প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
একটা ইট বা পাথরকে ঈশ্বর ভেবে ভক্তিভাবে পূজা করলে তাতেও তাঁর কৃপায় ঈশ্বর দর্শন হতে পারে। তারপর পাকা হয়ে গেলে আর বেশী দিন পূজা করতে হয় না। ঈশ্বরেতে সর্ব্বদা মন রাখবে। প্রথমে একটু খেটে নিতে হয়। তারপর পেন্সান্ ভোগ করবে। স্যাকরারা সোনা গলাবার সময় চোঙ্গ, পাখা, হাপর সব দিয়ে হাওয়া করে, যাতে আগুনের খুব তেজ হয়ে সোনাটা শীঘ্র গলে যায়। কাজ শেষ করে বলে, তামাক সাজ। এতক্ষণ খুব ঘেমে উঠেছিল। তারপর তামাক খাবে। সেইরূপ খুব রোক্ না হলে সাধন হয় না।
সংসারে থাকতে গেলেই সুখ, দুঃখ, একটু আধটু অশান্তি আছে। কাজলের ঘরে থাকলে গায়ে একটু কালী লাগবেই। ‘হরিবোল হরিবোল’ বলে হাততালি দিয়ে সকালে সন্ধ্যাকালে হরিনাম কোরো। তাহলে সব পাপ তাপ চলে যাবে। দেহ বৃক্ষে পাপ পাখী; তাঁর নাম কীর্ত্তন যেন হাততালি দেওয়া। যেমন গাছের তলায় দাঁড়িয়ে হাততালি দিলে গাছের সব পাখী উড়ে যায়, তেমনি হাততালি দিয়ে হরিনাম করলে দেহ গাছ থেকে সব অবিদ্যারূপ পাখী উড়ে যায়। মেঠো পুকুরের জল সূর্য্যের তাপে আপনা আপনি শুকিয়ে যায়। তেমনি তাঁর নাম করলে পাপ-পুষ্করিণীর জল আপনা আপনি শুকিয়ে যায়। রোজ অভ্যাস করতে হয়। তাঁর নাম সর্ব্বদাই করতে হয়। কলিতে নাম মাহাত্ম্য। অন্নগতপ্রাণ, তাই যোগ হয় না। কলিতে, বলে, একদিন একরাত কাঁদলে ঈশ্বর দর্শন হয়। মনে অভিমান করবে আর বলবে ‘তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, দেখা দিতে হবে।’ তিনি যদি একবার কৃপা করে দর্শন দেন, আত্মার যদি একবার সাক্ষাৎকার হয়, তাহলে ছয় রিপু আর কিছু করতে পারবে না—কোন ভয় নাই। যাদের ভোগ একটু বাকি আছে, তারা সংসারে থেকেই তাঁকে ডাকবে। যদি সংসারী লোকদের সব ত্যাগ করে ঈশ্বরের পাদপদ্মে মগ্ন হতে বল, তা তারা কখনও শুনবে না। তাই গৌর নিতাই দুইভাই তাদের টানবার জন্য ব্যবস্থা করেছিলেন—‘মাগুর মাছের ঝোল, যুবতী মেয়ের কোল, বোল হরিবোল।’ প্রথম দুইটির লোভে অনেকে হরিনাম করতে যেত।
আগে লোকে যোগ যাগ তপস্যা করত; এখন কলির জীব, অন্নগতপ্রাণ, দুর্ব্বল মন, এক হরিনামই একাগ্র হয়ে করলে সংসারের সব দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে যায়। ঈশ্বরের নামে এমন বিশ্বাস হওয়া চাই—কি! আমি তাঁর নাম করেছি আমার আবার পাপ কি এখনও থাকবে? আমার আবার বন্ধন কি? কেবল ‘পাপ’ আর ‘নরক’ এই সব কথা কেন? একবার বল যে অন্যায় কর্ম্ম যা করেছি আর করবো না। তাঁর নামে বিশ্বাস কর।