গুরুজনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা ও মানসিক উদ্বেগ। কাজকর্মে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বয়স্কদের স্বাস্থ্য সমস্যা ... বিশদ
ওই যে হারসুল গ্রাম থেকে আসা সঞ্জয় কারকে বসে আছেন। ১৫ কুইন্টাল পেঁয়াজ এনেছেন। মান্ডিতে বিক্রি করবেন ভেবে। তিনদিন হল কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজের উপর রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে। এখন কেন? কারণ লোকসভা ভোট। শেষ বেলায় কৃষকদের মন পাওয়ার মরিয়া তাগিদ। সেপ্টেম্বর মাসে আরোপ করা হয়েছিল ৪০ শতাংশ ট্যাক্স। অর্থাৎ রপ্তানি করলে ৪০ শতাংশ বাড়তি ট্যাক্স দিতে হবে। আর ডিসেম্বরে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা। নাসিক জেলাজুড়ে প্রবল বিক্ষোভ। কৃষকদের। তাঁদের কাছে হিমঘরে রাখার জন্য এত টাকা কোথায়! ধনী ব্যাপারীরা কিন্তু সব রেখে দিতে পেরেছে। আর কৃষকরা বাধ্য হয়েছে সস্তায় হাজার হাজার কুইন্টাল ছেড়ে দিতে। সঞ্জয় কারকে বললেন, ‘২ একর চাষ করেছি। ৭০ হাজার টাকা লগ্নি। এত মাস পর রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও মুনাফা কোথায়? সোমবারও দাম পাওয়া যাচ্ছে ১৫০০ টাকা কুইন্টাল। অথচ রপ্তানির জন্য মিডলম্যান এই পেঁয়াজ বিক্রি করবে দ্বিগুণ, তিনগুণ, চারগুণ দামে। অন্তত ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা না হলে আমাদের লাভ নেই। এসব ভোটের হুজুগ। চাষিদের কথা মোদি সরকার ভাবলে নাসিকে পেঁয়াজ চাষ ও সাপ্লাইয়ের নীতি তৈরি করত। করে না। প্রতি বছর এক কাহিনি। দাম না পাওয়া। আত্মহত্যা। তারপর রপ্তানির দরজা খোলা। এরপরই দেশে দাম বাড়বে। সব লাভ ধনী ব্যাপারীদের।’
নাসিক শহরের কেন্দ্রস্থল রামঘাট। বয়ে চলেছে গোদাবরী। রামচন্দ্র এখানেই রাজা দশরথের পিণ্ডদান করেছিলেন। সেখানে চলছে যথারীতি পিণ্ডদান, শ্রাদ্ধাদি ক্রিয়া। সোমবার ভরদুপুরে হঠাৎ হাজির রাজাভাও ওয়াজে। উদ্ধব থ্যাকারের শিবসেনা প্রার্থী। দোকানে দোকানে ঘুরছেন। রামঘাটে নেমে গোদাবরী স্পর্শ করলেন। ৪০ বছর ধরে রামঘাট লাগোয়া মার্কেটের দোকানী সুরেশ তালপাড়ের কাছে গিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ প্রার্থী বললেন, ‘আমাদের কথা মনে রেখো কিন্তু!’ সুরেশ বেরিয়ে এসে বললেন, ‘বালাসাহেবের সঙ্গে যারা গদ্দারি করেছে, তাদের সঙ্গে আমরা নেই।’ সঙ্গে সঙ্গে অন্য দোকানীরা জয় শিবাজি মহারাজ কী জয় বলে হুঙ্কার দিয়ে সমর্থন করল। ঘিরে থাকা মিডিয়াকে রাজভাউ ওয়াজে বললেন, ‘আমাদের কিছু বলতে হচ্ছে না। বিজেপি বেইমানির রাজনীতি আমদানি করছে। কিন্তু মহারাষ্ট্রে ভুল করেছে। বালাসাহেবের কাঁধে চেপে যে বিজেপির উত্থান হল, আজ সেই বালাসাহেবের দলকে ভেঙে দিয়েছে। এবার শিক্ষা পাবে।’ দুবারের শিবসেনা এমপি হেমন্ত গডসে শিন্ধে গোষ্ঠীর প্রার্থী। এত বছর ধরে যারা পরস্পরের রাজনৈতিক সহকর্মী, সেই শিবসেনা বনাম শিবসেনার লড়াইয়ে প্রবল আগ্রহ নাসিকে।
দল ভাঙার খেলা। প্রবল কৃষক বিক্ষোভ। মারাঠাদের ওবিসি সংরক্ষণ এবং বালাসাহেব! তিনি নেই। অথচ আজও তিনিই মারাঠা মানসের ম্যাজিশিয়ান। বালাসাহেবের অডিও ভিডিও বাজছে! মোদি ফ্যাক্টর বনাম থ্যাকারে লিজেন্ড! নরেন্দ্র মোদির মারাঠা অভিযান মসৃণ হচ্ছে না!