয়। এরকম দরবার এবং উৎসব আগেও হয়েছে। একবার সেই ১৮৭৭ সালে। ভারতের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বেশ কয়েক বছর পর মহারানি ভিক্টোরিয়ার ‘বিশেষ অভিষেক’ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল।
বিশদ

11th  August, 2024
হেড অফিসের বড়বাবু

বার দশেক হোঁচট খেয়ে প্রায় পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলে নিয়ে পার্থ এসে দাঁড়াল অফিসের গেটে। পার্থ বড়ুয়া। জুনিয়র অফিসার।
বিশদ

11th  August, 2024
ছোট গল্প: মাগুরমারি সাঁকো
সৌমিত্র চৌধুরী

বাঁকের মুখে স্টিয়ারিং ডান দিকে ঘুরাতেই চোখে পড়ল। একটা সাঁকো। মনে হচ্ছে বেশ পুরনো। দূর থেকে ব্রেকে আলতো করে পা ছোঁয়াল বিপুল। চাকা গড়িয়ে গড়িয়ে কিছুদূর এগল। পুলের কাছে আসতেই ব্রেকে আরও একটু চাপ দিয়ে থামিয়ে দিল। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল বিপুলের। বিশদ

04th  August, 2024
গুপ্ত রাজধানী: লালকেল্লা
সমৃদ্ধ দত্ত

জায়গাটা অনেকটাই কম। যেভাবে সাম্রাজ্য ছড়াচ্ছে আর হিন্দুস্তানের বাইরে থেকে আরও দলে দলে সমস্ত স্তরের মানুষ ভাগ্যান্বেষণে ক্রমাগত এসেই চলেছে, এরপর তো রাজধানীটাই ঩ঘিঞ্জি হয়ে যাবে। আরও বেশি খোলামেলা জায়গা দরকার। কোথায় নিয়ে যাওয়া যায় রাজধানী? বিশদ

04th  August, 2024
অতীতের আয়না: সাহেবদের হুঁকো বিলাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

মহিলা দিন কয়েক হয়েছে বিলেত থেকে এসেছেন এদেশে। এদেশীয় এক বিদুষী মেমসাহেবের সঙ্গে মহিলার বন্ধুত্ব হয়েছে। তার মতো খাঁটি ইংলিশ নন, তবে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা হওয়ায় বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করার জন্য তার বাড়িতে এসে দেখেন শ্রীমতী হেয়ার-ড্রেসারের তত্ত্বাবধানে কবরী সজ্জায় ব্যস্ত। বিশদ

04th  August, 2024
আমির খসরু ও বসন্ত উৎসব
সমৃদ্ধ দত্ত

সুফি সাধক হজরত নিজামউদ্দিনের কাছে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসে শান্তির খোঁজে। স্বস্তির সন্ধানে। নিবেদিত প্রাণ নিয়ে তাঁরা সকল দুঃখ-দুর্দশা, ক্ষোভ ক্রোধের আহুতি দিতে চায় এখানে। এই নিজামউদ্দিনের কাছে। তিনি তো সাধারণ সাধক নন। বিশদ

28th  July, 2024
আজও রহস্য: ন্যাশনাল লাইব্রেরির অশরীরী 
সমুদ্র বসু

বেলভিডিয়ার গার্ডেন হাউস, আলিপুর। এই নামে না চিনলেও ন্যাশনাল লাইব্রেরি কলকাতা বললে সহজেই চিনবেন অধিকাংশ মানুষ। এই গ্রন্থাগার ভবন ও সংলগ্ন এলাকাটির পোশাকি নাম বেলভেডিয়ার এস্টেট। বেলভিডিয়ার হল গথিক ঘরানার বিশেষ স্থাপত্য। বিশদ

28th  July, 2024
একনজরে
মাত্র ৫৯ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন ১৯৯০ বিশ্বকাপে সোনার বুট জয়ী ইতালিয়ান স্ট্রাইকার সালভাতোর স্কিলাচি। মারণরোগ কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ভুগছিলেন ...

আর জি কর কাণ্ডের পর সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার করতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেইমতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও বাড়তি পুলিস মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়। ...

উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষকদের মেধা তালিকা প্রকাশ নিয়ে কিছুটা ধন্দে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং শিক্ষাদপ্তর। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, বুধবার কমিশন এবং দপ্তরের মধ্যে একটি ...

বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান পদে আকস্মিক রদবদল ঘটাল অন্তর্বর্তী সরকার। গত সপ্তাহে এই কমিশন গঠনের কথা ঘোষণা করেছিলেন  মহম্মদ ইউনুস। যার মাথায় রাখা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহাদীন মালিককে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৪৯- ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়াকলানে প্রথম বাণিজ্যিক লন্ড্রি চালু হয়
১৮৬৫- প্রতিষ্ঠিত হয় আটলান্টা বিশ্ববিদ্যালয়
১৮৯৩- নিউজিল্যান্ড প্রথমবারের মতো নারীদের ভোটাধিকার দেয়
১৮৯৪-  বাঙালি চিত্রশিল্পী হেমেন্দ্রনাথ মজুমদারের জন্ম
১৯০৩- কল্লোল যুগের বিশিষ্ট বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের জন্ম
১৯০৭- প্রথম তাপ ও জ্বালানী উৎপাদনকারী উপাদান আবিস্কৃত হয়
১৯১৯- অভিনেতা জহর রায়ের জন্ম
১৯২১- সাহিত্যিক বিমল করের জন্ম
১৯২৪- সঙ্গীতশিল্পী সুচিত্রা মিত্রের জন্ম
১৯৩৬- ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রথিতযশা পণ্ডিত বিষ্ণু নারায়ণ ভাতখন্ডের মৃত্যু
১৯৬৫- মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামসের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৭ টাকা ৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড ১০৮.৬৫ টাকা ১১২.২০ টাকা
ইউরো ৯১.৫৭ টাকা ৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
17th  September, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৩,২০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৩,৫৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৯,৯০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৭,৭০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৭,৮০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৩ আশ্বিন, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। দ্বিতীয়া ৪৮/০ রাত্রি ১২/৪০। উত্তরভাদ্রপদ নক্ষত্র ৬/৩০ দিবা ৮/৪ পরে রেবতী নক্ষত্র ৫৯/২৮ শেষ রাত্রি ৫/১৫। সূর্যোদয় ৫/২৮/২, সূর্যাস্ত ৫/৩২/৫৪। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪ মধ্যে পুনঃ ১/৩০ গতে ৩/৬ মধ্যে। রাত্রি ৬/১৯ গতে ৯/৩০ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৪ গতে ৩/৫ মধ্যে পুনঃ ৩/৫২ গতে উদয়াবধি। বারবেলা ২/৩১ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৩১ গতে ১২/৫৯ মধ্যে। 
২ আশ্বিন, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। প্রতিপদ দিবা ৬/২৩ পরে দ্বিতীয়া রাত্রি ৩/৫৬। উত্তরভাদ্রপদ নক্ষত্র দিবা ১১/১৬। সূর্যোদয় ৫/২৭, সূর্যাস্ত ৫/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ৭/৮ মধ্যে ও ১/১৯ গতে ২/৫২ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/০ গতে ৯/১৯ মধ্যে ও ১১/৪৮ গতে ৩/৭ মধ্যে ও ৩/৫৬ গতে ৫/২৮ মধ্যে। কালবেলা ২/৩৩ গতে ৫/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৩১ গতে ১/০ মধ্যে।
১৫ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ভোপালে নাবালিকা ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে

11:28:00 PM

শনিবার থেকে জরুরি ভিত্তিতে কাজে যোগদানের আশ্বাস আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের

11:12:14 PM

বিহারে তল্লাশি অভিযানে এনআইএ, উদ্ধার প্রচুর টাকা এবং আগ্নেয়াস্ত্র

11:11:32 PM

তৃণমূল বিধায়ক খুন: বেকসুর খালাস মুকুল-জগন্নাথ
নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনে বেকসুর ...বিশদ

10:47:00 PM

আগামীকাল থেকে বন্যা দুর্গত এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্প গঠন করা হবে, জানালেন জুনিয়র চিকিৎসকরা

10:33:00 PM

আগামীকাল দুপুর ৩টের সময়ে স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত মিছিল করবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা

10:16:00 PM