প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
কয়েকমাস পরে পল্টুবাবুরা আলমোড়া হইতে চলিয়া আসেন কিন্তু মহাপুরুষজী ঐস্থানেই রহিয়া গেলেন। তিনি ঐসময় কি ভাবে তথায় থাকিতেন তাহা গল্পচ্ছলে একদিন হাসিতে হাসিতে বলিয়াছিলেন, “চিলকাপেটা হাউসের আউট হাউসটাতে (বহির্ভাগে) থাকতাম—ওখানেও একটি পাহাড়ী কুকুর কোত্থুকে জুটে গিয়েছিল। কুকারে নিজেই রান্না ক’রে খেতাম—ডালভাত আর একটা ঝোল। ডালের জলটা আমি খেতাম, আর ঘন ডাল আর ভাত মেখে কুকুরটাকে দিতাম। ও বেটাও তাই খেয়ে ওখানে পড়ে থাকত। শীতের সময় বড় ঠাণ্ডা—চারিদিকে বরফ পড়ে। আমি কুটীরের ভিতরেই থাকতাম, নেহাৎ দরকার না হ’লে বেরুতাম না। পাশের বাগানে একজন মালী ছিল—কোন কিছু দরকার হ’লে তাকে দিয়ে আনিয়ে নিতাম। বেশ থাকতাম ওখানে, কোন কষ্ট হ’ত না—আনন্দে ছিলাম।” ঐ সময়ের কয়েকখানি চিঠিতে তাঁহার মনের অবস্থার কিঞ্চিৎ আভাস পাওয়া যায়, আর জানিতে পারা যায় তাঁহার অহংশূন্যভাব কত গভীর ছিলঃ “তুমি আমার জীবনসম্বন্ধে জানিতে চাহিয়াছ—আমার জীবনে এমন কোন বিশেষ ঘটনা নাই যাহা লিখিবার যোগ্য। তবে এক বিশেষের অপেক্ষাও বিশেষ ঘটনা আছে—তাহা শ্রীরামকৃষ্ণের শ্রীচরণদর্শন ও তাঁহার কৃপালাভ—সেও তাঁহার নিজগুণে! আমার এমন কোন গুণ ছিল না যদ্দ্বারা তাঁহার কৃপালাভ করিতে পারি। তিনি ইচ্ছা করিয়া আমায় দয়া করিয়াছেন—এইমাত্র ঘটনা জীবনে।” অন্য চিঠিতে আছে, “আমি শ্রীরামকৃষ্ণের চরণাশ্রিত দাস—এইমাত্র জানি। তিনি দয়া করিয়া যখন তাঁর স্মরণ করান তখন তাঁর স্মরণ করি, যখন পাঠ করান তখন পুস্তকাদি পাঠ করি বা কাহারও কাহারও সহিত ধর্মকথা আলাপ করি—এই আমার কাজ। ভরসা একমাত্র শ্রীরামকৃষ্ণের কৃপা—সে সম্বন্ধে নিশ্চয় আছে; আর এজীবনে আমার কিছুই নাই এবং কিছুর আকাঙ্ক্ষাও নাই তাঁর কৃপায়। আমি এখন প্রভু যেখানে রাখিবেন সেখানেই থাকিব—নিজের কর্তৃত্ব কিছুই নাই; প্রভু যেরূপ করাবেন, তাই করিব।”