প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
ভক্তিপথ আর জ্ঞানপথ। ভক্ত ভগবানের একটা আকার চায়। কখনো রূপ দেখছে, তাঁকে ডাকছে, ভজন করছে, কাঁদছে ইত্যাদি। জ্ঞানীরা জ্যোতিঃ চায়, কত রকম জ্যোতিঃ দেখে। শেষে দুই-ই এক। এই ভক্তিপথ—এতেও সেই অজ্ঞানের ধ্বংস হয়; আর জ্ঞানপথেও অজ্ঞান, অবিদ্যার ধ্বংস হয়। কিন্তু জ্ঞান থাকে, জ্ঞান যায় না। যেটা যায় সেটা অজ্ঞান। এই জ্ঞানের পরপারে কি?—তা কেউ বলতে পারে না। যে যায় সে-ই জানে।
উপনিষদ্ বলে, ভক্তও ঠিক, জ্ঞানীও ঠিক। উভয়েরই পথ বলা আছে, তবে জ্ঞানের কথাই বেশি দেখা যায়। ভাগবতগ্রন্থে প্রথমে অবতারাদির কথা বলেছে। ভক্তের বেশ মনে লাগে। তাঁতে ভালবাসা আসে। আবার কত মূর্তির কথাও বলা আছে। কিন্তু একাদশ স্কন্ধে জ্ঞানের চূড়ান্ত—একেবারে বেদান্ত। যোগবাশিষ্ঠ, অষ্টাবক্রসংহিতা পুস্তকগুলি জ্ঞানের আদর্শ। এই সব গ্রন্থে জ্ঞানের পথ পরিষ্কার করে রেখেছে। আমার সাংখ্যটি বড় ভাল লাগে। কেমন পুরুষ ও প্রকৃতি থেকে আরম্ভ করে সেই চরমপথে চলে গেছে। প্রকৃতি এবং পুরুষ চাই, উভয় না হলে সব হয় না। তাই উভয় নিয়ে কেমন বুঝিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে সেইদিকে নিয়ে গেছে। এই সব দেখলে মনে হয়, কেনই বা এত সব। প্রলয় তো আছেই। এই যা দেখা যাচ্ছে, সবই লয় পাবে—তবে এই সব ব্যাপার কেন? তাঁর লীলা তিনিই জানেন। কে বুঝবে বল? প্রলয়ে এই সব কিছুই থাকবে না। এই দেখ না, মুহূর্তক্ষণ ভূমিকম্প হলে কি হয়। এর চেয়ে একটু বেশি হলে তো প্রলয়। তা হতে আর কত দেরিই বা লাগে। এই তো জীবের অবস্থা। তৃপ্তি হচ্ছে না, মন ধূ ধূ করছে—শুধু তাঁকে পাবার জন্য আনচান হওয়াকেই অনুরাগ বলে। অনুরাগই তো দরকার।দানের চেয়ে কি ধর্ম আছে? যীশুখ্রীস্ট বলছেন—Cast thy bread into the water—জলে ফেলে দাও আবার জলই তুলে দিবে। একবার দাও, আবার আসবে। দান কি কম জিনিস গা? সকল ধর্মেই দানের কথা আছে। দান তো করবে, কিন্তু তাতে আবার একটু টান দেওয়াও আছে। দেশ, কাল, পাত্র বিবেচনা করে দান করতে হয়, কারণ কত কষ্টের পয়সা—মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়। সে পয়সা সৎপাত্রে যাওয়াই ভাল।এই ব্রহ্মাণ্ডের সহিত তুলনা করলে আমাদের তো কিছুই থাকে না। এই পৃথিবী সূর্য অপেক্ষা ছোট, আর আমরা এই পৃথিবী অপেক্ষা আবার কত ছোট।