অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
হায়, বেলা যত গড়াচ্ছে ততই যেন অমাবস্যার অন্ধকার নেমে আসছে বিজেপির প্রচারের সামনে। কেন্দ্রীয় সংস্থা এনসিআরবি অনেক আগেই যোগীরাজ্যের ‘আদর্শ শাসনের’ মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে। গত কয়েক বছরের তথ্য সাজিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে সাংঘাতিক এক জঙ্গলরাজ কায়েম হয়েছে! সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বলে কিছু সেখানে নেই। নিরাপদ নয় সংখ্যালঘু শ্রেণি। স্বস্তিতে নেই মুক্তমনা নারীপুরুষ। সবচেয়ে করুণ অবস্থা মহিলাদের। ধর্ষণ, শ্লীলতাহানিসহ নারীর বিরুদ্ধে অপরাধের রেকর্ড গড়েছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য। মোদিবাবুদের সাধের ডবল ইঞ্জিন তত্ত্ব ইতিমধ্যেই ছুড়ে ফেলে দিয়েছে রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড ও ছত্তিশগড়। কিছুদিন আগেই বিজেপি ব্যর্থ হয়েছে ওই রাজ্যগুলি পুনর্দখল করতে। জোটধর্ম রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার কারণে মহারাষ্ট্র এবং পাঞ্জাবের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুই রাজ্যের ক্ষমতার বৃত্ত থেকেও ছিটকে গিয়েছে মোদির পার্টি। মোদি-শাহ ভালোমতোই টের পাচ্ছেন অসমে তাঁদের হাঁড়ির হাল। এনআরসি-সিএএ অসমে গেরুয়া শিবিরের পথের কাঁটা। অসমিয়াদের একটি অংশ এনআরসি’কে স্বাগত জানালেও বাংলাভাষীসহ অন্যদের কাছে জিনিসটা এক বিভীষিকা। নিজভূমে পরবাসী করে দেওয়ার এক ষড়যন্ত্রের নাম। অন্যদিকে, বিজেপির বিভ্রান্তির ফাঁদে পড়ে বাংলাভাষী উদ্বাস্তুদের একটা অংশ সিএএ চাইলেও অসমিয়ারা এই আইনের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত। তাদের ধারণা, সিএএ নামক সর্বভারতীয় আইনটা অসমের উপর চাপিয়ে দেওয়া হলে অহম সভ্যতা-সংস্কৃতি বিনষ্ট হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে অসমে বিজেপি এখন নিজের ফাঁদে নিজেই হাপুস নয়নে।
লোকসভার ভোটের দেরি এখনও বছর তিনেক। কিন্তু তার আগে একে একে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, গোয়া, মণিপুর প্রভৃতি বেশ কয়েকটি রাজ্য বিধানসভার ভোট। কিন্তু রাজ্যে রাজ্যে পিছু হটার যে ট্রেন্ড মোদির হালফিল নেতৃত্ব সেট করে ফেলেছে তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি। তাই মুখরক্ষার জন্য তারা টার্গেট করেছে বাংলাকে। এই পর্বে সবচেয়ে বেশি লম্ফঝম্প করছে বাংলা দখলের হুলিয়া জারি করে। বাংলায় ভোটের মাঝপর্বেই কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে গুজরাত মডেলের। মোদি-শাহের নিজের রাজ্যে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। অভাব অক্সিজেনের। পাওয়া যাচ্ছে না কোভিড অ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতালে হাসপাতালেও বেডের হাহাকার। রাজ্যজুড়ে এক ভয়ানক আতঙ্কের ছবি! স্বভাবতই ডবল ইঞ্জিন তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে বিরোধীরা। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আদালতও। উচ্চ আদালত এটাকে ‘হেলথ ইমার্জেন্সি’ আখ্যা দিতেও কুণ্ঠিত হয়নি। এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত হল আমেদাবাদে প্রখ্যাত বাঙালি অধ্যাপিকা ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অকাল মৃত্যুর ঘটনা। মোদিবাবু এবং তাঁর পার্টির কাছে, এটাই কি যথেষ্ট নয়? দিল্লির ইঞ্জিন চালাবার যে লাইসেন্স দেশবাসী তাঁকে দিয়েছে, সেটাই ভালো করে চালান আপাতত। নাহলে ওই লাইসেন্সটাও বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে যথাসময়ে।