Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বড় জেঠুর বাড়ি না গিয়ে সরাসরি শ্মশানে গেলে কেমন হয়?’ একটু ভেবে সুতপা প্রশ্ন করেছিল, ‘আমিও কি তাই করব?’ 
বয়স হয়েছিল নব্বই। বার্ধক্যজনিত কারণে মানুষটা অনেকদিন থেকেই কষ্ট পাচ্ছিলেন। কাচের গাড়িতে শোয়ানো প্রাণহীন শরীরটাকে প্রণাম করল নীলাঞ্জন। ড্রাইভারের পাশের সিট থেকে বড় জেঠুর ছেলে অলকদা আর মেজো জেঠুর ছেলে সমীরদা নামতেই নীলাঞ্জন এগিয়ে গেল। তিন ভাইকে একপলক দেখলেন অরুণবাবু। তারপর ভিড় থেকে সরে দাঁড়ালেন। সিকিউরিটির লোকটা বলল, ‘ডেথ সার্টিফিকেট আর আধার কার্ডের কপিটা দেখি।’ কাগজ হাতে নিয়ে প্রশ্ন করল, ‘বরুণ মিত্রের ছেলে কি আপনি? অফিসে আসুন।’ সমীর, নীলাঞ্জন আর ড্রাইভার ধরাধরি করে মৃতদেহ হল ঘরের ভিতরে নিয়ে এল। জায়গাটা লোকে লোকারণ্য। একটি মৃতদেহকে ঘিরে লোকজন ছবি তুলছে। পাশের কয়েকজন উচ্চকণ্ঠে হরির ধ্বনি দিচ্ছে। দু’জন জপের মালা নিয়ে এককোণে মাদুর পেতে বসে আছে।  
মৃতদেহ রেখে ড্রাইভার চলে গেল। সমীর বলল, ‘তুই একটু থাক, আমি দেখি অলকদা কী করছে।’ নীলাঞ্জন প্রশ্ন করল, ‘কেমন আছিস দাদা?’ সমীর সামান্য একটা চাকরি করে। খুড়তুতো ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে বলল, ‘ভালো।’ সুতপা মৃতদেহের উপর সাদা ফুল দিচ্ছে। দাদাদের সঙ্গে অনেক বছর নীলাঞ্জনের দেখা-সাক্ষাৎ নেই। অলক একটা দোকান চালায়। সমীরের সঙ্গে তার ভালোই যোগাযোগ। ওদের বউ-বাচ্চাদের মধ্যেও বেশ মিল। ওই গণ্ডিতে নীলাঞ্জন, সুতপা কোনওদিন ঢুকতে চায়নি। তাদের জগৎটা একদম আলাদা। ছোটবেলায় নীলাঞ্জন দেখেছে অন্য ছবি। ভাইদের মধ্যে তার বাবার রোজগার ছিল সবচেয়ে কম। বাকিরা সম্মানজনক চাকরি বা ব্যবসা করতেন। তবুও সব পারিবারিক অনুষ্ঠানে নীলাঞ্জনদের ডাক আসত। সবাই চাইতেন ওরা আসুক। তার বাবা-মায়ের মতো স্বার্থহীন পরিশ্রম করতে আর কাউকে সে দেখেনি।
প্রিয়জন বিয়োগ দুঃখের নয়, যদি তা বেশি বয়সে এবং রোগ ভোগের পর হয়। এইসব সাতপাঁচ ভাবনার মধ্যে শিশিরকাকু সপরিবার এগিয়ে এসে বললেন, ‘তোরা কখন এলি?’ বরুণবাবুর খুড়তুতো ভাই শিশির। আশি পেরিয়েও নিজেকে নীরোগ রেখেছেন। ওদের সঙ্গে কেবল পারিবারিক অনুষ্ঠানেই দেখা হয়। কাকিমা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, ‘যোগাযোগ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমরা চলে গেলে সেটুকুও থাকবে না।’ কথার মধ্যেই বরুণবাবুর মেয়ে-জামাই এসে দাঁড়াল। নীলাঞ্জনদের সঙ্গে এদের যোগাযোগও সামান্য। বরুণবাবুর শালা এসেছেন তার ভাইকে নিয়ে। সকলেরই বয়স হয়েছে। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টকর। সমীর বলল, ‘তোমরা কি বসবে? আরও একটু সময় লাগবে কিন্তু।’ এসব কথার মধ্যেই একটা গণ্ডগোল কানে এল। একটি মৃতদেহের সঙ্গে লরি বোঝাই করে লোক এসেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন মদ্যপ অবস্থায় ঘোরাঘুরি 
করছিল। জনগণের ধৈর্যের আয়ু সীমিত। কয়েকজন চুল্লি ঘরের সামনের কোলাপসিবল গেট ধরে নাড়াচ্ছে আর বলছে, আমাদের 
কখন হবে?
দু’জন ডোম এতক্ষণ বোঝানোর চেষ্টা করছিল, একটা বডি পোড়াতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। আপনারা অপেক্ষা করুন। একথা শুনে জনৈক মাতাল চিৎকার করে উঠল, ‘যদি অপেক্ষা না করি তাহলে কী করবি শালা!’ মোটা চেহারার হেড ডোম দূরে দাঁড়িয়ে ছিল। এবার সে ক্ষিপ্র বাঘের মতো দৌড়ে এসে মাতালের হাতটা ধরে বলল, ‘এই রঘু চুল্লির শাটার তোল, এই মালটা ভেতরে গিয়ে দেখে আসুক।’ পুলিসের জলকামান বা কাঁদানে গ্যাসের সামনে জনতা যেমন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়, হেড ডোমের কথায় তেমনই কাজ হল। সেই মাতাল তো বটেই বাকিরাও দৌড়াতে শুরু করল। এমন একটা আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব হয়ে গেল মিত্র পরিবারের সকলে। আর একটু হলেই কয়েকজন বরুণবাবুর দেহটার উপর উঠে পড়ছিল। বিশ্রী সেই ঘটনাটা কোনওভাবে আটকে গেল সমীরের উপস্থিত বুদ্ধিতে।
জনতা হল ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই নেমে এল শ্মশানের স্তব্ধতা। সেই নীরবতা ভেঙে নীলাঞ্জন বলল, ‘তুই ওইভাবে ঘুরে না দাঁড়ালে কী যে হতো সমীরদা!’ কথাটা বলেই তার মনে হল, প্রকাশ্যে কোনওদিন সে সমীরের প্রশংসা করেনি। এই ভাবনার মধ্যেই পুরোহিত এসে প্রশ্ন করল, ‘কাজ কে করবে?’ অলকদা এগিয়ে যেতেই বলল, ‘জল এনেছেন?’ মাটির ঘটিটা নিয়ে নীলাঞ্জন তৎক্ষণাৎ গেল জল আনতে। খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে নিশ্চুপে সবটা দেখছেন অরুণবাবু।
পরপর তিনটে মৃতদেহ চুল্লিতে ঢুকতেই ঘরটা অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেল। এই ঘরে একে একে লাইন করে রাখা হয় মৃতদেহ। একটা চুল্লিতে গেলেই অন্যগুলোকে একটু একটু করে এগিয়ে দেয় বাড়ির লোক। এখন মৃতদেহ বাঁশের চটার উপর শোয়ানো। গাড়ির ড্রাইভার ভাড়া আর স্ট্রেচার নিয়ে চলে গিয়েছে। কোলাপসিবল গেটের ভেতর থেকে একজন ডোম উঁচু গলায় ডাকছে, এগিয়ে আসুন এগিয়ে আসুন। কথাটা কয়েকবার শোনার পর বোঝা গেল, সে মৃতদেহগুলো এগিয়ে দিতে বলছে। বাঁশের চটা ধরে মৃতদেহ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দু-একজনের কাজ নয়। আর একটু হলেই দেহটা মাটিতে পড়ে যেত। ঠিক এই সময়ে সেই মাতাল এসে বলল, ‘আমি কি ধরে দেব?’ লোকটার দিকে তাকিয়ে হেসেই ফেলেছিল নীলাঞ্জন। লোকটাকে দেখে হেড ডোম দূর থেকে বলে উঠল, ‘তবে রে!’ তার হুঙ্কার শুনে মাতাল পালিয়ে যেতেই ডোম বলল, ‘কীভাবে ধরতে হয় তাও জানেন না! আপনি এক নম্বর আর তিন নম্বরটা ধরুন। আর এই যে আপনি, ওই দিকে চলে যান।’
বরুণবাবুর দেহ চুল্লির মধ্যে চলে যেতেই পারিবারিক জমায়েতটা বাইরে বেরিয়ে এল। তারপর এক এক করে কমতে লাগল লোকজন। হল ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময় নীলাঞ্জন ডোমকে প্রশ্ন করল, ‘প্রতিদিন কতগুলো ডেডবডি আসে?’ ছেলেটা গুটকা চিবোতে চিবোতে বলল, ‘ঠিক নেই। আশি থেকে একশো ধরে রাখুন।’ চোখ ঘুরিয়ে বিরাট হল ঘরটা দেখল নীলাঞ্জন। আর কোনও মৃতদেহ এখন অপেক্ষায় নেই। তার চোখের ভাব দেখে ডোম বলল, ‘এখন নেই, আবার যখন আসবে, তখন দেখবেন একসঙ্গে দশ-বিশটা বডি এসে যাবে। নীলাঞ্জন আবার প্রশ্ন করল, একটু আগে যে একটা গাড়ি এল?’ ডোম গুটকার থুতু ফেলে বলল, ‘ওটা ভিআইপি। ওদের অন্য ব্যবস্থা।’ কথার মধ্যেই সমীর এসে বলল, ‘তুই চা খাবি? আমরা যাচ্ছিলাম।’ নীলাঞ্জন বলল, ‘চল আমি সবাইকে চা খাওয়াচ্ছি।’
অস্থি আর ডেথ সার্টিফিকেট সংগ্রহ ছাড়া আর কিছুই করার নেই জেনে পারিবারিক জমায়েতটা সরে গেল চায়ের দোকানে। আলোচনা ধীরে ধীরে মৃত্যু থেকে ছড়িয়ে যেতে লাগল অন্যদিকে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, চিকিৎসা, চাকরি, রাজনীতি...। এলাকা খালি হয়েছে দেখে অরুণ এগিয়ে গেলেন চুল্লির দিকে। সেখানে দেওয়ালে হেলান দিয়ে দুই হাঁটুর মাঝে মাথা গুঁজে একজন বসে রয়েছেন। অরুণ নিজেও বসলেন তাঁর পাশে। প্রবল দুঃখে কাতর অবস্থা লোকটার। পরম মমতায় অরুণ তাঁর পিঠে হাত রাখলেন। তাঁর স্পর্শে লোকটা ধীরে ধীরে মাথা তুলে তাকালেন। তারপর চেয়ে রইলেন শূন্যদৃষ্টিতে। অরুণ মাথা নেড়ে বললেন, এখন বিশ্বাস হয়েছে তো? লোকটা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছেন তার দিকে। তিনি আবার বললেন, সেই সকাল থেকে বলছি। এখন অন্তত চল। এবার আমারও কষ্ট হচ্ছে। আর মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই বড়দা।
কয়েকবার চোখ মোছার চেষ্টা করে তিনি বলতে শুরু করলেন, ইদানীং রাতে ঘুম হয় না। অনেকদিন থেকেই তো বিছানায়। কলকব্জা সব খারাপ হচ্ছে। গত ক’দিন খেতে পর্যন্ত পারছিলাম না। ঘড়িতে রাত তিনটে বাজার শব্দ শুনলাম। তারপরই শরীরটা কেমন করতে লাগল। মনে হল, ভিতরটা যেন নিংড়ে দিচ্ছে কেউ। বুকে হঠাৎ একটা দামামা বাজতে শুরু করেছে। সে যে কী কষ্ট! একটা ঘোড়া যেন বুকে লাথি মেরে মেরে পাঁজরগুলো ভেঙে দিচ্ছে। আমি চিৎকার করতে চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। ছোটবেলায় ভয়ের স্বপ্ন দেখে যেমন কুঁকড়ে যেতাম, অনেকটা সেই রকম। তখনও শরীরে যতটা শক্তি ছিল, তাই দিয়ে আমি শ্বাস নিতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু বুঝলাম, শ্বাস নিতে পারছি না। এইভাবে কয়েক মুহূর্ত যাওয়ার পর, মনে হল কেউ আমার হৃৎপিণ্ডটা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে দিচ্ছে। আমি আবার প্রাণপণ শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করলাম। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। মনে হল আমাকে আলো-বাতাসহীন একটা অন্ধকার কুয়োর মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। গভীর অন্ধকারে ডুবে যেতে যেতে আমি আবার শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করলাম। কী আশ্চর্য! হঠাৎ উপলব্ধি করলাম নিজেকে খুব হালকা লাগছে। মনে হল আমার শরীরে আর কোনও কষ্ট নেই। পর-মুহূর্তেই চমকে উঠলাম। যখন দেখলাম, আমার শরীরটা খাটের উপর নিথর পড়ে আছে। তবে কি, শ্বাস নিতে গিয়ে আমিই শ্বাস হয়ে বেরিয়ে পড়েছি! উন্মাদের মতো আমি আবার শরীরে ঢোকার চেষ্টা করলাম। পারলাম না। অনেক ব্যর্থ চেষ্টার পর বুঝলাম, আমি শরীরের চেয়ে অনেক বড় হয়ে গিয়েছি। তখন তোর বউদিকে ডাকলাম। অলকের নাম ধরে গলা ফাটালাম। ওরা কেউ আমার কথা শুনতে পেল না। আমার সর্বনাশ হয়েছে, বুঝে যখন মাথায় হাত দিয়ে মেঝেতে বসলাম, তখন দেখলাম তুই সোফায় বসে পা দোলাচ্ছিস।
বরুণ আবার হাঁটুর উপর মাথা রাখলেন। প্রশ্ন করলেন, এমন কেন হল বল তো? দাদাকে টেনে তুলতে তুলতে অরুণ বললেন, কারণ তুমি মৃত্যুর পরের অবস্থায় এসে পৌঁছেছ। এবার আমাদের যেতে হবে। বরুণ রেগে গিয়ে বললেন, সকাল থেকে তোর এই এক কথা, যেতে হবে! আরে, যাব কোথায়? তাছাড়া, অলক আর তোর বউদিকে না বলে গেলে আমি কি শান্তি পাব! অরুণ জোর গলায় বললেন, যেতে তোমাকে হবেই। প্রত্যেকটা অবস্থার জন্য আলাদা আলাদা অবস্থান আছে। এই অবস্থা তোমাকে মেনে নিতেই হবে।
ভাইয়ের হাত ছাড়িয়ে দিয়ে বরুণ বললেন, আর ক’দিন বাদেই নাতনিটার উচ্চ মাধ্যমিক। এই গোলমালের মধ্যে ওর কি পড়াশোনা হবে! শেষে যদি রেজাল্ট খারাপ হয়! তোর ছেলেটা পড়াশোনায় ভালো। সে যদি ভাইঝির একটু খোঁজ নিত! যোগাযোগ ওদের মধ্যে নেই বললেই চলে। ক’দিন পর কেউ আর কাউকে চিনবে না। তখন কী হবে ভেবে দেখেছিস?
এইসব কথার মধ্যেই একজন ডোম গেট ঠেলে ভিতরে এল। অরুণ আবার বললেন, প্রকৃতির নিয়ম দাদা, চাইলেও তাকে বদলানো যায় না। উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বরুণবাবু বললেন, তবে সব কিছুরই একটা ভালো দিক আছে। দেখ, ওরা ভাইবোন সবাই আজ কত কাছাকাছি চলে এসেছে। দাদার হাতটা ধরে বন্ধ কোলাপসিবল গেটের ভিতর থেকে বাইরে আসতে আসতে অরুণ মনে মনে বললেন, জীবন-মৃত্যু, ভালো-খারাপ সবই যে এক-একটা ঢেউয়ের মতো। একবার ওঠে আবার নেমে যায়। এসব জটিল কথা তুমি কি এখন বুঝবে! বরুণ বললেন, চল ওদের ভাই বোনদের একবার একসঙ্গে দেখি।
চায়ের ভাঁড়টা ফেলে দিয়ে সমীর বলল, ‘সময় প্রায় হয়ে এসেছে। এবার আমাদের যাওয়া উচিত।’ অলক ঘড়ি দেখে বলল, ‘চল তাহলে।’ চায়ের দাম মেটাতে মেটাতে নীলাঞ্জন বলল, ‘আমিও আসছি।’ ছেলেমেয়েগুলোর দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে আছেন বরুণবাবু। অরুণ বুঝলেন, জোর করে কিছু করা যাবে না। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ একটা ছবি তার মাথায় এল। বললেন, গ্রামের কথা তোমার মনে পড়ে দাদা? আমাদের ছোটবেলার কথা। দুপুরবেলা বারান্দায় মাদুর পেতে আমরা পাশাপাশি শুতাম। মনে আছে? ভাইয়ের কথায় পিছন ফিরে বরুণ বললেন, মনে নেই আবার। তখন রোজ আমি তোকে ঠকাতাম। বলতাম, তুই আমার পিঠে একশোবার হাত বুলিয়ে দে, তারপর আমি দেব। তুই মহানন্দে হাত বুলিয়ে দিতিস আর আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়তাম। অরুণ হেসে বললেন, চল, আজ তোমাকে আবার ঘুম পাড়াই। সেই কোন ভোর থেকে জেগে রয়েছ। ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে হাসলেন বরুণ। 
শ্মশানে খাটের অভাব নেই। অরুণ দাদার পিঠে ছোটবেলার মতো হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। আরামে ডুবে যেতে যেতে বরুণ প্রশ্ন করলেন, এত প্রিয়জন থাকতে তুইই কেন আমাকে নিতে এলি? অরুণ মৃদু হাসলেন। মনে মনে ভাবলেন, যে নিজে শান্ত সেই পারে সান্ত্বনা দিতে। যে পৌঁছেছে, সেই অর্জন করেছে পথ দেখাবার অধিকার। তন্দ্রার গভীরে ডুবে যাচ্ছেন তার বড়দা। অরুণ উঠে পড়লেন। এবার বড়দাকে নিয়ে যেতে আর বেগ পেতে হবে না।
10th  March, 2024
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
গুপ্ত রাজধানী: লোধি গার্ডেন
সমৃদ্ধ দত্ত

মন খারাপ হয়েছে? চলে আসতে হবে লোদি গার্ডেনে। বান্ধবীকে আজই বলতে হবে মনের কথা? গন্তব্য লোধি গার্ডেন। এই কি শেষ দেখা? দু’জনের পথ দু’দিকে বেঁকে যাবে? লোদি গার্ডেন সাক্ষী থাকুক। সুগার বেড়েছে। ডক্টর লুথরিয়া বলেছেন, এখনই ওষুধ শুরু করতে হবে না। আগে হাঁটুন। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
বিধাননগর হাসপাতাল মোড়ের কাছে  দুই ব্যক্তি গল্প করছেন। ধীরেন রায় নামে একজন বলছেন, দেখলেন তো তৃণমূলের মিছিলে ভিড়। কিসের লোভে লোকগুলো ঘুরছে বলুন তো? ...

বাগদার বিজেপি নেতাদের ফোন করে ভোট চাইছেন বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। অভিযোগ, তিনি বলছেন, ‘আমাকে জিতিয়ে দিন। জিতে আবার বিজেপিতে ফিরে আসব।’ ...

আর মাত্র চারদিন বাদে ভোটগ্রহণ। শেষ মুহূর্তে প্রচার তুঙ্গে তামিলভূমে। ভোটারদের চোখ টানতে ও মনে পেতে নিত্য নতুন অদ্ভুত উপায়ে প্রচারে নামছেন প্রার্থীরা। এই জাল্লিকাট্টুর ...

বাজারে ‘নিও ভারত ল্যাটেক্স’ নামে নতুন রং নিয়ে এল এশিয়ান পেন্টস। তাদের দাবি, এই রংয়ে উন্নত ও বিশেষ পলিমার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা রংয়ের ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস
হাজব্যান্ড অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে
১৬২৯ - প্রথম বাণিজ্যিক মাছের খামার চালু
১৭৮১ - ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতায় প্রথম মাদ্রাসা স্থাপন করেন
১৭৯০- মার্কিন বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের মৃত্যু
১৮৫৩ - নাট্যকার ও নাট্য অভিনেতা রসরাজ অমৃতলাল বসুর জন্ম
১৮৯৯ - কলকাতায় প্রথম বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
১৯২৭- প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের জন্ম
১৯৭১- স্বাধীনতা ঘোষণা করল বাংলাদেশ, গঠিত হল অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার
১৯৭২- শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার মুথাইয়া মুরলীধরনের জন্ম
১৯৭৪ - ইংরেজ গায়িকা, অভিনেত্রী ও ফ্যাশন ডিজাইনার ভিক্টোরিয়া বেকহ্যামের জন্ম
১৯৭৫- ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের মৃত্যু
১৯৮৩- এস এল ভি-৩ রকেটের সাহায্যে ভারত মহাকাশে পাঠাল দ্বিতীয় উপগ্রহ ‘রোহিনী’ আর এস ডি-২



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৩ টাকা ৮৪.১২ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৫ টাকা ১০৫.১৬ টাকা
ইউরো ৮৭.৪৮ টাকা ৮৯.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৩,৮৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,২০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭০,৫৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৩,৫০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৩,৬০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৪ বৈশাখ, ১৪৩১, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪। নবমী ২৪/৫০ দিবা ৩/১৫। অশ্লেষা নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৫/১৮/৩৩, সূর্যাস্ত ৫/৫৩/৫৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ৯/২৯ গতে ১১/১১ মধ্যে পুনঃ ৩/২৩ গতে ৫/৪ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪০ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ১/৩০ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ১/৪২ গতে ৩/২৩ মধ্যে। রাত্রি ৮/৫৬ গতে ১০/২৮ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৮ গতে ১০/২ মধ্যে পুনঃ ১১/৩৭ গতে ১/১১ মধ্যে। কালরাত্রি ২/২৭ গতে ৩/৫৩ মধ্যে।  
৪ বৈশাখ, ১৪৩১, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪। নবমী সন্ধ্যা ৫/৩৫। পুষ্যা নক্ষত্র দিবা ৭/৫৫। সূর্যোদয় ৫/১৯, সূর্যাস্ত ৫/৫৫। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৭ মধ্যে ও ৯/২৩ গতে ১১/৭ মধ্যে ও ৩/২৭ গতে ৫/১১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৭ গতে ৯/০ মধ্যে ও ১/২৩ গতে ৫/১৮ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ১/৪৩ গতে ৩/২৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৯/০ গতে ১০/২৭ মধ্যে। কালবেলা ৮/২৮ গতে ১০/৩ মধ্যে ও ১১/৩৭ গতে ১/১২ মধ্যে। কালরাত্রি ২/২৮ গতে ৩/৫৪ মধ্যে। 
৭ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: গুজরাতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ম্যাচ জিতল দিল্লি

10:27:17 PM

আইপিএল: ১৯ রানে আউট সাই হোপ, দিল্লি ৬৭/৪ (৫.৪ ওভার) টার্গেট ৯০

10:14:08 PM

আইপিএল: ১৫ রানে আউট অভিষেক পোরেল, দিল্লি ৬৫/৩ (৫ ওভার) টার্গেট ৯০

10:08:47 PM

জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত এক পরিযায়ী শ্রমিক

10:01:42 PM

আইপিএল: ৭ রানে আউট পৃথ্বী শ, দিল্লি ৩১/২ (২.৪ ওভার) টার্গেট ৯০

09:53:34 PM

আইপিএল: ২০ রানে আউট জ্যাক, দিল্লি ২৫/১ (২ ওভার) টার্গেট ৯০

09:50:47 PM