ধনাগম যোগটি অনুকূল। দুপুর থেকে কর্মের বাধা মুক্তি ও উন্নতি। শরীর-স্বাস্থ্য সমস্যার যোগ। ... বিশদ
তারপর—স্মরণ—যা শ্রবণ করা যায়, যা বলা যায়, তাই তো স্মরণ হয়। সর্ব্বদা যে তোমার নাম, লীলা, গুণ শ্রবণ করে, তার আর স্মরণের জন্য চিন্তা করতে হয় না, স্মরণই সঙ্গে সঙ্গে তার ইষ্টকে স্মরণ করিয়া দেয়। প্রথম যখন শ্রবণ কীর্ত্তন চলে, তখন স্মরণ পূর্ব্ব সংস্কারে ঘুরে বেড়ায়। তারপর অবিরত শ্রবণ কীর্ত্তন করতে করতে যখন নাম-রূপ-লীলার সংস্কার দৃঢ় হয়ে যায়, তখন ইচ্ছা না করলেও স্মরণ ভুল হয় না। শ্রবণের দ্বারা জানা গেছে, অতিপাতকীও যদি তোমার নাম নেয়, সেও তোমার কৃপালাভে সমর্থ হয়। অতি দুরাচার অজামিল মরণকালে পুত্রকে নারায়ণ বলে ডেকে বৈকুণ্ঠ গমন করেছিল। দস্যু রত্নাকর অর্থের জন্য স্ত্রীহত্যা, ব্রহ্মহত্যা, আরও কত মহাপাপ করেছিল, তারপর সপ্তঋষির মুখে তোমার ‘রাম’ এই নাম শুনেছিল মাত্র, বলতে পারে নি। তার জিহ্বা রামনাম উচ্চারণে সমর্থ হয় নি। ‘মরা মরা’ এই মহামন্ত্র জপ করে রত্নাকর ব্রহ্মর্ষি বাল্মীকি হয়েছিলেন। গধ্রগণিকা তোমার আশ্রয় লাভে মুক্ত হয়েছিল। নর-খাদক রাক্ষস, বনের বানর, চণ্ডাল গুহক, ঘৃণ্য-জন্মা শবরী—তাহারও তোমার কৃপায় বঞ্চিত হয়নি। পিশাচ ঘণ্টাকর্ণ অহরহঃ ‘হরে! মুরারে! মধুকৈটভারে! হে মাধব! হে মুকুন্দ! হে নারায়ণ!’—তোমার এই নামসকল উচ্চারণ করে তোমার দেখা পেয়েছিল।
এইসব কথা শুনতে শুনতে, বলতে বলতে, স্মরণ করতে করতে আপনা আপনিই এরূপ আশ্রয়দাতার পদে মাথা লুটিয়ে পড়ে। আমি যতই কুকর্ম্মান্বিত হই না কেন, আমার একজন আছেন, আমার দোষ নষ্ট করে আমায় পবিত্র করবার শক্তি তাঁর আছে—যখন নিশ্চয় রূপে জানা যায়, তখন তাঁর পদসেবার স্পৃহা অন্তরে জেগে উঠে। কিন্তু যে ধ্বজবজ্রাঙ্কুশ কমল চিহ্ন শোভিত পাদপদ্মদুটি যোগিগণ ধ্যানে ধরতে পারেন না, সে পদ সেবন কেমন করে করবো? সে অভয় পদ দুটি কোথা পাব? চিন্তা ভক্তকে বড় কাতর করে তোলে, তখন মন সেই চরণরত্ন লাভ করবার জন্য হৃদি রত্নাকরেই ডুব দেয়।