ঘরে বা পথেঘাটে পড়ে গিয়ে শরীরে বড় আঘাত পেতে পারেন। আমদানি রপ্তানির ব্যবসা ভালো হবে। ... বিশদ
এমন একটি গুরুতর অভিযোগ সামনে আসতেই এই কাণ্ডের অন্যতম ‘ষড়যন্ত্রী’ পিয়ালি অবশ্য মিডিয়ার কাছে সাফাই দিয়েছেন, ‘মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লোকাল ভাষা বুঝতে পারছিলেন না। তাই গ্রামের মানুষ আমাকে ডেকেছিল। থানার সেদিনের সিসিটিভি ফুটেজেই রয়েছে তার প্রমাণ।’ রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও দলের পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে বলেন, ‘তৃণমূল ভয় দেখিয়ে এরকম অনেক নাটকই মঞ্চস্থ করবে। সত্যকে প্রতারিত করা যায়, কিন্তু পরাজিত করা যায় না।’ সোজা কথায়, সাধারণ নির্বাচনের মাঝপথে নয়া মোড় নিয়েছে সন্দেশখালি ইস্যু। স্থানীয় তৃণমূল নেতা শাহজাহানের নেতৃত্বে গুন্ডা বাহিনী এলাকায় লাগাতার নৃশংস অত্যাচার চালাচ্ছে। এই গুরুতর অভিযোগের দুটি প্রধান দিক হল—‘গণধর্ষণ’ এবং ‘জমিলুট’। উভয় ক্ষেত্রেই মূলত কিছু গরিব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এমন ভয়াবহ অভিযোগ তুলে রাজ্যের শাসক দলকে চেপে ধরেছিল বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস প্রভৃতি বিরোধী দল। শাসকের বিরুদ্ধে ‘গণঅভ্যুত্থান’-এর তত্ত্ব খাড়া করেছিল তারা। ‘গণতন্ত্র বাঁচাতে’ সন্দেশখালিতে তুরন্ত ছুটে গিয়েছিল ইডি, সিবিআই, জাতীয় মহিলা কমিশন, এসসি এসটি কমিশন, মানবাধিকার কমিশন এবং একাধিক এনজিও। লাগাতার ধুন্ধুমার কাণ্ডের সাক্ষী থেকেছে ওই এলাকা। শাহজাহান এবং তাঁর একাধিক রাজনৈতিক সহযোদ্ধাকে ফাটকে ভরেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
সন্দেশখালির মতো একটি অখ্যাত প্রান্তিক জনপদ রাতারাতি জাতীয় রাজনীতির পরিসর দখল করে নিল। যে প্রধানমন্ত্রী হাজার ব্যস্ততার কারণে বিলকিস বানো, হাতরাস কিংবা মণিপুর নিয়ে কথা বলার সময় বার করতে পারেন না, তিনি দেশের নানা প্রান্ত কাঁপিয়ে দিয়েছেন এই এক সন্দেশখালি ইস্যুতেই। সেখানকার মা-বোনেদের পাশে থাকারও অভয় বার্তা দিয়েছে তাঁর কেন্দ্রীয় প্রশাসন। সন্দেশখালি ইস্যুতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এমনকী রামরাজ্যের মুখ্যনেতাও দুরমুশ করে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মা-মাটি-মানুষ’ স্লোগানকে। আর ঠিক তখনই কেউটের ফণার উপর বজ্রাঘাতের মতোই নেমে এসেছে স্টিং অপারেশনের ঘটনাটি। তার রেশ যখন টাটকা, ঠিক তখনই, ‘গণধর্ষণ’ নামক ‘ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন সাজানো বা বিভ্রান্ত ‘ভিকটিমরাই’! আদালতের তত্ত্বাবধানে পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার। কারণ, শুধুমাত্র তাঁরা গরিব বলে নারীর সম্ভ্রম নিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসা কোনও মতেই মানা যায় না। গণধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে ষড়যন্ত্রীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়াই কাম্য। এই ঘটনায় যদি একজনেরও ভাবমূর্তি অন্যায়ভাবে কালিমালিপ্ত হয়ে থাকে, সেই ক্ষতি কিন্তু অপূরণীয়। এর থেকে গোটা সমাজকে শিক্ষা নিতে হবে ভবিষ্যতের জন্য।