Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ঝাঁপ
পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়

বাবলু তিনতলার ছাদ থেকে দূরের চার্চের ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে আছে। ঘড়ির কাঁটা ঘুরে চলেছে। সেকেন্ডের কাঁটা ঘুরে ঘুরে বারোটার কাছে যাচ্ছে। আর কয়েকটা মুহূর্ত। তারপর-ই বাবলু ঝাঁপ দেবে। নিজেকে ছিন্নভিন্ন করে শেষ করে দেবে। এখন ছাদের এক কোণায় এসে ও দাঁড়িয়েছে। এখানটাতে রেলিং নেই। কেন নেই কে জানে— এক ডিগ্রি করে ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলেছে। বাবলুর বারবার মনে হচ্ছে ওর জীবনটা আর সবার জীবন থেকে আলাদা হয়ে গেছে। বাড়িতে সব সময় অভাব আর অভাব। ছোট থেকেই ও তাই দেখে এসেছে। ও শুনেছে ওর বাবা এখন খুব অসুস্থ। ঠিকমতো কথা বলতে পারে না। হাঁটতেও পারে না। মনে হয় টাকার অভাবে চিকিৎসাও হয়নি। বাবা একটা কারখানায় চাকরি করত। সেই কাজটা একদিন চলে গেল। ছোট থেকেই বাবলুর পড়ায় মন ছিল না। একটু বড় হতেই তাকে টাকার নেশা পেয়ে বসল। ছোটখাট চুরি দিয়ে শুরু করে ছিনতাই, কেপমারিতে সে হাত পাকাল। তারপর একদিন বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে অন্য স্রোতে গা ভাসাল। একে-ওকে ভয় দেখিয়ে, বখাটে ছেলেদের সঙ্গে মিশে বেশ কিছু টাকা-পয়সাও হাতে এল। যদিও পুলিস এখন ওদের দলটাকে নজরে রাখছে।
কিন্তু ওই দিন ওদের দলটা ওর মা-বাবাকে যেভাবে অপমান করল তাতে বাবলুর চোখ দুটো ঠিকরে বেরিয়ে আসছিল। ইচ্ছে করছিল ওই পেলুর মুখটা এক ঘুষিতে ফাটিয়ে দিতে। ওর মা-বাবা কেমন অসহায়ভাবে তাকিয়ে ছিল। আসার সময় মা একদৃষ্টিতে ওকে দেখছিল। তাহলে মা কি ওকে চিনতে পেরেছে— কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে দ্রুত পায়ে মা ভেতরে ঢুকে গেল।
মিনিট আর সেকেন্ডের কাঁটা বারোর কাছে এসে পৌঁছেছে। চারপাশে শোঁ শোঁ বাতাসের শব্দ। বাবলু চোখ বুজল। মায়ের মুখটা মনে করে উপর থেকে নিজেকে ভাসিয়ে দিল। তলিয়ে যেতে থাকল গভীর অতলে। নীচে তখন ছোট্ট পৃথিবী। মা-বাবাকে ছেড়ে যাওয়া মুক্তির সেই রং পৃথিবীতে লেগে রইল। নীচে পড়ার ঠিক আগের মুহূর্তে পেলুর কথাগুলো মাথায় আসছে—
—বিলে যেটা লেখা আছে সেটাই দিতে হবে।
প্রিয়ব্রত চুপ করে দরজার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকে। খানিক ভেবে জড়ানো গলায় বলে— এত টাকা আমি দিতে পারব না।
—না দিতে পারলে লাফড়া হবে। আর লাফড়া কখন হয় জানেন তো? যেখানে যতটা দেওয়ার আপনি দিচ্ছেন না— বাওয়ালি তখন হবেই—
—আমরা পুলিসে জানাব। জোর-জুলুম করে তোমরা চাঁদা নেবে? কয়েকমাস আগে আমাদের পরিবারে একটা এত বড় ঘটনা ঘটে গেল— তখন তো কাউকে দেখিনি— প্রিয়ব্রতর বউ উমা ঝাঁঝিয়ে ওঠে।
—পুলিস ঢুকলে উল্টে আপনাদেরই বাজেট বাড়বে। তখন—
—একদম ভয় দেখাবে না— এই তুমি ভেতরে যাও তো— তখন কী হবে অ্যাঁ?
—মারধোর খেয়ে হাসপাতালে যাবেন। খচ্চা-ফচ্চা বেড়ে যাবে— আস্ত বাঁশঝাড় কেউ কি আর সেধে বাড়িতে ডাকে? আর এই এলাকায় পুলিস-টুলিসের কোনও ব্যাপার নেই— পুরো এলাকাটাই ডেমোক্রেটিক—
—মাসিমা, একটু এদিক-ওদিক করে টাকাটা দিলেই তো মিটে যায়। শুধু শুধু আর অশান্তি বাড়াবেন না। আর পুজোটা তো আমার আপনার সকলের— ষন্ডামার্কা, কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুলের ছেলেটা চুলগুলো বাঁধতে বাঁধতে বলল।
—অত টাকা আমরা দিতে পারব না। তোমার মেসোমশাই খুব অসুস্থ। তারপর প্রায় বছরখানেক কারখানা বন্ধ। রোজই শুনি একটার পর একটা কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তার ওপর এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল— আমাদের কি আর পুজো আছে?
—কারখানাই তো বন্ধ হয়েছে— পায়খানা তো হয়নি— কারখানা খোলা হতেই হবে কে বলল— ছোটখাট চায়ের দোকান, পান, বিড়ি, গুটখা, তেলেভাজা এসব তো ভালোই চলে। কিছু লোক আছে— কিছু করবে না— শুধু এটা বন্ধ, ও মন্দ, সে গন্ধ— যান, যান টাকাটা আনুন তো—
এই তুই চুপ কর তো— ফালতু ঝামেলা করছিস—
—তোমাদের পরিষ্কার বলে দিই— অত টাকা আমি দিতে পারব না। তোমরা এখন এসো। সামনের রবিবার এসে চাঁদাটা নিয়ে যেও।
—শালা, জং ধরা চিমনি হয়ে পড়ে রয়েছে— আবার পুলিসের ভয় দেখায়— এরপর বাইকবাহিনী এসে ডলা দিলেই সুরসুর করে টাকা বের করে দেবে।
পুরো দলটা সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেল। পিছনের ছেলেটা যেতে যেতে বারবার উমার দিকে তাকাচ্ছিল। মাথায় টুপি, চোখে সানগ্লাস, নাক-মুখ রুমাল দিয়ে বাঁধা। এতক্ষণ উমার ছেলেটার দিকে নজর পড়েনি। কিন্তু এখন ছেলেটাকে দেখেই ওর বুকের ভেতরটা ছ্যাঁৎ করে উঠল। তাড়াতাড়ি দরজা বন্ধ করে ভেতরে চলে এল।
দশাশই চেহারাটা ইলেকট্রিকের তার ছিঁড়ে রাস্তায় আছাড় খেয়ে পড়তেই চারদিকে অন্ধকারের নিস্তব্ধতা নেমে এল। কুকুরগুলো কোনও এক অজানা ভয়ে বা আক্রোশে তারস্বরে চিৎকার শুরু করল। আশপাশের উঁচু ফ্ল্যাটগুলোর জানলা খোলার শব্দ চাপা পড়ল নিস্তব্ধ শরীরের শেষ স্পন্দন। নিঝুম রাতের কালো রাস্তায় পড়ে রইল ছিন্নভিন্ন রক্তাক্ত দেহ।
ভেতরে এসে উমা দেখে প্রিয়ব্রত চোখ বুজে চেয়ারে বসে হাঁপাচ্ছে। অন্য একটা চেয়ার টেনে উমা ওর মুখোমুখি বসল। এখন প্রিয়ব্রতর মনের বেড়া টপকাতে হবে। উমা জানে ওর ভেতরটা এখন প্রবল আক্রোশে ফেটে পড়তে চাইছে। কথা বেশি বলতে পারে না। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে ভীষণ অসহায় বোধ করে। ওর মতো দাপুটে নেতার এই পরিণতি উমা ঠিক মেনে নিতে পারে না। পাশে বসে ওর মাথায় আস্তে আস্তে হাত বোলায়।
প্রিয়ব্রত বসাক গোয়ালবাথানের স্পাইস কারখানার কর্মচারী ছিল। প্রত্যেক শিফটে প্রায় দুশো লোক কাজ করত। হঠাৎ করে একদিন কারখানার গেটে লক-আউট নোটিস পড়ল। তারপর থেকেই জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেল। প্রিয়ব্রত কারখানাটা খোলানোর অনেক চেষ্টা করেছিল। ও ছিল ইউনিয়ন লিডার। নতুন একটা দল তখন ক্ষমতায় এসেছে। নেতারাও প্রায় নতুন। তারই মধ্যে বিভিন্ন ক্ষমতাবান মানুষকে ধরে প্রিয়ব্রত ঠিক মন্ত্রীর কাছে পৌঁছে গেল। সব শুনে মন্ত্রী বলল— এতদিন ধরে যে দল করেছেন সেই দলের ভাব-ভাবনা থেকে বিচ্যুত হয়ে আমার কাছে আসলেন?
—দলীয় ভাবনা নয়। —আমি এসেছি কারখানাটাকে— মানে এতগুলো মানুষের রুটি-রুজি—
—ওদের রুটি-রুজি নিয়ে আপনাকে আর ভাবতে হবে না। এতদিন অনেক ভেবেছেন, এবার আমাদের ভাবতে দিন।
প্রিয়ব্রত বুঝতে পারে— নাঃ, আর হবে না। ওই কারখানা আর খোলানো যাবে না। কিন্তু তাকেও তো এখন কিছু একটা করতে হবে। বাড়ি ফেরার পথে প্রিয়ব্রতর হাত-পা কাঁপতে থাকে। ভরা সংসার। মা শয্যাশায়ী। তার চেয়েও বড় ব্যাপার এখন থেকে প্রতিপদে রাজনৈতিক নাগরদোলায় চাপিয়ে তার সব কিছুর বিচার হবে— তা সে যতই দক্ষ কর্মী হোক।
—কী প্রিয়দা কিছু কি হল? নেপালদা দূরেই দাঁড়িয়েছিল। গালে পাঁচদিনের না কাটা দাড়ি— মেশিনের হাতল ঘুরিয়ে ছেলেকে মানুষ করার স্বপ্নে বিভোর চোখ দুটোয় গভীর আকুলতা—
নাঃ, কিছু হল না। ভরসাযোগ্য মানুষ আর পেলাম কোথায়?
—মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হল না? কী বললেন?
—সেরকম কিছুই বললেন না। ও কারখানা আর খুলবে না। অন্য কিছু চেষ্টা করো।
মাথা নিচু করে ধীর পায়ে প্রিয়ব্রত ঢুকল। নিজের ঘরে এসে রেডিওটা চালিয়ে দিল। এখন প্রায় গোটা দিন রেডিও শুনেই কাটে। ছেলে ছোট থাকতে এ বাড়িতে নিয়মিত রেডিও চলত। বহু পুরনো দিনের রেডিও সেট। কালের নিয়মে তা খারাপও হল। বাড়ির সকলে তখন ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে ব্যস্ত। প্রিয়ব্রত কখনও রেডিও সেটটাকে হাতছাড়া করেনি। প্রথম দিকে উমাও রেডিও শুনত। পরের দিকে বলত— এ গান শোনা আমার পোষাবে না— এ তো গানের চেয়ে কথা বলে বেশি। পুরনো কথা ভাবতে ভাবতে প্রিয়ব্রত’র ক্লান্ত মুখে ম্লান হাসি খেলে যায়। রেডিও রেডিওর মতো চলতে থাকে। প্রিয়ব্রত ভাবে এতকিছু পরিবর্তনের মধ্যেই ধীরে ধীরে বাসা বাঁধতে চলেছে অপরিবর্তন।
—কী ব্যাপার— তুমি কখন এলে— রেডিওটা একটু বন্ধ কর তো— কাল সারা রাত ছেলে ফেরেনি—
—সে কী? কোথায় গেল? কিছু বলেনি তোমাকে?
—না, যাও একটু খোঁজ-খবর কর— আমার খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে। যা সব বন্ধু-বান্ধব জুটিয়েছে—
ক্লান্ত শরীরটাকে টেনে-হিঁছড়ে প্রিয়ব্রত উঠে পড়ল। সারাদিন-সারারাত খুঁজেও কোথাও পাওয়া গেল না। নিখোঁজ ছেলের চিন্তায় উদ্বেগ বেড়ে চলল। পাড়া, ক্লাব, স্টেশন, হাসপাতাল, অলি-গলি সব হল— কিন্তু ছেলে বাড়ি ফিরল না। ছেলের চিন্তায় প্রিয়ব্রত তখন দিশেহারা। ছেলেটা একটু বখাটে হয়ে গিয়েছিল। সারাদিন শুধু টাকা-টাকা করত। দু-একবার ফেল করে কোনওরকমে ক্লাস নাইনে উঠল। তারপর ক্লাসেও অনিয়মিত হয়ে পড়ল। একসময় স্কুল থেকে ওকে বের করেও দেওয়া হল। প্রিয়ব্রত ভেবেছিল ওদেরই কারখানায় ওকে ঢুকিয়ে দেবে।
যা হোক, ঘটনার দুদিন পর প্রিয়ব্রত থানায় ডায়েরি করল। ফেরার পথে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি খোঁজ নিয়ে আসার পথে রাস্তায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হল। কিন্তু অভাব-অনটন আর একরাশ চিন্তায় চিকিৎসাটাও ঠিকঠাক হল না। আস্তে আস্তে প্রিয়ব্রত’র কথা জড়িয়ে আসতে লাগল— ডান দিকটা অবশ হয়ে অসাড় হয়ে পড়ল। স্বাভাবিক কথা বলা আর সাবলীল চলাফেরা এখন তার পক্ষে বেশ কষ্টসাধ্য।
আজ শনিবার। কাল সেই ছেলেগুলো আবার আসবে। এদের প্রত্যেককে প্রিয়ব্রত চেনে। সবাই এলাকার বখে যাওয়া ছেলে। উমা বলে—কাল তো ওরা আবার আসবে— কী করবে?
—কী আর করব? প্রিয়ব্রত’র জড়ানো গলায় একরাশ হতাশা— যা তার ভেতরে ভয়ানক অন্ধকার ঢেলে দিয়েছে। নিষ্পলক চোখ দুটো যেন কোথাও আশ্রয় না পেয়ে দৃষ্টিহীন। ঠিক সেই সময় দরজার কলিং বেলের শব্দ। উমা এসে দরজা খুলে দিল।
—কাকে খুঁজছেন?
—আমরা থানা থেকে আসছি। বাবন কে হয় আপনার?
—কোনও খোঁজ পেলেন তার? উমা উদ্‌গ্রীব হয়ে ওঠে। এতদিনের অন্ধকার পেরিয়ে যেন এক চিলতে আলোকধারী আগন্তুক হাজির।
—সে আপনাদের কে হয়— বলুন—
—ও আমাদের ছেলে— আসুন না, ভেতরে এসে বসুন— ছেলের খোঁজে উমার যেন আর তর সয় না।
—শুনলাম আপনার ছেলে চাঁদার নামে এলাকায় জুলুমবাজি চালাচ্ছে। ইমিডিয়েট ওকে থানায় দেখা করতে বলবেন। নইলে কিন্তু আপনাদের তুলে নিয়ে যাব।
—কিন্তু আমাদের ছেলে তো নিখোঁজ। প্রায় আট মাস হতে চলল। থানায় আমরা ডায়েরিও করেছি। তার নম্বর আমাদের কাছে আছে। একটু দেখুন না স্যার— ওকে যদি আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারেন— আমাদের ছেলে ওরকম নয়। উমার হাত-পা কাঁপতে থাকে, বোবা ধড়ফড়ানি বুকে তুফান তোলে।
—সাজিয়ে-গুছিয়ে ভালোই তো আটঘাট বেঁধে নেমেছেন। পুলিসকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। যেটা বললাম মাথায় রাখবেন।
ওরা চলে গেল। উমার গলা এমনভাবে বুজে এল, শত চেষ্টাতেও আর কথা বলতে পারল না। অর্ধমূর্ছিতের মতো নির্বাক হয়ে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
আজ রবিবার। ওরা আসবে। সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মাঝে মাঝেই একটা উন্মত্ত হাওয়া এসে দরজা-জানলাগুলোয় ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। সকাল থেকেই উমা ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছে। এই তারা এল বলে— এক্ষু঩নি বোধহয় কলিং বেল বেজে উঠবে। প্রিয়ব্রত অদ্ভুত নির্লিপ্ত। একমনে বাঁ হাতে চায়ের কাপ নিয়ে জানলার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে— যেন ওদের আসার অপেক্ষায়। এদিকে যত সময় যাচ্ছে উমার উদ্বেগ-অস্থিরতা আর উৎকণ্ঠা বেড়েই চলেছে।
—বাড়িতে কেউ আছেন?
উমা চমকে ওঠে। কলিং বেল না বাজিয়ে কে আবার ডাকাডাকি করছে। দ্রুত পায়ে এগিয়ে উমা দরজা খুলে দিল।
—আমি থানা থেকে আসছি। বড়বাবু এক্ষুনি আপনাকে আমার সঙ্গে থানায় যেতে বললেন। আপনি রেডি হয়ে নিন— আমি নীচে অপেক্ষা করছি।
উমা কোনওরকম তৈরি হয়ে নীচে নেমে এল। লোকটা ওকে নিয়ে থানার দিকে চলল। থানায় পৌঁছে বড়বাবু বলল— পেছন দিকে যান। বডিটা দেখে আসুন। যে দৃশ্য দেখে সন্তানের মায়ের বুক ফেটে যাওয়ার কথা— চোখের জল বাধহীন হয়ে নেমে আসার কথা— তার কোনওটাই উমার হচ্ছে না। নির্বোধের মতো জড় শরীর-মনে কোনও অনুভূতি আর কাজ করছে না। লণ্ডভণ্ড বাবলুর শরীরটা ঘিরে রক্ত-মাংস মেদ মজ্জার গন্ধে বড় বড় মাছিগুলো ওড়াউড়ি করছে। উমা ডান হাত নাড়িয়ে মাছিগুলোকে তাড়ানোর চেষ্টা করল। তারপর মাথাটা আস্তে আস্তে বাবলুর বুকের উপর রাখল।
অলংকরণ : সুব্রত মাজী
20th  October, 2019
বীরবল
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

 বাদশাহের মর্জিতেই তাকে নামানো হয়েছে লড়াইতে, কিন্তু তাকে কিছুতেই বাগ মানাতে পারছে না তার পিলবান। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে প্রতিদ্বন্দ্বী হাতিকে ছেড়ে তাড়া করল এক জওয়ান লেড়কা দর্শককে, সেই লেড়কা দ্রুত পালিয়ে ঢুকে গেল আম-আদমির ভিড়ের মধ্যে। হাতিটা তখন দূর থেকে দেখছে বীরবরের লাল বেনিয়ান পরা চেহারাটা। বিশদ

17th  November, 2019
 বন্ধুত্ব
তপনকুমার দাস

দীনবন্ধুর যে ক’জন বন্ধু ছিল, তাদের সবাই প্রায় হারিয়ে গেছে। কলেজবেলার পর চাকরিবেলার শুরুতেই হারানোর পালা শুরু হতে হতে সংসারবেলায় পৌঁছে একেবারে ফেড আউট হয়ে গেছিল যাবতীয় বন্ধুত্ব। একে অপরকে ভুলে যেতে যেতে একসময় গল্পের উঠোনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল সব বন্ধুত্ব।
বিশদ

17th  November, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
পুষ্করের সাবিত্রী মা
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় 

পর্ব-৩৫

রাজস্থান ভ্রমণে এসে পুষ্কর তীর্থে স্নান করে ভারতের একমাত্র ব্রহ্মা মন্দিরে পুজো দিয়ে সাবিত্রী পাহাড়ে সাবিত্রী মাতাকে দর্শন করেন না এমন যাত্রী নেই বললেই চলে।
আজমির থেকে পুষ্করের দূরত্ব ১১ কিমি।  
বিশদ

10th  November, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়  

৩৫

ঔপন্যাসিক উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসে ‘বিচিত্রা’ পত্রিকা প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হল এক নতুন যুগের। জন্ম হল উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠানের। সম্পর্কে তিনি ছিলেন কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মামা।   বিশদ

10th  November, 2019
সম্পর্ক
সম্পন্ন চৌধুরী 

রাত প্রায় বারোটা
মুষলধারে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। থামার কোনও লক্ষণই যেন নেই। কিন্তু গরমটা কিছুতেই যেন কমছে না। মানে বৃষ্টিটা আরও হবে। গোটা বাড়িটাই প্রায় জলে ভরে গেছে। ঘরের ভিতরেও জল ঢুকবে ঢুকবে করছে। 
বিশদ

10th  November, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
দেশনোকের করণীমাতা
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়

পর্ব-৩৪

দেশনোকের করণীমাতার প্রসঙ্গে এবার আসা যাক। ইনি রাজস্থানের মরু অঞ্চলে রাজ পরিবারের আরাধ্যা দেবী। করণীমাতার মন্দির হচ্ছে পৃথিবীবিখ্যাত মন্দির, অসংখ্য ইঁদুরের জন্য এই মন্দির ‘চুহা মন্দির’ নামে প্রসিদ্ধ। সেবার রাজস্থান ভ্রমণের সময় মুলতানি ঘাঁটির কোলায়েতে গিয়েছিলাম কপিলমুনির মন্দির ও পবিত্র সরোবর দেখতে।  
বিশদ

03rd  November, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

৩৪

সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে। জমে উঠল বন্দ্যোপাধ্যায় দম্পতির সুখের সংসার। আর সেই দৃশ্য দেখে বিধাতা বোধহয় একটু মুচকি হেসেছিলেন, হয়তো মনে মনে বলেছিলেন, বিভূতিভূষণ, সুখ নয় , তোমাকে আমি পৃথিবীতে পাঠিয়েছি সৃষ্টি করার জন্য, সুখভোগের অধিকারী তুমি নও!  
বিশদ

03rd  November, 2019
পরম্পরা
বিনতা রায়চৌধুরী 

প্রাণগোপাল সরকার জমিদার না হলেও গ্রামের একজন অত্যন্ত সম্পন্ন গৃহস্থ। বিঘের পর বিঘে জমিতে তাঁর ধান চাষ হয়। ধান-চালের ব্যবসায়ে প্রাণগোপাল সবদিক থেকেই সার্থক। তারসঙ্গে সে সৎ-ও। তাঁর অধীনস্থ কোনও কর্মচারীকে সে ঠকায় না।  
বিশদ

03rd  November, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
সিদ্ধপীঠ রাজরপ্পা
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়

 এবার ছিন্নমস্তা দেবীর কথা বলি। দশমহাবিদ্যার ভয়ঙ্করী রূপের প্রকাশ ছিন্নমস্তায়। এটি হল মহাদেবীর অন্তর্মুখী রূপ। এঁর স্বরূপ অনুধাবন করার শক্তি একমাত্র সাধকের পক্ষেই সম্ভব। ছিন্নশির হয়েও ইনি জীবিত থাকেন। চতুর্দিকে এঁর বসন। অর্থাৎ ইনি দিগবসনা। বিশদ

27th  October, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

 কিন্তু সুখ দীর্ঘস্থায়ী নয়। পঞ্চাননবাবু মারা যাওয়ার আগে জাহ্নবীদেবী এক কন্যা সন্তানের মাতা হন। কিন্তু পিতার অকাল মৃত্যুর দায় বহন করতে হয়েছিল সদ্যোজাত সেই কন্যা সন্তানকে। তাকে চট পেতে শুইয়ে রাখা হতো বাড়ির বাইরের নারকেল গাছের তলায়। স্বভাব কবি বিভূতিভূষণকে নাড়িয়ে দিয়েছিল এই দৃশ্য। বিশদ

27th  October, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়

 নদীর বালুচরে পথ চলতে চলতে হঠাৎই একটি বালি সংগ্রহকারী লরি এসে পড়ায় আমরা তারই সাহায্যে এগিয়ে গেলাম অনেকটা পথ। এইভাবে বিশেষ একটি জায়গায় যাওয়ার পর যেখানে লরি থেকে নামলাম সেখান থেকে একই নদী-কাঠের গুঁড়ির সাঁকোয় কতবার যে পার হলাম তার ঠিক নেই। বিশদ

20th  October, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

 এই দাম্পত্য জীবন কিন্তু মোটেই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ঠিক ষোলো মাসের মাথায় পুজোর পর পরই একই দিনে আগে মা কামিনী দেবী এবং তার কিছুক্ষণ পরেই চলে গেলেন মেয়ে গৌরী দেবী। মহামারীর আকারে সেবার বাংলায় প্রবেশ করেছিল ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো এক জ্বর। সেই জ্বরে কিছুক্ষণের তফাতে একই পরিবার থেকে অকালে ঝরে গেল দুটি প্রাণ। বিশদ

20th  October, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
মণিকূটের বিগ্রহ, পর্ব-৩১
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় 

তিব্বতের লোহিত সরোবর থেকে বয়ে আসা সাংমা (ব্রহ্মপুত্র) নদের তীরে পাহাড় নদী ও নানা দেব-দেবীর মন্দিরে ভরা এক অন্য তীর্থভূমির কথা এবার বলব। তার কারণ স্থানটি গুয়াহাটি শহর থেকে মাত্র ৩২ কিমি দূরে— হাজো। এটি হল নানা ধর্মসমন্বয়ের ক্ষেত্র। অনেকেই কিন্তু এই স্থানটির সম্বন্ধে পরিচিত নন। 
বিশদ

13th  October, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

৩১

‘মরণ রে,
তুঁহুঁ মম শ্যাম সমান ।
মেঘবরণ তুঝ, মেঘজটাজুট,
রক্ত কমলকর, রক্ত অধরপুট, 
তাপবিমোচন করুণ কোর তব বিশদ

13th  October, 2019
একনজরে
সংবাদদাতা, কান্দি: সোমবার সকালে বড়ঞা থানার বিপ্রশেখর গ্রামে এক প্রৌঢ়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম বাদল দত্ত(৫২)। তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।   ...

মাইসুরু, ১৮ নভেম্বর: রবিবার মাইসুরুতে একটি বিয়েবাড়িতে যোগ দিতে গিয়ে আততায়ীর হামলায় গুরুতর জখম হলেন কর্ণাটকের কংগ্রেস বিধায়ক তনভির সাইত। তাঁর উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এক ব্যক্তি। ...

সংবাদদাতা, ইসলামপুর: সোমবার সকালে উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখর থানার বেলন গ্রাম পঞ্চায়েতের পটুয়া এলাকায় ধান খেতে এক অজ্ঞাতপরিচয়ের যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।   ...

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দু’টি পরীক্ষার মধ্যে দু-একদিন করে ছুটি থাকবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৩৮: সমাজ সংস্কারক কেশবচন্দ্র সেনের জন্ম
১৮৭৭: কবি করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম
১৯১৭: ভারতের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জন্ম
১৯২২: সঙ্গীতকার সলিল চৌধুরির জন্ম
১৯২৮: কুস্তিগীর ও অভিনেতা দারা সিংয়ের জন্ম
১৯৫১: অভিনেত্রী জিনাত আমনের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭০.৮৪ টাকা ৭২.৫৪ টাকা
পাউন্ড ৯১.০৬ টাকা ৯৪.৩৪ টাকা
ইউরো ৭৭.৮৫ টাকা ৮০.৮১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩৮,৫৮০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৬,৬০৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩৭,১৫৫ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৪৪,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৪৪,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২ অগ্রহায়ণ ১৪২৬, ১৯ নভেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, সপ্তমী ২৪/১১ দিবা ৩/৩৬। অশ্লেষা ৩৮/৩৮ রাত্রি ৯/২২। সূ উ ৫/৫৫/২২, অ ৪/৪৮/২৩, অমৃতযোগ দিবা ৬/৪০ মধ্যে পুনঃ ৭/২৩ গতে ১১/০ মধ্যে। রাত্রি ৭/২৬ গতে ৮/১৯ মধ্যে পুনঃ ৯/১১ গতে ১১/৪৯ মধ্যে পুনঃ ১/৩৪ গতে ৩/১৯ মধ্যে পুনঃ ৫/৫ গতে উদয়াবধি, বারবেলা ৭/১৬ গতে ৮/৩৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৩ গতে ২/৫ মধ্যে, কালরাত্রি ৬/২৭ গতে ৮/৫ মধ্যে। 
২ অগ্রহায়ণ ১৪২৬, ১৯ নভেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার, সপ্তমী ১৯/২৬/৫২ দিবা ১/৪৩/৫৬। অশ্লেষা ৩৬/১/৪১ রাত্রি ৮/২১/৫১, সূ উ ৫/৫৭/১১, অ ৪/৪৮/১৯, অমৃতযোগ দিবা ৬/৫০ মধ্যে ও ৭/৩০ গতে ১১/৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/২১ মধ্যে ও ৯/১৪ গতে ১১/৫৪ মধ্যে ও ১/৪১ গতে ৩/২৮ মধ্যে ও ৫/১৪ গতে ৫/৫৮ মধ্যে, বারবেলা ৭/১৮/৩৬ গতে ৮/৪০/১ মধ্যে, কালবেলা ১২/৪৩/১৫ গতে ২/৫/৪০ মধ্যে, কালরাত্রি ৬/২৭/৪ গতে ৮/৫/৪০ মধ্যে।
২১ রবিয়ল আউয়ল  

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল  
মেষ: প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বৃষ: বিদ্যার্থীরা শুভ ফল ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে 
১৮৩৮: সমাজ সংস্কারক কেশবচন্দ্র সেনের জন্ম১৮৭৭: কবি করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম১৯১৭: ...বিশদ

07:03:20 PM

দিল্লিতে ভূমিকম্প 

07:07:50 PM

বুধেরহাটে অ্যাসিড খেয়ে আত্মঘাতী বধূ 
স্বামীর সঙ্গে অশান্তির জেরে অ্যাসিড খেয়ে আত্মঘাতী হলেন এক বধূ। ...বিশদ

06:22:42 PM

মালদহের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 

06:13:00 PM

বিধানসভায় পালিত হবে সংবিধান দিবস 
২৬ এবং ২৭ নভেম্বর রাজ্য বিধানসভায় পালিত হবে সংবিধান দিবস। ...বিশদ

03:59:00 PM