অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
অতএব প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ওই উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছে, মোদি বাংলায় ভোটের প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন। তিনি ফিরলে কথা হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই যে, প্রধানমন্ত্রী কয়েক ঘণ্টা পরে দিল্লি ফিরে গেলেও তাঁর দপ্তরের ফিরতি ফোন পায়নি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর! মহারাষ্ট্রে আজ যদি দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বা বিজেপির অন্য কোনও মুখ্যমন্ত্রী গদিয়ান থাকতেন, পারতেন কি নরেন্দ্র মোদি এতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করতে? এই প্রশ্ন উঠবেই। শনিবার থেকে দেশজুড়ে রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে বিস্তর নিন্দাও শোনা গিয়েছে। তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামানো হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। হর্ষবর্ধন ফোন করেন উদ্ধবকে। মহারাষ্ট্রকে প্রয়োজনমতো অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটর সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাতেও সংঘাত কমেনি। সমস্ত বিরোধী দল সামনে এনেছে করোনা মোকাবিলায় মোদি সরকারের ব্যর্থতার সত্যটি। বিরোধীদের অভিযোগ, ভ্যাকসিন থেকে অক্সিজেন দেশে সবেতেই হাহাকার চলছে। ফের শুরু হয়ে গিয়েছে মৃত্যুর মিছিল। তবু নির্বিকার প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী! তাঁরা ব্যস্ত বাংলায়। দিল্লি-কলকাতা ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করছেন। প্যাঁচ কষছেন যে-কোনও মূল্যে বাংলা দখলের। আজকের ভারতেশ্বরের এই অগ্রাধিকার বোধ ইতিহাসে নিশ্চয় লেখা থাকবে।
একটা সরকার কতটা নির্লজ্জ হলে এমন দায় ঝেড়ে ফেলতে পাল্টা অপ্রাসঙ্গিক বিতর্কে জড়াতে পারে, তাও দেখল দেশ। রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে আসরে নামিয়ে পাল্টা অভিযোগ তোলা হল, করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ মহারাষ্ট্র সরকার। আর সেই দায় কেন্দ্রের ঘাড়ে চাপিয়ে সাধু সাজতে চাইছে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়। তাঁর যুক্তি, অক্সিজেনের জোগান বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শুক্রবারই বৈঠক করেছেন। অনেকগুলি সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে তাতে। অক্সিজেন ও ভ্যাকসিন সরবরাহ সংক্রান্ত সার্কুলারও রাজ্যগুলিকে পাঠানো হয়েছে। গোয়েলের দাবি, এ-পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অক্সিজেন মহারাষ্ট্রই পেয়েছে। স্বস্তির খবর এই, অবশেষে সংবিৎ ফিরছে সরকারের। শনিবার রাতেই দিল্লি ফিরে প্রধানমন্ত্রী করোনা মোকাবিলার বিষয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন। কুম্ভমেলায় বিপুল জনসমাগম এড়ানোর পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। রেলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার জন্য আইনি পদক্ষেপের পথে গিয়েছে সরকার। শাসক দল এবং সরকারের আরও আগে সচেতন হওয়া কাম্য ছিল। প্রথম দফার করোনার ঢেউয়ের বীভৎসতা সরকার এত দ্রুত ভুলে গেল কী করে! কী করে ভোলা সম্ভব যে, ইতিমধ্যেই দেশের বিকাশ একদশক পিছিয়ে গিয়েছে! করোনার দ্বিতীয় দফার ঢেউ আটকাতে না-পারাটা নিছক ব্যর্থতা নয়, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।