প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
দুর্গাপূজা কাম্য পূজা। শত্রুনাশ, ঐশ্বর্যলাভ ইত্যাদি কামনাই কাম্য পূজার বৈশিষ্ট্য। তাছাড়া দেবী দুর্গা হলেন মহিষাসুরমর্দিনী। এই চণ্ডীতেই আছে দুর্গা কীভাবে মধুকৈটভকে বধ করলেন, তারপর মহিষাসুরের সেনাপতি চিক্ষুর ও চামর, ষাট হাজার রথারোহী সৈন্যসহ উদগ্র, এক কোটি রথারোহী সৈন্যসহ মহামনু, পাঁচ কোটি সৈন্যসহ অসিলোমা, ষাট লক্ষ সৈন্যসহ বাস্কলাসুর, বহু সহস্র অশ্বারোহী, গজারোহী ও রথারোহীসহ পরিবারিত, পঞ্চাশ অযুত রথারোহীসহ বিড়ালাক্ষ এবং কয়েক কোটি অশ্ব, হস্তী ও রথারোহীসহ মহিষাসুর দেবীর দ্বারা কীভাবে নিহত হলেন, তার কাহিনীও।
এই কাম্য পূজায় একদিকে যেমন দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয়—‘রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি’ বলে এবং সেইসঙ্গে নানা বিঘ্নশান্তির জন্যও প্রার্থনা করা হয়। দেবী মাহাত্ম্য শ্রীশ্রীচণ্ডীপাঠের এই হল বৈশিষ্ট্য।
দেবীর দশ হাতের অস্ত্র
শ্রীশ্রীচণ্ডীতে দেবী দুর্গাকে দশপ্রহরণধারিণী বলা হয়েছে। মহিষাসুর বধের জন্য দেবীর আবির্ভাব যেমন দেবতাদের পুঞ্জীভূত তেজ থেকে, দেবীর দশ হাতের দশটি প্রহরণ বা অস্ত্রও তেমনি দেবতাদেরই দান। শিব দিয়েছিলেন ত্রিশূল, এরপর যাঁরা যে-যে অস্ত্র দিলেন তা হল: মহাকাল—খড়্গ, বিষ্ণু—চক্র, বায়ু—তীক্ষ্ণ বাণযুক্ত পূর্ণ চাপ, অগ্নি—শক্তি (গদা), যম—খেটক (কালদণ্ড), বরুণ—নাগপাশ, ইন্দ্র—অঙ্কুশ ও ঘণ্টা, বিশ্বকর্মা—কুঠার। নিজেদেরই সৃষ্ট সেই অনুপমা সিংহবাহিনী দশপ্রহণধারিণী দেবী দুর্গাকে দেখে দেবতারা আনন্দে জয়ধ্বনি করে উঠেছিলেন।
দেবীর প্রতিমার চালচিত্র
ইদানীং দুর্গাপ্রতিমার পেছনে চালচিত্র বড় একটা দেখা যায় না, বিশেষত, বারোয়ারি পূজার প্রতিমায় চালচিত্র প্রায় থাকেই না। কিন্তু, প্রতিমার সঙ্গে চালচিত্র খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং এটি সর্বধর্মসমন্বয়েরও প্রতীক। ধর্মসংক্রান্ত উদারতায় বৈদিক ঋষিদের তুলনা নেই—দুর্গা-প্রতিমার চালচিত্রেও তারই প্রকাশ। দুর্গাপূজাকে মহাপূজা বলা হয়। এই পূজায় কেবল দেবী দুর্গাই সপরিবারে পূজিতা হন না, বিধি অনুসারে, হিন্দুধর্মের সব সম্প্রদায়েরই দেবদেবীর এই সময় আবাহন ও পূজা করতে হয়।