কর্ণাটকের কন্যা অশ্বিনী হিরামঠ বরাবরই স্বভাবে একটু গেছো। ছোটবেলায় বোন বিজয়লক্ষ্মী আর তাঁর প্রিয় খেলাই ছিল আলমারি বেয়ে উঠে সবচেয়ে উঁচু তাকে গুছিয়ে রাখা দামি শাড়ি পেড়ে তা পরা। সাবেকি সাজে নিজেদের সাজাতে খুবই ভালোবাসতেন অশ্বিনী আর বিজয়লক্ষ্মী দু’জনেই। এর বহু বছর পরেও সেই সাবেকি সাজ তাঁর পিছু ছাড়েনি। তিরিশ ছুঁই ছুঁই অশ্বিনী এখন রীতিমতো স্টেজ শো করে বিখ্যাত। স্টেজে ‘ক্রান্তিনারী’ নামে তাঁর দলের পরিচিতি। কেন জানেন? শাড়ি পরে হিপহপ নাচ প্রদর্শন করেন তিনি ও তাঁর দল স্বচ্ছন্দে। হিপহপ নাচের সঙ্গে র্যাপ গানের বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন মহিলাদের নানা প্রয়োজন, সমস্যা, লড়াই ইত্যাদি। অশ্বিনী, প্রীতি, শ্রুতি, জ্যাকলিন আর প্রীতিকা— এই পাঁচজনই ক্রান্তিনারী দলের সদস্য। ভারতে হিপহপের নানা ধরন তুলে ধরে তা জনপ্রিয় করাই এই দলের উদ্দেশ্য। ২০২১ সালে দলটি শুরু করেছিলেন অশ্বিনী। কর্ণাটক ছেড়ে ততদিনে তিনি মুম্বইয়ের স্থায়ী বাসিন্দা। ইতিমধ্যে পাঁচটি একক প্রদর্শন এবং তিনটি ট্র্যাক তৈরি করেছেন তাঁরা। সঙ্গে র্যাপে নানারকম গান থাকে। মহিলাদের অধিকার, তাদের ভালোলাগা, শখ ইত্যাদি নিয়ে মারাঠি, হিন্দি, কন্নড় এবং ইংরেজিতে গান লিখেছেন অশ্বিনী ও তাঁর দলের অন্যান্যরা। হিপহপ ছাড়াও নাচের ছন্দে ভরে দিয়েছেন ব্রেকডান্স ও স্কেট বোর্ডিং-এর কিছু স্টেপ।
কিন্তু এই যে ক্রান্তিনারী দল, এর সূচনা হল কেমন করে? অশ্বিনী বললেন, ভাবনাটা প্রীতির। মুম্বইতে একটা আর্ট ফেস্ট চলছিল, মহিলাদের দ্বারা এবং মহিলাদের নিয়ে। সেখানেই এই পাঁচজনের প্রথম সাক্ষাৎ। বন্ধুত্বও হয়েছিল পছন্দগুলো মিলে যাওয়ায়। সেই প্রদর্শনীর মাঝে একদিন দোসা সহযোগে আড্ডা দেওয়ার সময়ই উঠে আসে এমন একটা দল তৈরির কথা— গতানুগতিক পথে না হেঁটে একেবারে ভিন্ন কিছু করতে যারা পিছপা হবে না। কথায় কথায় শাড়ি, সাবেকি সাজের প্রতি টান আর নাচের প্রতি আকর্ষণের প্রসঙ্গ উঠলে শাড়ি পরে র্যাপ গানের সঙ্গে হিপহপ নেচে একটা ভিডিও বানানোর পরিকল্পনা করেন তাঁরা। ভিডিওটি জনপ্রিয় হলে আরও কিছু করার তাগিদ জন্মায়। আর এইভাবেই শুরু হয় মহিলাদের শাড়ি পরে হিপহপ।