প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। তবে তা বাস্তবায়িত হওয়াতে সমস্যা আছে। লৌহ ও ... বিশদ
চম্পটী ঠাকুর—খুব সুন্দর প্রশ্ন তুলিয়াছেন, শাস্ত্রাদির কী মর্ম তাহা আমি জানি না, প্রভু জগদ্বন্ধু দুইটি অর্থে নামটি ব্যবহার করিয়াছেন। ইহা অনুভব করিতে পারি। ‘আদ্যো হরিঃ’। আদিপুরুষ, হরিপুরুষ। আদিতে হরি নামরূপেই ছিলেন। হরি শব্দরূপেই ছিলেন। হরি দুই বিগ্রহরূপে প্রথম প্রকট হন, রাধা ও কৃষ্ণ। রসের পরম গভীর সম্ভোগে দু’জন দু’জনে আস্বাদন করিতেছেন। উভয় উভয়কে প্রাণ উঘারিয়া ডাকিতেছেন। “হরে হরে” শব্দে শ্রীকৃষ্ণকণ্ঠ শ্রীরাধাকে ডাকিতেছেন। “কৃষ্ণ কৃষ্ণ” শব্দে শ্রীরাধাকণ্ঠ শ্রীকৃষ্ণকে ডাকিতেছেন। এই আর্তিভরা ডাকাডাকি অনাদিকাল চলিতেছে। তাহাই শ্রুত হয়—
“হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।”
গীতগোবিন্দের কবি এই নামকে “আলাপ মন্ত্রাক্ষর” বলিয়াছেন, ইহাই হরিনাম। প্রভুর “রসনার ধন।”
বন্ধুহরি রসশাস্ত্রের পঞ্চপ্রকার রতির মধ্য দিয়া নামকে আস্বাদন করিয়াছেন। তাহাও হরিনাম। হরিই কৃষ্ণ, “হরি” শব্দ মধ্যে কোন রতির প্রকাশ নাই। “কৃষ্ণ” শব্দে শান্তরতির প্রকাশ। কৃষ্ণ শব্দে পরব্রহ্ম বুঝায়। শান্ত রতির তাহাই লক্ষ্য। “গোবিন্দ” এই নাম হরিনামই—ইহার মধ্যে দাস্য রতি বিশিষ্ট ভক্তের আস্বাদন। কৃষ্ণদাস জীবমাত্রের ইন্দ্রিয়বর্গের চালক পালক গোবিন্দ। গো পদে ইন্দ্রিয়। বাৎসল্য রতিতে হরিনামই “গোপাল”। সখ্য রতিতে হরিনামই“শ্যাম” নাম। মধুর রসের মধ্যে সকল রতির বিদ্যমানতা আছে। তাই সব নামই আস্বাদ্যমান। তথাপি মধুর রতির অন্তঃস্পর্শী নাম “মাধব”, মা পদে রাধা। তিনি যাঁর সর্বস্বধন। অথবা যিনি তাঁর সর্বস্বধন তিনি মাধব। তাই প্রভু আস্বাদিত হরিনাম—
“কৃষ্ণ গোবিন্দ গোপাল শ্যাম।
রাধা মাধব রাধিকা নাম।।”
অনঙ্গমঞ্জরী প্রমুখ মঞ্জরীবর্গের রতির নাম ভাবোল্লাসা রতি। এই রতিতে “রাধিকা” নামই হরিনাম। “রাধানাম গানে ভাই—শ্রীকৃষ্ণ-চরণ পাই।”
রামগোবিন্দ—গীতগোবিন্দের কবি জয়দেবের নাম করিলেন,
তাঁহার গ্রন্থে কোথায় আলাপাক্ষর কথা আছে?
চম্পটী ঠাকুর—আপনার গৃহে গীতগোবিন্দ গ্রন্থ আছেন। তাহার পঞ্চম সর্গের নাম সাকাঙ্ক্ষা পুণ্ডরীকাক্ষ। ঐ সর্গের প্রথমাংশেই দেখিবেন “ধ্যায়ংস্ত্বামনিশং জপন্নপি তবৈবালাপ-মন্ত্রাক্ষরম্।” পূজারী গোস্বামীর একটা টীকা আছে তাহাতেও ঐরূপ আছে।
রাধাগোবিন্দ—এই সুন্দর কথাটি অবশ্যই দেখিব। আর একটি জিজ্ঞাস্য। ভাবোল্লাসা রতি মঞ্জরীদের, একথা কখনও শুনি নাই। আর একটু
বুঝাইয়া দেন।