শুক্রবার খড়্গপুরের পদযাত্রায় জনজোয়ারে ভাসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে পা মেলালেন হাজার হাজার মানুষ। যা দেখে অভিভূত খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো। মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রায় মানুষের ভিড় বিরোধী শিবিরের বুকে কম্পন ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট, এমনটাই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলের।
দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড শোয়ে জনস্রোতে ভাসল তমলুক। শুক্রবার ঐতিহাসিক শহরের রাজবাড়ি ময়দান থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত রোড শো ছিল। ধামসা, মাদল, রণপা সহযোগে এদিনের র্যালি আক্ষরিক অর্থে রঙিন হয়ে উঠেছিল।
ঘরে বা পথেঘাটে পড়ে গিয়ে শরীরে বড় আঘাত পেতে পারেন। আমদানি রপ্তানির ব্যবসা ভালো হবে। ... বিশদ
পিনাকী ধোলে, শালবনী : ভাঙা ঘরে যেন চাঁদের আলো! খড়ের চালার চিলতে ঘর। ঠাসাঠাসি বাস তিনজনের। ভিখারি বাবা ও দুই ছেলে। মাঝখানে বাবা ঘুমোন। দু’পাশে দুই ভাই। বৃষ্টির দিনে পাতলা ছাউনি গলে টুপ টাপ জল পড়ে। বাবা জেগে থাকেন। গামছা দিয়ে সেই জল মুছিয়ে দিয়ে ঘুমোতে বলেন মাতৃহারা ছেলেদের। এখন খর গ্রীষ্ম। জ্বলে পুড়ে খাক খড়ের ছাউনি। রাতে ঘরের ভিতর ঠিকরে পড়ে তারারা...চাঁদের ছটা। এমন ‘অভাবী সৌন্দর্য’ ওরা দেখতে পায় না। দুই ভাই-ই জন্ম রাতকানা। জোৎস্নালোকে ছেলেদের ঝকঝকে মুখ দেখে অদ্ভুত এক প্রশান্তি পান বাবা সন্দীপ সাউ। ঠোঁটে তাঁর তৃপ্তির হাসি।
বৃহস্পতিবার সেই হাসি আরও চওড়া। মাধ্যমিকে বড় ছেলে প্রেমজিৎ সাউ সত্যিই ‘স্টার’। ছেলেকে বুকে টেনে সন্দীপবাবু বলতে লাগলেন, ‘তুই যে আমার চাঁদের আলো।’ বাবার দু’চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে আনন্দাশ্রু। চোখের জল মুছিয়ে ছোট ছেলে দেবপ্রিয়ও বলে, ‘বাবা, আমিও দাদার মতোই রেজাল্ট করব। দেখে নিও।’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর পিড়াকাটা হাইস্কুলের পড়ুয়া প্রেমজিৎ। মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৬০১। গড়ে ৮৫। অঙ্কে ৯৩। প্রেমজিতের সাফল্যে গর্বিত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তার কঠিন লড়াইকে কুর্নিশ করেছেন পিড়াকাটার মানুষ। জন্ম থেকেই রাতকানা প্রেমজিৎ। সূর্য ডুবলেই তার চোখে নামে অন্ধকার। দু’বছরের ছোটভাই দেবপ্রিয়ও একই রোগে আক্রান্ত। চিকিত্সা করানোর পয়সা নেই। সকাল হলেই বাবা উনুনে হাঁড়ি চড়িয়ে বেরিয়ে পড়েন। হাতে ভিক্ষের পাত্র। দুয়ারে দুয়ারে ঘোরেন। দিনের শেষে যা কিছু জোটে তা দিয়ে পরের দিন হাঁড়ি চড়ে।
প্রেমজিৎ তখন প্রাথমিকে পড়ে। একদিন মা রান্না করছিলেন। অসাবধানে আগুন ধরে যায় শাড়িতে। দেহের অধিকাংশ পুড়ে যায়। তাঁকে আর বাঁচানো যায়নি। দেবপ্রিয় তখন দুগ্ধপোষ্য। মায়ের মৃত্যুতে আকাশ ভেঙে পড়ে দুই ভাইয়ের জীবনে। মা হারানোর যন্ত্রণা নিয়েই প্রাথমিকের গণ্ডি পেরোয় প্রেমজিৎ। তারপর কোভিড মহামারী। লকডাউনের ভয়ঙ্কর অভিঘাত। বাবার সঙ্গে হাতে বাটি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হয় দুই ভাইকে। লাটে ওঠে পড়াশোনা। দিনে ভিক্ষে করে রাতে যে পড়বে, তারও উপায় নেই। অন্ন জোগাড়ের সময় বাঁচিয়ে বই নিয়ে বসে পড়ত প্রেমজিৎ। পরে বাবার আর ভিক্ষের সঙ্গী করত না তাকে। স্কুল আর পড়াশোনা নিয়েই থাকত সে। জীবনের প্রথম পরীক্ষায় আজ প্রেমজিৎ সফল।
ভাঙা ঘরের দাওয়ায় বসে কথা হচ্ছিল প্রেমজিতের সঙ্গে। বলছিল, ‘এই তো সবে শুরু। আরও অনেক পথ বাকি। আমার বড় ইচ্ছে ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়ার।’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক কেম্পা হোন্নাইয়ার কথা শুনেছে প্রেমজিৎ। অন্ধ আমলা কেম্পা তার আইকন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অতনু মণ্ডল বলেন, ‘ওর জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। সবাই ওর পাশে দাঁড়াক।’
বৃহস্পতিবার সেই হাসি আরও চওড়া। মাধ্যমিকে বড় ছেলে প্রেমজিৎ সাউ সত্যিই ‘স্টার’। ছেলেকে বুকে টেনে সন্দীপবাবু বলতে লাগলেন, ‘তুই যে আমার চাঁদের আলো।’ বাবার দু’চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে আনন্দাশ্রু। চোখের জল মুছিয়ে ছোট ছেলে দেবপ্রিয়ও বলে, ‘বাবা, আমিও দাদার মতোই রেজাল্ট করব। দেখে নিও।’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর পিড়াকাটা হাইস্কুলের পড়ুয়া প্রেমজিৎ। মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৬০১। গড়ে ৮৫। অঙ্কে ৯৩। প্রেমজিতের সাফল্যে গর্বিত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তার কঠিন লড়াইকে কুর্নিশ করেছেন পিড়াকাটার মানুষ। জন্ম থেকেই রাতকানা প্রেমজিৎ। সূর্য ডুবলেই তার চোখে নামে অন্ধকার। দু’বছরের ছোটভাই দেবপ্রিয়ও একই রোগে আক্রান্ত। চিকিত্সা করানোর পয়সা নেই। সকাল হলেই বাবা উনুনে হাঁড়ি চড়িয়ে বেরিয়ে পড়েন। হাতে ভিক্ষের পাত্র। দুয়ারে দুয়ারে ঘোরেন। দিনের শেষে যা কিছু জোটে তা দিয়ে পরের দিন হাঁড়ি চড়ে।
প্রেমজিৎ তখন প্রাথমিকে পড়ে। একদিন মা রান্না করছিলেন। অসাবধানে আগুন ধরে যায় শাড়িতে। দেহের অধিকাংশ পুড়ে যায়। তাঁকে আর বাঁচানো যায়নি। দেবপ্রিয় তখন দুগ্ধপোষ্য। মায়ের মৃত্যুতে আকাশ ভেঙে পড়ে দুই ভাইয়ের জীবনে। মা হারানোর যন্ত্রণা নিয়েই প্রাথমিকের গণ্ডি পেরোয় প্রেমজিৎ। তারপর কোভিড মহামারী। লকডাউনের ভয়ঙ্কর অভিঘাত। বাবার সঙ্গে হাতে বাটি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে হয় দুই ভাইকে। লাটে ওঠে পড়াশোনা। দিনে ভিক্ষে করে রাতে যে পড়বে, তারও উপায় নেই। অন্ন জোগাড়ের সময় বাঁচিয়ে বই নিয়ে বসে পড়ত প্রেমজিৎ। পরে বাবার আর ভিক্ষের সঙ্গী করত না তাকে। স্কুল আর পড়াশোনা নিয়েই থাকত সে। জীবনের প্রথম পরীক্ষায় আজ প্রেমজিৎ সফল।
ভাঙা ঘরের দাওয়ায় বসে কথা হচ্ছিল প্রেমজিতের সঙ্গে। বলছিল, ‘এই তো সবে শুরু। আরও অনেক পথ বাকি। আমার বড় ইচ্ছে ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়ার।’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক কেম্পা হোন্নাইয়ার কথা শুনেছে প্রেমজিৎ। অন্ধ আমলা কেম্পা তার আইকন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অতনু মণ্ডল বলেন, ‘ওর জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। সবাই ওর পাশে দাঁড়াক।’
