শেয়ার ও বিমা সূত্রে অর্থাগম হতে পারে। কাজের প্রসার ও নতুন কর্মলাভের সম্ভাবনা। বিদ্যা হবে। ... বিশদ
‘অনুগ্রহায় ভূতানাং মানুষং দেহমাস্থিতঃ।
ভজতে তাদৃশীক্রীড়া যাঃ শ্রুত্বা তৎপরো ভবেৎ’।।
—অর্থাৎ ভক্তের প্রতি অনুগ্রহবশত মনুষ্য দেহ ধারণ করে মানুষের মত আচরণ করে মানবকুলকে আকৃষ্ট করেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন—
‘যদা সদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্।।
—যখন ধর্মের গ্লানি এবং অধর্মের প্রাদুর্ভাব ঘটে তখন ধর্ম রক্ষার্থে আমি নিজেকে সৃজন করি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম বা আবির্ভাব এ অবস্থার ফলশ্রুতি। এ জন্ম আত্মমায়া অবলম্বনে। কাজেই একে অপ্রাকৃত বলা হয়।
লক্ষণীয়, শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাবকালটি ছিল খুবই গ্লানিযুক্ত, ধর্মের জন্য অবমাননাকর; প্রজাপীড়নে মত্ত অত্যাচারী নৃপতিরা মুনি-ঋষিদের ধর্ম অনুশীলনে তখন বিঘ্ন সৃষ্টি করে মানব জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। ধরিত্রীমাতা আর এই পাপাচার সহ্য করতে না পেরে এর প্রতিবিধানকল্পে দ্বারস্থ হলেন ব্রহ্মসত্তায় সত্তাম্বিত সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার কাছে। ভগবান বিষ্ণু শ্রীকৃষ্ণ নামে অবতাররূপে মানবকল্যাণে আবির্ভূত হবেন জানতে পেরে ধরিত্রীমাতা আশ্বস্ত হলেন। এ শুভ মুহূর্তে চরিতার্থ করতে ভগবানের লীলাসহায়রূপে সকল দেব-দেবতা মথুরা-বৃন্দাবনে জন্মগ্রহণ করতে লাগলেন। সে সময় মথুরা নগরীতে যদুবংশীয় রাজা উগ্রসন রাজত্ব করতেন। তারই পুত্র কংস ছিলেন অতি বলবান ও খল প্রকৃতির। আবার মগধের পাপাসক্ত রাজা জরাসন্ধ অতি অত্যাচারী ছিলেন। উগ্রসনের এক ভ্রাতার নাম দেবক। দেবকের কন্যা দেবকী। ইনিই পরবর্তিকালে শ্রীকৃষ্ণের জননী। কংস দেবকীকে খুব স্নেহ করতেন এবং বিবাহযোগ্য হলে তাকে শূরের পুত্র বসুদেবের সঙ্গে বিবাহ দেন। বসুদেব ছিলেন সত্যনিষ্ঠ, সমদৃষ্টিসম্পন্ন চরিত্রবান। বিবাহ হয় খুব জাঁকজমকভাবে। বিধাতার বিধান অলঙ্ঘনীয়। কংস নিজে রথের সারথি হয়ে ভগ্নি দেবকীকে শ্বশুরালয়ে নিয়ে যেতে যেতে দৈববাণী শুনতে পেলেন—‘আরে নির্বোধ! তুমি যাকে স্নেহভরে শ্বশুরালয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তারই অষ্টম গর্ভের সন্তান তোমার হন্তা হবে।’ এ কথা শুনে দেবকীর প্রতি স্নেহ-মমতা বিসর্জন দিয়ে বসুদেবের সামনে তাকে হত্যা করতে উদ্যত হলেন। কিন্তু ধীরস্থির বসুদেব তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে অতিকষ্টে সাময়িকভাবে শান্ত করলেন। বসুদেব প্রতিশ্রুতি দিলেন, দেবকীর গর্ভের যত সন্তান হবে, তা তার হাতে তুলে দেবেন তিনি।
স্বামী অক্ষরানন্দের ‘মহাশক্তির বিচিত্র প্রকাশ’ থেকে