Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

কাজীর কালীবন্দনা
সায়ন্তন মজুমদার

ভয়ে হোক বা ভক্তিতে, মা কালীর মধ্যে কিন্তু একটা ব্যাপার আছে। যে কারণে কেরেস্তানি কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি সাহেবের লেখা পদেও ‘শ্যামা সর্বনাশী’কে পাওয়া যায়, শোনা যায় ‘জয় কালীর ডঙ্কা’। আবার ত্রিপুরার নারায়ণপুরের মৃজা হুসেন আলিকে জয় কালীর নামে যমকেও তাচ্ছিল্য করতে দেখি। তাঁকে গাইতে শুনি—‘আমি তোমার কি ধার ধারি,/ শ্যামা মায়ের খাস তালুকে-বসত করি।’ বাংলার কবি নজরুল সেই উত্তরাধিকারকে শুধু বহন করেননি তাতে ‘আরো আরো প্রাণ’ জুগিয়েছিলেন।
সৃষ্টিসুখে উল্লসিত কাজী নজরুলকে প্রায় একশো বছর আগে জেলে যেতে হয়েছিল— একটি কবিতা লেখার জন্য। ১৯২২ সালের ৯ আশ্বিন ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় সেই ‘আনন্দময়ীর আগমনে’। মূলত দুর্গামুখী সৃষ্টি হলেও দেবী-মুখোশের অন্তরালে কালীর মুখও আমরা অনায়াসেই দেখতে পেয়ে যাই। ‘ম্যায় ভুখা হুঁ-র রক্তখেপী ছিন্নমস্তা আয় মা কালী’। কালী যেমন বাঁধনছাড়া, তেমনই এই কবিতাটিও কোনও নির্দিষ্ট বইয়ের বাঁধনে বাঁধা পড়েনি। সেটি আজও কাজীর রচনাসাগরে অগ্রন্থিত হয়েই রয়ে গিয়েছে।
১৯৩২ সালে প্রকাশ পায় নজরুলগীতির পঞ্চম সংকলন ‘সুর-সাকি’। এর ৯৮টি গানের মধ্যে ৭১ নম্বর গানটি গীতিকার রচনা করেছিলেন সিন্ধু কাফীতে—‘জাগো শ্যামা জাগো শ্যামা’। সেখানে একই অঙ্গে শ্যামা এবং দেশ-মা মিলে গিয়েছিল। দেশের ছেলেদের জাগানোর জন্য শ্যামাকে রণচণ্ডী সাজে জেগে উঠতে বলা হয়েছিল। শ্মশান হয়ে যাওয়া দেশে কবি শ্যামাকে বলেছিলেন শ্মশানকালী হয়ে নাচতে। মায়ের কাছে মুক্ত বায়ু, পরমায়ু প্রার্থনা করে কঙ্কাল ও শবের মধ্যে শিবকে জাগানোর আকুতির পাশাপাশি নিজেদের দুর্দশার জন্য অভিমান প্রকাশ করতেও ভোলেননি।
একই বছরের ১৩ অক্টোবর নজরুলের গানের সাত নম্বর বই ‘বন-গীতি’ প্রকাশিত হয়। তার মধ্যেই ছিল আশাবরী-দাদরায় লেখা সেই বিখ্যাত গান ‘আমার কালো মেয়ের পায়ের তলায়/ দেখে যা আলোর নাচন।’ কবির সেই মেয়ের পায়ের তলায় শিব বুক পেতে দিয়েছেন। তার আঁধার কোলে শিশু রবিশশী দোল খেয়ে চলে। সেই কালিমার সঙ্গে শ্যামার নীলিমা এক হয়ে গিয়ে সুনীল সাগর ও আকাশের মধ্যেও তার রূপের ঝলক উথলে পড়ে। সহজ কথায় ও সুরে গভীর তত্ত্বের পরিবেশনেও তিনি ছিলেন অনবদ্য। তাই এলোকেশীর চুল রাত্রির প্রতীক হয়ে যায়। তার মধ্যে সেই কালো পাগলি মেয়েকে আমরা দিনের চিতা জ্বালাতে দেখি। সমগ্র কালকে যিনি ঢেকে রাখেন তাঁকে ঢাকার কাপড় পাওয়া যায় না বলেই কালী দিগ্বসন তথা দিগম্বরী।
এর পরের গানটিতেই মজার ছলে গীতিকার গেয়ে উঠেছেন ‘শ্যামা তুই বেদেনীর মেয়ে/(তাই) মাঠে ঘাটে বেড়াস ধেয়ে।’ কৈলাসে আগুন জ্বেলে কবির ফর্সা মেয়ে গৌরী, হয়ে গিয়েছে কালী। শিবকে পাশে নিয়ে অন্নপূর্ণা রূপ ভুলে শিবের উপর দাঁড়িয়েছে সেই মেয়ে। গাঁজাখোর শিবের খপ্পরে পড়ে রাজার মেয়ে যেন উদ্ভট খেয়ালবশত হয়ে গিয়েছে ‘হাবা মেয়ে’। চণ্ডমুণ্ডনাশিনীকে ব্যঙ্গ করে নজরুল খেয়েদেয়ে কাজ না থাকা, দানব ধরে বাঁদর নাচানো মেয়ে বলতেও কসুর করেননি। এই বইয়ের প্রায় শেষের দিকে রয়েছে ‘রাখো রাখো রাঙা পায়’। শুনে মনে হবে শ্যামার পায়ের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আদপে তা নয়। সেখানে শ্যামা নয়, কবির বন্দনা লাভ করেছেন শ্যামরায় কৃষ্ণ।
১৯৩৪ সালে পঁচানব্বইটি গান নিয়ে ‘গানের মালা’ বইটি গেঁথেছিলেন কাজী। সময়টা ছিল কালীপুজোর মাস—কার্তিক। এটি সুস্থ অবস্থায় সংকলিত তাঁর শেষ গানের বই। ‘দূর দ্বীপবাসিনী’, ‘মোমের পুতুল মমির দেশের’ ইত্যাদি জনপ্রিয় গানগুলি এখানেই রয়েছে। কালী বিষয়ক ‘কে পরালো মুণ্ডমালা’ গানটি ভূপালী-দাদরা রাগতালে রচিত। এখানে একগুচ্ছ বিরোধী কথা তুলেও শেষ পর্যন্ত তিনি শ্যামা মায়ের হয়ে ওকালতি করেছিলেন। কবির মতে, গলায় ছিন্নমুণ্ডর মালা থাকলেও শ্যামার পদতলে রয়েছে সহস্রদল জীবনপদ্ম। গায়ের রং কালো হলেও তাঁর হাসিতে লুকিয়ে থাকে দিনের আলো। অসুরদের কাছে ভয়ঙ্করী হলেও ভক্তের কাছে তিনি অভয়া।
‘নাচে নাচে রে মোর কালো মেয়ে’ গানে নজরুলের চোখে দেখা একটি ঐতিহ্যবাহী মন্দিরের কালীমূর্তির প্রতিচ্ছবি যেন ধরা পড়ে। মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তবর্তী লালগোলা রাজবাড়ির শৃঙ্খলিতা রাজরাজেশ্বরী নৃত্যকালী মূর্তি। নজরুল জীবনে গুরুদেব বলে যাঁকে মেনেছিলেন, সেই বরদাচরণ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে যেতেন। সেখানকার কালী যেন নীচের দুই হাত জোড় করে তালি দিয়ে নেচে চলেন। এই গানেই রয়েছে ‘ছন্দ-সরস্বতী দোলে পুতুল হয়ে মায়ের কোলে’। সেই কালীর পায়ের কাছে পুতুলের মতো কয়েকটি মূর্তি দেখা যায়, যার মধ্যে একটির গায়ের রং সরস্বতীর মতোই সাদা। এর পরেই থাকা ‘মাতল গগন-অঙ্গনে ওই’ গানে শ্যামা মায়ের পা দু’খানির দুই নূপুরের একটি হয়েছে সৃষ্টি, অপরটি প্রলয়।
পরবর্তী তিনটি গানে কবি ব্যবহার করেছেন শ্মশানের অনুষঙ্গ। প্রথমটিতে শান্ত হাসি নিয়ে পরিশ্রান্ত ভদ্রকালীকে শ্মশানে ঘুমিয়ে থাকতে দেখি। পাশে বসে শিব বিষাণ ফেলে বাঁশি বাজিয়ে চলেছেন। ঘুমন্ত মায়ের কোলে শান্তিতে নিদ্রিত বিশ্বভুবনের দোলন দেখে কবির মনোবনে পাঁচমিশালি ফুল যেন ফুটেই চলেছে। দ্বিতীয়টিতে কবির মধ্যে এক মেয়ের বাবা যেন ভর করেছেন। কন্যার দুর্গতির জন্য তিনি জামাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। সতীন গঙ্গাকে মাথায় করে রাখার ফলে মেয়ে অভিমানে শ্মশানবাসিনী হয়েছে, চিতার ছাই মেখে তার রূপের ডালি হয়ে গিয়েছে ম্লান, ভৈরব সঙ্গতে তিনি হয়েছেন ভৈরবী। আবার এসব ঘরের কথা নজরুল ছাড়া অন্য কেউ বললে কবি কিন্তু তাদের স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন—‘মুখে তাহার পড়ুক কালি/মাকে কালো বলে যে দেয় গালি।’ কাজী হয়েও পুজোর কাজকর্মও কবি যে ভালোভাবে জানতেন, তা গানটি শুনেই বোঝা যায়। নিত্য সূর্যের প্রদীপ জ্বেলে দেবীর আরতি করা হয়েছে গানে। বইয়ের পঞ্চাশ নম্বর গানটিতে বিষগেলা নীলকণ্ঠের কাছে ‘আনন্দেরই নন্দিনী’ রূপে চার হাতে চার যুগকে নাচতে নাচতে এগিয়ে নিয়ে চলা মেয়েকে বেঁধেছেন তিনি।
‘চরণ শোভে অরুণ আলোর/লাল জবায়।’—উপরের শেষ গানটিতেই কবি বলেছিলেন। ১৯৬৬ সালে সেই ‘রাঙা জবা’ নামেই তিরাশিটি নজরুলগীতির একটি বই প্রকাশিত হয়। প্রকাশ কালে গানের সংখ্যা ছিল একশো। অসুস্থতার জন্য তখন কবি বাকবুদ্ধি-চেতনার সকল সীমা ছাড়িয়ে চলে গিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে রাঙা জবাকে কেন্দ্র করে ১৯৪০ সালের জুন মাসে অসুস্থতার প্রাক্কালে লেখা দু’টি গানের কথা বলতেই হয়। প্রথমটিতে ‘রাঙা জবার বায়না ধরে’ কবির কালো মেয়েকে আমরা কাঁদতে দেখি। পলাশ, অশোক, কৃষ্ণচূড়া এই লাল ফুলগুলি থাকা সত্ত্বেও সে চুল বাঁধবে না। কবি তখন নিজের মনের মধ্যে অনুরাগের রাঙা জবাকে ফুটিয়ে রেখে বাইরে চলে যান জবা ফুল খুঁজতে। শেষে তাঁর সেই মেয়ের পায়েই জবার হদিশ পান। দ্বিতীয় গানটিতে জবা দিয়ে মুক্তকেশীর খোলা চুলে বিনোদবেণী বেঁধে দেবেন বলে কাছে ডাকেন কবি। শেষে কবি বলেন,‘মোর জীবন মরণ বিল্বজবা/দিব মা তোর পায়ে তুলে।’ 
যাই হোক, এবার ফুলের সাজি ভরে নিই ‘রাঙা জবা’য়। বইয়ের নামেই থাকা প্রথম গানে নজরুল ফুলটিকে যেন মানুষ বানিয়ে দিলেন। কোন সাধনায় সে শ্যামা মায়ের চরণতল পেল উতলা হয়ে সে প্রশ্নই করেছেন। এই বইয়ে কালী বিষয়ে কবির নানা দৃষ্টিকোণ ফুটে উঠেছে। কোথাও মনের পশুর পরিবর্তে বনের পশু বলি দিয়ে পুজো করাটা ভুল ছিল বলে মেনে নিয়েছেন। কোথাও জগতের পার্থিব-অপার্থিব যাবতীয় ঋণের বোঝা মায়ের ঘাড়ে ফেলে নিজে মায়ের পায়ের জামিন হয়ে গিয়েছেন। ষষ্ঠ গানে জীবনের জ্বালা-যন্ত্রণার জন্য মাকে অভিযুক্ত করেছেন। সপ্তম গানে ফুটে উঠেছে সন্তানহারা কবির সন্তানকে ফিরিয়ে দেবার প্রার্থনা। পরের গানটিতে মায়ের কাছ থেকে অজস্র আঘাত পেয়েও আবার মাকেই ডাকবেন বলেছেন।
১৮ নম্বর গানে মাতৃসাধক কবি অপর একজন বিখ্যাত কালীসাধক শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন। পরেরটিতে কবিকে পাষাণের দেউলবেদির পরিবর্তে হৃদয়বেদিতে রেখে, ভালোবাসার থালায় ভক্তির ফুল ও স্নেহের ভোগ দিয়ে, কালীকে চোখের জলের অঞ্জলি দিতে দেখি। সহজিয়ার পাশাপাশি কঠিন পথের সাধনা ছাড়া যে মাকে পাওয়া যায় না, তা তিনি বিশ্বাস করতেন। আর ৩৩তম গানে লৌকিকতা ও তাত্ত্বিকতার অপূর্ব মেলবন্ধন। জগৎজুড়ে মায়াজাল বিছিয়েছেন বলে গানের মধ্যে মা হয়ে গিয়েছেন ‘জেলের মেয়ে’। কোনও কোনও জায়গায় শ্যামাই হয়ে যান তাঁর তসবি বা জপমালা।
সাতচল্লিশ নম্বরে থাকা গানে সকল জাতির মানুষের ছোঁয়ায় মায়ের প্রকৃত পুজো হওয়ার কথা শুনতে পাই। কখনও সকল তাপিত সন্তানদের নিয়ে মায়ের কাছে দল বেঁধে যাওয়ার কথা বলেছেন। সংসারের দোলনায় তিনি ষড়রিপুর ভয়ে শিশুর মতোই পড়ে থাকেন। পুতনা রাক্ষসীর বেশে পাপ এসে ভয় দেখালে শুধু মা, মা বুলি আওড়ান। একটি গানে মাকে তিনি বলেছেন ‘হাড়-জ্বালানি মেয়ে’। কখনও মাকে বুকে জড়িয়ে ধরে জ্বলেছেন বলে মাকেই গালি দিয়েছেন। আবার পরক্ষণেই অন্য লোকে মাকে গালি দিলে রাগী মেয়েকে শান্ত করতে হাজির করেছেন জবার ডালি।
কবি শ্যামার কোলে বসে শ্যামের নাম জপতে জপতে কৈলাসে ব্রজধাম দেখতে পান। সংসার-বিষে নজর দেওয়া চোখ মাকে ফেরত নিয়ে নিতে বলেন। অন্ধ কবি শ্যামার হাত ধরে আগামী জীবনের পথ চলতে চান। ৭০তম  গানে সাড়ে তিন হাত জমিনের কবর নয়, তিনি চেয়েছেন চিতার আগুন। পরের গানটিতে উঠে এসেছে খ্যাতিমানদের সমস্যা। যশখ্যাতির মণিহার পরেও নজরুলের বুকের অসহ জ্বালা ফুটে উঠেছে এই গানে। রাজপ্রাসাদে শুয়েও তিনি মাতৃহারা হয়ে শান্তির সন্ধান পাননি। শ্যামা নামের রস ও মধুতে খ্যাতি, বিষয়মদ, রোগ, দুঃখ-শোক সবই শেষ পর্যন্ত তিনি ঝেড়ে ফেলতে পেরেছিলেন। কখনও তিনি মাকে বলেছেন ডাকাত কালী হয়ে খোদ কবির ঘরেই ডাকাতি করতে। কবি নিজেই মশাল হাতে  মায়ের ভৈরবদলের একজন হতে চান। শেষ গানটিতে আবার এক আজব আবদার করে মাকে বলেন ছুটে না বেরিয়ে থির (স্থির) হয়ে বসতে।
কবির মানস-বনে শ্যামলতাকে মঞ্জরিত হতে দেখা যায়। কোনও গানে কবির দেহ হয়ে যায় ধূপকাঠি এবং তাতে শ্যামা নামের আগুন লেগে চারিদিক সুবাসিত হয়। কলকাতা বেতারে চিত্রনাট্যনির্ভর কয়েকটি রচনা রয়েছে বিদ্রোহী কবির। রচনাবলীতে সেগুলি পেয়েছে ‘গোলমেলে’ আখ্যা। যেমন ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত ‘দেবীস্তুতি’,‘হরপ্রিয়া’,  ‘দশমহাবিদ্যা’। সংকলক ছিলেন নিতাই ঘটক। প্রথমটি প্রকাশের ত্রিশ বছর আগে, ১৯৩৮ সালেই নাকি নিতাইবাবুর অনুরোধে সেটি লিখেছিলেন নজরুল। লেখার জন্য গিয়েছিলেন দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দিরে। প্রতিটি গানের সঙ্গে ছিল গদ্যের ব্যাখ্যা। শ্রীশ্রীচণ্ডীতে বর্ণিত দশজন দেবীর মধ্যে ‘মহাকালী’,‘চণ্ডিকা মহাকালী’ দেবীর নামে দুটি গান রয়েছে। মহাকালীর ছিল দশটি করে মাথা, হাত ও পা। গানগুলি পরিবেশনের দায়িত্বে বাসন্তী বিদ্যাবীথির ছাত্রীরা। ব্যাখ্যাগুলি বেতারে পাঠ করার কথা ছিল কবির। 
হরপ্রিয়া বলতে কিন্তু কালীকে বোঝানো হয়নি। ‘দশমহাবিদ্যা’-র একটি গানে শ্যামা নামের ভেলায় চড়ে, ঘাটে ঘাটে সুরের লহর তুলতে তুলতে কালনদীতে ভেসে যেতে দেখা যায় কবিকে। অন্য একটিতে মায়ের ভয়ঙ্করী সাজের জন্য মায়ের কাছেই রাগ দেখান। আরেকটিতে আবার সেই ভয় দেখানোয় কবি যে ভয় পান না, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। শেষ গানে নিজের ‘প্রথম পূজার ফুল’ শ্যামার পায়ে দিয়ে আশ্রয় চেয়েছেন মায়ের কাছেই।
এছাড়াও নজরুলের কালীবন্দনার সাক্ষী হয়ে আছে কুড়িটিরও বেশি গান। ‘সরলা’ নামের একটি রেকর্ড নাটকে ব্যবহৃত হয়েছিল মাত্র চার লাইনে লেখা ছোট্ট গান—‘ভবানী শিবানী কালী করালী মুণ্ডমালী/...প্রসীদ বরদা মাগো চরণে আহুতি ঢালি।’ এটিই সম্ভবত কালী বিষয়ক ক্ষুদ্রতম নজরুলগীতি।
একটি গানে (‘আমার হাতে কালী’) নজরুল নিজেকে ছোট্ট শিশুরূপে তুলে ধরে কালিমাখার আড়ালে তাঁর কালীমুখী মনকেই বোঝাতে চেয়েছিলেন। কালীর বর্ণ ছাড়া তাঁর আর কোনও বর্ণপরিচয় হয়নি। কারণ ‘ম’ বলতে শ্যামা ও ‘ক’ বলতে কালীকেই বোঝেন তিনি। একটিতে কালি পেলে নিজের সাদা মনের পদ্মপাতায় শুধু কালী নাম লিখবেন বলেছেন। সুযোগ পেলে মায়ের কালো রূপের আকাশে তিনি ময়ূরের মতো পেখম তুলে নাচতে, কালো দুঃখের কপালে একফালি চাঁদ হতে পারতেন। ‘(তুই) কালী সেজে ফিরলি ঘরে’ গানে কালী ‘আলোর দীপালি’ জ্বেলে হয়ে গিয়েছেন সকলের দেশমাতা। দেশবাসীর ঘুম ভেঙে গিয়ে এখন তারা শুধু ‘আলোর পারে যে মা থাকে’ তাঁর জন্য কেঁদে চলেছেন। এই একই লাইন দিয়ে শুরু করে পরে অন্য কথা বসিয়েও ভিন্ন গান লিখেছিলেন নজরুল। যেখানে অন্য সন্তানদের শ্যামা ধরলে কবি রেগে যেতেন। কারণ কবি তো সেই ছোটতে মাকে ত্যাগ করেছিলেন। তাই তাঁর মা’তো এখন একজনই—কালী মা। তিনিই তাঁর মনোবাঞ্ছা কল্পতরু। তাঁর ছায়ায় গেলে চতুর্বর্গ ফল পাওয়া যায়। গানে উঠে এসেছে দেবীর বালিকাবেশে রামপ্রসাদের বেড়াবাঁধার প্রসঙ্গ। কিন্তু শেষে বহু বাসনা ছেড়ে শুধু খালি হাতে তালি দিয়ে কালিকাকেই চেয়েছেন কবি। অন্য একটি গানে আর চোর হয়ে শ্যামার সঙ্গে কানামাছি না খেলে একবার আলতো অর্থাৎ বুড়িছোঁয়া ছুঁয়ে ভব যন্ত্রণা শেষ করার আর্জি জানিয়েছেন।
একটি গানে কবি মায়ের কাছেই জানতে চেয়েছেন যে কোন ফুলে মায়ের পুজো সার্থক হয়। কারণ তাঁর রক্তজবার অঞ্জলি বিফলে গিয়েছে। সেই প্রসাদী ফুলের সন্ধান পাওয়া যায় অন্য একটি গানে। সেখানে কালী নামের ফুলের ডালি মাথায় নিয়ে কবি বলেন যে সেই ফুল বুকে ধরলে দুখের সাগর পার হওয়া যায়। একটি গানে লাল জবার মাধ্যমে কালীপুজো প্রসঙ্গে কবি গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজোর প্রবচন ব্যবহার করেছেন।
গানে গানে কালীপুজোর আগের রাতে কৃষ্ণা-চতুর্দশীতে দেবীকে পূর্ণচাঁদের জ্যোতি দেখানোর অনুরোধ করেছেন বিদ্রোহী। কালো মেঘ, কালো রাত্রির মতো মায়ের সঙ্গে পথে পথে ভোলানাথকে খুঁজতে চেয়েছেন। ‘নৃত্যকালী শংকর সঙ্গে নাচে’ গানে সোহম শিবের সঙ্গে কবি হয়ে গিয়েছেন একাত্ম। ‘মাকে আদর করে কালী বলি’ গানে বিরোধাভাস অলংকার ব্যবহারের মাধ্যমে বলেছেন, ‘সে সত্যি কালো নয় রে।’ মায়ের গলার মুণ্ডমালাকে তিনি কুন্দমালা মনে করেন, কালো পায়ের নখে দেখতে পান চাঁদমালাকে। মা কাউকে যদি মেরেও ফেলেন তাকেও মালা করে বুকে ধরে রেখে দেন, ‘তামসিকও যায় রে তরে (মাকে) তামসী যে কয় রে।’ কিছু গানে তিনি কালী ও কৃষ্ণকে এক করে দিয়েছেন। ‘শ্যামা বলে ডেকেছিলাম, শ্যাম হয়ে তুই কেন এলি?’ গানে শ্যামা কৈলাস থেকে বৃন্দাবনে চলে গিয়েছেন শ্যামকিশোর হয়ে, রক্তজবায় তখন প্রেমচন্দন।
কোথাও দেবী হয়েছেন কবির হৃদপিঞ্জরের কালো পাখি, চোখের নয়নতারা। বিদ্রোহী যে ধর্মীয় শৃঙ্খলকে লোপাট করেছিলেন তার প্রমাণ কালীগানের একটি কলি—‘মা, কবে দেখব সে নাচ অগ্নিশিখায় আমার শবে চিতার কূলে।’ এই গানটির কথা ও ছত্রবিন্যাস ভেঙে দিয়ে আরও একবার নতুন করে লিখেছিলেন তিনি। শুধুমাত্র শেষ কথাটি দিয়েছিলেন বদলে। ‘আমার’ জায়গায় এসেছিল ‘আমরা’।
১৯৫২ সালে নজরুলের জন্মদিনে, কবির গানের একটি বই বের হয়—‘বুলবুল: দ্বিতীয় খণ্ড’। প্রকাশক ছিলেন তাঁর সহধর্মিনী প্রমীলা দেবী ইসলাম। সেখানে রবীন্দ্রনাথের মতোই দেবী কালিকার দেওয়ালি উৎসবকে প্রিয়ার সঙ্গে মিলিয়ে বিদ্রোহীর একটি গান ছিল—‘রূপের দীপালি-উৎসব আমি দেখেছি তোমার অঙ্গে।’ এর সঙ্গে আলোচিত হতেই হবে একটি প্রবন্ধ। বিদ্রোহী কবিরূপে সবার মধ্যে জনপ্রিয় হলেও মনে রাখতে হবে যে তাঁর সাহিত্যচর্চার হাতেখড়ি হয় ‘বাউন্ডেলের আত্মকাহিনী’ গল্পের মাধ্যমে। আবার তিনিই জেলে বসে ‘রাজবন্দীর জবানবন্দি’ নিবন্ধ লিখে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে হাকিমের সামনে পাঠ করেছিলেন। কালীপুজোর উৎসবের অনুষঙ্গে ৩ কার্তিক বা ২০ অক্টোবর ১৯২২ সালের ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় ‘দেয়ালী-উৎসব’ নামে লিখেছিলেন একটি সম্পাদকীয়। যদিও সেটি তাঁর নামে প্রকাশিত হয়নি। সেবার দীপাবলিতে বাঙালির ঘরে ঘরে আগুন এবং শব্দের ধুম দেখে কিন্তু আনন্দের চেয়ে কষ্টই বেশি পেয়েছিলেন বিদ্রোহী। কারণ তাঁর মতে এই আগুনবাজি মহরমের লাঠিখেলার মতো নিছক অভিনয় ছাড়া অন্য কিছু নয়। মিথ্যার আস্ফালন ত্যাগ করে তিনি শুধুমাত্র সত্যের আঘাত সহ্য করে বিদ্রোহকে জাগাতে চেয়েছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে বাঙালি শেষবার প্রকৃত দীপালিকা উৎসব পালন করেছিল। মিথ্যায় পর্যবসিত বাঙালির এই শক্তিপুজোর সময় কবি মনে করিয়েছেন খাঁটি কয়েকটি কথা—‘যে দেবীর পূজায় আজ এই দেয়ালি উৎসব করছ, সে বেটি সত্য আগুন জ্বালিয়েছিল অত্যাচারী অসুরের রাজ্যে।’ বাঙালি মেয়ে-মা-বউমাদের দ্রোহাগ্নি মন্ত্রে দীক্ষিত করে নজরুল সর্বাত্মক বিপ্লবের আহ্বান জানিয়ে সেদিন বলেছিলেন, ‘পার তো তেমনি করে এসো বাঙালি ওই করালী কালী বেটির মতো অন্ধকারের চেয়েও ভীষণ কালো রূপ নিয়ে, যেন সে কালরূপ দেখে মহাকালও ভয় পায়। ...পার তো তেমনি করে আর একবার দেয়ালি উৎসব করো। সে-উৎসব যারা করে তারাও অমর হয়, যারা দেখে তারাও বড়ো হয়।’ একশো পঁচিশ বছর পরেও জাতবিদ্রোহী নজরুলকে যে আজও বাঙালির ভীষণ প্রয়োজন।
 পেপার কোলাজ : কৃষ্ণ পাল
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : উজ্জ্বল দাস
27th  October, 2024
উমা থেকে দুর্গা

বিভূতিভূষণের সেই দুর্গা বইয়ের পাতা থেকে উঠে এল সত্যজিতের ছবিতে। সারা জীবনে একটি ছবিতে অভিনয় করে ইতিহাস হয়ে আছেন। কিন্তু নতুন প্রজন্ম মনে রাখেনি তাঁকে। ১৮ নভেম্বর নিঃশব্দে চলে গেলেন তিনি। ‘পথের পাঁচালী’-র দুর্গা, উমা দাশগুপ্তকে নিয়ে লিখেছেন সুখেন বিশ্বাস।
বিশদ

01st  December, 2024
পাগল হাওয়া
দেবজ্যোতি মিশ্র

কবি, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীতকার... কোনও বিশেষণই তাঁর জন্য যথেষ্ট নয়। তিনি সলিল চৌধুরী। শতাব্দী পেরিয়েও বাঙালি জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে তাঁর গান। জন্মশতবর্ষের সূচনায় ‘গুরুবন্দনা’য় কলম ধরলেন দেবজ্যোতি মিশ্র বিশদ

24th  November, 2024
হারানো বইয়ের খোঁজে

সন্দীপদা, মানে ‘কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রের’ স্থাপক এবং লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রাহক সন্দীপ দত্ত চলে গেছেন প্রায় দেড় বছর হল। বছর চারেক আগে খোলামেলা এক আড্ডায় সন্দীপদা বলেছিলেন, “৭২এ স্কটিশে বাংলা অনার্স পড়ার সময় আমি মাঝেমাঝেই ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে যেতাম। মে মাসের একটা ঘটনা। … দেখলাম বহু পত্রিকা একজায়গায় জড়ো করা আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
ট্রাম্পের আমেরিকা
মৃণালকান্তি দাস

‘ইফ হি উইনস’, এই শিরোনামেই টাইম ম্যাগাজিন গত মে মাসে সংখ্যা প্রকাশ করেছিল। সেই সংখ্যায় সাংবাদিক এরিক কোর্টেলেসা জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে বহুযোজন এগিয়ে গিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশদ

10th  November, 2024
ভাইজানের বিপদ
সমৃদ্ধ দত্ত

এই গ্রুপটাকে সবাই একটু ভয় পায়। কলেজের মধ্যে এই চারজন সর্বদাই একসঙ্গে থাকে। পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটির ক্যান্টিনে চলে আসে দুপুর গড়াতেই। আর সেখানেই তাদের ঘোরাফেরা সবথেকে বেশি। হুড খোলা একটা মাহিন্দ্রা জিপ চালায় যে, তার আসল নাম বলকারান ব্রার। বিশদ

03rd  November, 2024
শুভ বিজয়া
কৌশিক মজুমদার 

বিজয়ার থেকেই ধীরে ধীরে দিনগুলো, রাতগুলো কেমন অদ্ভুত ঝিমধরা ক্লান্ত লাগে। প্রতি মুহূর্তে মনে হয় যেন এবার আরও অনেক কিছু করার ছিল, জীবনপাত্র উছলিয়া ভরার ছিল। ভরা হল না।  বিশদ

20th  October, 2024
শ্রী শ্রী দুর্গা সহায়
সোমা চক্রবর্তী

১৯৮৬। তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। ছুটিতে দু’বেলা আর অন্যান্য দিন সন্ধ্যায় পড়তে বসা— এই ছিল রোজের রুটিন। পুজোর অপেক্ষায় থাকতাম সারা বছর। কারণ, আমাদের বাড়িতে নিয়ম ষষ্ঠী থেকে নবমী বই ছোঁয়া যাবে না। দশমীর দিন যাত্রা করে আবার পড়া শুরু। বিশদ

20th  October, 2024
নানা রঙের দশভুজা
দেবযানী বসু 

মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা! বেদ, পুরাণ, তন্ত্র, মহাকাব্য—সর্বত্র তাঁর মহিমার জয়গান। মতভেদও কম নেই। আর তা শুধু আবির্ভাব নয়, গাত্রবর্ণ নিয়েও। বেদ-পুরাণের বর্ণনায় দেবী গৌরবর্ণা, স্বর্ণবর্ণা, পীতবর্ণা, অতসীবর্ণা। বিশদ

06th  October, 2024
পুজোর টানে ফেরা
সুকান্ত ঘোষ

মহালয়ার ভোর। ঘুম থেকে উঠেই ঘরে চালিয়ে দিয়েছি ‘বীরেনবাবু স্পেশাল’। বেশ জোরে। খানিক পরেই দরজায় টোকা। খুলতেই দেখি, আমার ডানপাশের ঘরের জোসেফ ও বাঁ পাশের ঘর থেকে ফাউস্টো ঘুম ঘুম চোখে দাঁড়িয়ে। ঘরে ঢুকল দু’জনে। বিশদ

29th  September, 2024
কল্যাণীর বিভূতিভূষণ

মুরাতিপুর গ্রাম। তাঁর মামার বাড়ি। জন্মস্থানও। গ্রামটি আর নেই। সেখানেই গড়ে উঠেছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৩০ তম জন্মবার্ষিকীতে এমন অনেক অজানা কাহিনি লিখলেন সুখেন বিশ্বাস।
বিশদ

22nd  September, 2024
স্বপ্ন হলেও সত্যি
কলহার মুখোপাধ্যায়

মামা বলল, ‘আগে ভালো করে লাটাই ধরতে শেখ, তারপর ঘুড়ি ওড়াবি।’ বাবা বলল, ‘আগে ভালো করে সিট বেল্ট বাঁধতে শেখ, তারপর গাড়ির স্টিয়ারিং ধরবি।’   পাড়ার ন্যাপাদা বলল, ‘মাঠে ঠিকমতো দৌড়তে শেখ আগে, তারপর বলে পা দিবি
বিশদ

15th  September, 2024
ঘুড়ির পিছে ঘোরাঘুরি
রজত চক্রবর্তী

আরও আরও উপরে। আরও উপরে। ওই আমাদের বাড়ি ছোট হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। বুল্টিদের বাড়ির ছাদ ছোট্ট হয়ে গিয়েছে। দড়িতে টাঙানো বুল্টির লাল জংলা ফ্রক আর দেখা যাচ্ছে না। করদের মাঠ, পুকুর, আম-জাম-পাকুড়-লিচুগাছেদের ভিড়, বাড়িগুলো সব ছোট ছোট, শুধু ছাদের পর ছাদ।
বিশদ

15th  September, 2024
মলমাস
রোহিণী ধর্মপাল 

জিন্স পরিহিতা রীতিমতো আধুনিকা বললেন, ‘ঠাকুরমশাই, গৃহপ্রবেশে কোনও ত্রুটি রাখতে চাই না। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ হলে আমাদের খুব সুবিধা হয়।’ অফিসের ফোন আসায় একটু দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন সঙ্গী যুবক। এবার ফোনটা মিউট করে সুবেশ ছেলেটি বললেন, ‘তারপরেই আসলে আবার আমাদের অস্ট্রেলিয়া ফিরতে হবে তো! বিশদ

08th  September, 2024
মলিন মানুষ
সন্দীপন বিশ্বাস

সারা বাড়ি আনন্দে গমগম করছে। আত্মীয়-স্বজনদের ভিড়ে যেন উৎসবের হাট বসেছে। বাড়ির একমাত্র ছেলে শুভদীপের বিয়ে। বিয়ের দিন সবাই সেজেগুজে প্রস্তুত। এখনই বর বেরবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে। বাবা তাড়া দিচ্ছে শুভদীপকে। ‘তাড়াতাড়ি বেরো। এতটা পথ যেতে হবে। সময়মতো পৌঁছতে না পারলে সমস্যা হয়ে যাবে।’  বিশদ

08th  September, 2024
একনজরে
রাজ্যের পর্যটনকে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। আন্তর্জাতিক পর্যটনে বাংলাকে ‘ডেস্টিনেশন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার প্রশ্নোত্তর পর্বে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা জানিয়েছেন। ‘হোম ট্যুরিজিমে’ ...

চারদিন আগে ছেলের মৃত্যু হলেও তা মেনে নিতে পারেননি বাবা-মা। ছেলে চোখ মেলবে, সেই আশায় চারদিন ধরে শিশুর নিথর দেহের পাশে বসে ছিলেন তাঁরা। চোখের জল শুকিয়ে গেলেও অপেক্ষার অবসান ঘটেনি। মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে শুরু করলেও আশা ছাড়েননি ...

স্কুলে ভর্তির নিয়মাবলি প্রকাশ করেও ফর্ম বিলির দিনক্ষণ ঘোষণা করতে পারেনি শিক্ষাদপ্তর। সূত্রের খবর, ওবিসি সংরক্ষণে আইনি জটিলতার কারণেই ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে সরকার। ...

চলতি মরশুমের শুরুর দিকে রক্ষণের সমস্যায় বারবার ভুগতে হয়েছে মোহন বাগানকে। ডুরান্ড কাপে ব্যর্থতার পর আইএসএলের প্রারম্ভিক পর্বেও অগোছাল ছিল হোসে মোলিনার রক্ষণ। তবে সম্প্রতি ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

স্বদেশের বা বিদেশের নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালাভের সুযোগ পেতে পারেন। সব কাজে কমবেশি সাফল্যের যোগ। আয় ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস
১৮৮২: চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসুর জন্ম
১৮৮৪: বিশিষ্ট দার্শনিক, রাজনীতিবিদ তথা ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদের জন্ম
১৮৮৯: বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর জন্ম
১৯৫৬: সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৬৭: দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ডা. ক্রিশ্চিয়ান বার্নার্ড প্রথমবারের মত মানবদেহে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করেন
১৯৭৯: হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদের মৃত্যু
১৯৮২: কবি বিষ্ণু দে’র মৃত্যু
১৯৮৩: বাংলা ভাষায় প্রথম ‘ছোটদের অভিধান’ প্রকাশ করে বাংলা অ্যাকাডেমি
১৯৮৪: ভোপালে গ্যাস দুর্ঘটনায়  কমপক্ষে আড়াই হাজার মানুষ প্রাণ হারান
২০১১: অভিনেতা দেব আনন্দের মৃত্যু
২০২০: সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মদিন স্মরণে কলকাতার মাঝেরহাটে জয় হিন্দ সেতু নামে নতুন ব্রিজের উদ্বোধন হয়



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.৭৩ টাকা ৮৫.৪৭ টাকা
পাউন্ড ১০৫.৮৫ টাকা ১০৯.৬১ টাকা
ইউরো ৮৭.৮২ টাকা ৯১.২১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
01st  December, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৬,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৭,১০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৩,২৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৯,৬৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৯,৭৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
01st  December, 2024

দিন পঞ্জিকা

১৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪। দ্বিতীয়া ১৭/৪৩ দিবা ১/১০। পূর্বাষাঢ়া ২৭/৫৩ সন্ধ্যা ৫/১৫। সূর্যোদয় ৬/৫/২১, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৩০। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৪৮ মধ্যে পুনঃ ৭/৩২ গতে ১১/৫ মধ্যে। রাত্রি ৭/২৮ গতে ৮/২১ মধ্যে পুনঃ ৯/১৪ গতে ১১/৫৪ মধ্যে পুনঃ ১/৪১ গতে ৩/২৭ মধ্যে পুনঃ ৫/১৪ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ৭/২৮ মধ্যে। বারবেলা ৭/২৫ গতে ৮/৪৫ মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৭ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৭ গতে ৮/৬ মধ্যে। 
১৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪। দ্বিতীয়া দিবা ১২/৩৫। মূলা নক্ষত্র সন্ধ্যা ৫/০। সূর্যোদয় ৬/৭, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩ মধ্যে ও ৭/৪৫ গতে ১১/৬ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩৫ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ৯/২৩ গতে ১২/৪ মধ্যে ও ১/৫২ গতে ৩/৩৯ মধ্যে ও ৫/২৭ গতে ৬/৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ৭/৩৫ মধ্যে। বারবেলা ৭/২৭ গতে ৮/৪৭ মধ্যে ও ১২/৪৭ গতে ২/৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/২৮ গতে ৮/৮ মধ্যে। 
৩০ জমাদিয়স আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
তেলেঙ্গানায় মহিলা পুলিস কর্মীকে খুনের অভিযোগ দাদার বিরুদ্ধে

10:00:00 PM

ঝাড়খণ্ডের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিসের সঙ্গে বৈঠক করলেন হেমন্ত সোরেন

09:44:00 PM

কৃষকরা এমএসপির আইনি স্বীকৃতি চান, তাই প্রতিবাদ করছেন: তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়

09:23:00 PM

মুম্বইতে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে দেখা করলেন শচীন তেন্ডুলকর

09:10:00 PM

অভিনয় ছাড়ছেন না, আজ স্পষ্ট করে দিলেন অভিনেতা বিক্রান্ত ম্যাসি
অভিনয় ছাড়ছেন না। আজ, মঙ্গলবার স্পষ্ট করে দিলেন বলিউড অভিনেতা ...বিশদ

09:03:39 PM

ভিন রাজ্যে আলু পাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বাংলা-উড়িষ্যা সোনাকোনিয়া সীমান্তে নাকা চেকপোষ্টে এলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না

08:47:00 PM