অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
তাঁর কথার সঙ্গেই সুর মেলালেন সাজ্জাদ শেখ। তিনি বলেন, আগে এই এলাকার বাসিন্দারা কংগ্রেসের প্রতীক ছাড়া আর কিছু চিনতেন না। বারবার তাঁদেরকে ভোট দিয়ে জিতেয়েছেন। কিন্তু এলাকার মানুষের লাভ কিছু হয়নি। তৃণমূলের জমানায় গ্রামে গ্রামে রাস্তা হয়েছে। বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি হয়েছে। এছাড়া সকলে রেশনের বিনা পয়সায় চাল পাচ্ছেন। তাহলে মানুষ কেন আর কংগ্রেসকে ভোট দেবে? মাচার উপর বসে থাকা বছর সত্তরের হেতেম আলি বলেন, একসময় মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দাদের কংগ্রেসের প্রতি আবেগ ছিল। কিন্তু এখন আর সেটা নেই। কারণ তারা কথা দিয়ে অনেক কথা রাখেনি। তাই তারা আগের ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে পারবে না। আমিও কংগ্রেসকে বরাবরই ভোট দিতাম। কিন্তু এবার ভাবনাচিন্তা করতে হবে।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে ধস নামায় এবার মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের টক্কর হবে। লালবাগ, মুর্শিদাবাদ, ডাহাপাড়া, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ সহ সব জায়গাতেই উড়ছে বিজেপির পতাকা। প্রচারে তাদেরকে টক্কর দিচ্ছে তৃণমূলও। কিন্তু কোথাও কংগ্রেসের সেই দাপট চোখে পড়ল না। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। কংগ্রেস তৃতীয় স্থানে ছিল। তৃণমূল লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে হারানো জমি অনেকটাই উদ্ধার করেছে। তাছাড়া এই কেন্দ্রে তাদের নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথা ছিল। সেই দ্বন্দ্ব এখন মিটে গিয়েছে। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ বা মুর্শিদাবাদ পুরসভার চেয়ারম্যান প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারে নেমেছেন। কিন্তু কংগ্রেস তাদের আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারেনি। অথচ একসময় এই বিধানসভা কেন্দ্রের তারাই ছড়ি ঘোরাত। মুর্শিদাবাদ পুরসভার কংগ্রেস প্রার্থী নিজামউদ্দিন শেখ বলেন, লোকসভা আর বিধানসভা ভোট সম্পূর্ণ আলাদা প্রেক্ষিতে হয়। এবারের নির্বাচনে বিজেপিকে আটকাতে মানুষ আমাদের ভোট দেবেন। এই কেন্দ্রে জোট হয়েছে। সিপিএম বা অন্য বাম দলগুলিরও সমর্থন পাচ্ছি। তৃণমূল প্রার্থী শাওনী সিংহ রায় বলেন, উন্নয়ন আমাদের প্রচারের হাতিয়ার। বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করে লাভ করতে পারবে না। আর কংগ্রেসের ভূমিকা সবাই বুঝে গিয়েছে। তাই মানুষ ওদের ভোট দেবে না। বিজেপি প্রার্থী গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, মুর্শিদাবাদের মানুষ কংগ্রেস বা তৃণমূল কাউকে চাইছে না। প্রকৃত উন্নয়নের জন্য তারা আমাকে ভোট দেবে।
যদিও মুকুন্দবাগের সেই আমবাগানের বসে থাকা আক্তার হোসেন, সাজ্জাদ শেখ বা আলি মোল্লারা বলছেন, কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মী-সমর্থকরাও বিজেপিকে আটকাতে জোট বাঁধছে। তাঁরা জানেন, হাত শিবির বিজেপিকে আটকাতে পারবে না। তাই তারা তৃণমূলের পক্ষ নিচ্ছে। গ্রামে গ্রামে তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপিকে আটকানোর আওয়াজ তুলেছেন।